শরীয়তপুরে প্রধান শিক্ষক হত্যা মামলায় ৪ জনের মৃত্যুদণ্ড

২০১০ সালে শরীয়তপুর সদর উপজেলার চিকন্দি সরফ আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধানশিক্ষক আব্দুস ছামাদ আজাদ হত্যা মামলায় চারজনকে মৃত্যুদণ্ডের রায় দিয়েছেন আদালত।

বুধবার (১৫ সেপ্টেম্বর) ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক মো. মনির কামাল এ রায় ঘোষণা করেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- নুরুজ্জামান খান, জাহাঙ্গীর মাতবর, জুলহাস মাতবর ও চান মিয়া। পাশাপাশি তাদের ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল হালিম মোল্লা, আজিজুল মাতবর, ফারুক খান, আজাহার মাতবর, মীজান মীর, আকতার গাজী, জলিল মাতবর, এমদাদ মাতবর ও লাল মিয়া। তাদের ২০ হাজার টাকা জরিমানা। অনাদায়ে আরও ছয় মাস কারাভোগ করতে হবে।

অপরদিকে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আজিবর বালী, আব্দুল খন্দকার, খোকন বেপারী, আজাহার মোল্লা ও ছোরাব মোল্লাকে খালাস দিয়েছেন আদালত।

মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, আব্দুস ছামাদ আজাদ শরীয়তপুর সদর উপজেলার চিকন্দি সরফ আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধানশিক্ষক ছিলেন। তিনি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে তৎকালীন চেয়ারম্যান হালিম মোল্লার কাছে অল্প ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হন। পরবর্তী নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার জন্য তিনি এলাকায় পোস্টারিং করে আসছিলেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে হুমকি দেন হালিম মোল্লা।

এরপর ২০১০ সালের ১৫ জানুয়ারি শিক্ষক ছামাদ আজাদ সন্ধ্যা ৭টার দিকে শরীয়তপুর জেলার সন্তোষপুর বাসস্ট‌্যান্ডের লক্ষ্মীর মোডের বাবুল মুন্সির কোকারিজের দোকান থেকে বের হয়ে রাস্তার ওপর আসার পরই তাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। তাকে বাঁচাতে এগিয়ে এসে রহিম পেদা, ওয়াজেদ শীল, সেলিম ফকির, ইসাহাক মুন্সী ও বিশ্বজিৎ শীল গুলিবিদ্ধ হন।

ওই ঘটনায় তৎকালীন চেয়ারম্যান হালিম মোল্লা ও সাবেক চেয়ারম্যান আজিবর বালীসহ ৩০ জন এবং অজ্ঞাতনামা ১৫-২০ জনের বিরুদ্ধে পালং থানায় একটি মামলা করেন নিহতের স্ত্রী।

একই বছর ১৪ আগস্ট পালং থানার উপ-পরিদর্শক শহীদুল ইসলাম ১৭ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন। চার্জশিট দাখিলের নারাজি দেন মামলার বাদী। এরপর ২০১১ সালের ১১ মে একই থানার এসআই সুলতান মাহমুদ ১৯ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন।

মামলাটি বিচারের জন্য শরীয়তপুরের জ্যেষ্ঠ দায়রা জজ আদালতে ২০১৪ সালে যায়। সেখানে ২০১৬ সালের ২০ জানুয়ারি আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করেন। পরে ২০১৮ সালের ৯ এপ্রিল মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য ঢাকার ৩ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানোর প্রজ্ঞাপন জারি হয়। ওই বছর ২১ জুন মামলার নথি ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে আসে। এরপর একই বছর ৯ সেপ্টেম্বর মামলাটির সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়।

Recommended For You

Exit mobile version