Connect with us

স্বাস্থ্য

মানবতার সেবায় স্বয়ং সৃষ্টিকর্তা যেন তাকে পাঠিয়েছেন

Avatar of author

Published

on

মানবতার সেবায় কাজ করতেই যেন সৃষ্টিকর্তা তাকে পাঠিয়েছেন। দেশের কোনো চিকিৎসক হিসেবে বিনা পারিশ্রমিকে ১৩০৫টি কিডনি প্রতিস্থাপনে (ট্রান্সপ্ল্যান্ট) তিনি মাইলফলক গড়েছেন। সাফল্যের হার শতকরা ৯৫ শতাংশ, যা আন্তর্জাতিক পর্যায়ের সমকক্ষ।

অধ্যাপক ডা. কামরুল ইসলাম যদিও কোনো পদক বা পুরস্কারে বিশ্বাসী নন। তারপরও সরকার চিকিৎসা সেবায় অবদান রাখার জন্য ২০২২ সালে তাকে স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত করেন। চিকিৎসা সেবায় ডা. কামরুল ইসলামের এত সব অর্জনের পরও তিনি একজন মিডিয়া বিমুখ মানুষ। সব কৃতিত্বের প্রতিদান তিনি সৃষ্টিকর্তা থেকে পেতে চান।

কিডনি প্রতিস্থাপনে মাইলফলক এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে কিছু প্রশ্নে চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. কামরুল ইসলাম বলেন, কোনো সফলতা আসলে সবার মতো ভালোই লাগে। এজন্য সবার আগে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করি মহান রবের, যিনি আমাকে এত বিরাট একটি কাজ করার জন্য জ্ঞান দান করেছেন। তিনি আমাকে সামর্থ্য দিয়েছেন বলেই কাজটি আমি চালিয়ে নিতে পারছি। তবে, আমার প্রত্যাশা এতটুকুই নয়।

আমি যখন পার্শ্ববর্তী ভারত ও পাকিস্তানের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে যাই, তারা প্রতিদিন একটি-দুটি করে করছে। আমি ভাবি, বাংলাদেশে অন্তত একটি হাসপাতাল তো থাকা উচিত যেখানে প্রতিদিন অন্তত একটি করে কিডনি প্রতিস্থাপন হবে। সেই লক্ষ্য এখন আমরা প্রায় পূরণের কাছাকাছি। আলহামদুলিল্লাহ, আমার চাওয়া হয়তো আর কিছুদিনের মধ্যেই পূরণ হবে। তারপরও একটি আফসোস থেকে যাবে, কারণ প্রতি বছর যে পরিমাণ মানুষ কিডনি রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন তার খুবই ক্ষুদ্র অংশ প্রতিস্থাপনের বাইরে থেকে যাচ্ছে।

অধ্যাপক ডা. কামরুল ইসলাম: আমাদের দেশে অনেক কিডনি রোগী আছেন, এর মধ্যে প্রতি বছর নতুন করে আরও প্রায় ১০ হাজারের অধিক কিডনি রোগী যুক্ত হচ্ছেন। তাদের অধিকাংশেরই দুটি কিডনি ড্যামেজ হয়ে গেছে, এমনকি ডায়ালাইসিস লাগছে, ট্রান্সপ্ল্যান্টও করতে হচ্ছে। এত রোগীর মধ্যে আমরা গত বছর মাত্র ২১৪টি কিডনি ট্রান্সপ্ল্যান্ট করেছি। দেশে মোট রোগীর তুলনায় আমাদের এ সংখ্যা ভাবতেই অপ্রতুল মনে হয়।

Advertisement

দেশে বর্তমানে কিডনি রোগীর সংখ্যা অনুপাতে সিকেডি হাসপাতাল কতটুকু চাহিদা পূরণ করতে পারছে?

অধ্যাপক ডা. কামরুল ইসলাম : আমরা যখন ২০০৭ সালে এ হাসপাতালে কিডনি ট্রান্সপ্ল্যান্ট (প্রতিস্থাপন) শুরু করলাম, তখন আমাদের শঙ্কা ছিল আমরা পারব কি না, আমাদের মিশন সফল হবে কি না? এরপর আমরা ২০০৯-১০ সালের দিকে দেখলাম যে আমরা পারছি, এমনকি দিনদিন রোগীর সংখ্যাও বাড়ছে।

প্রথমদিকে আমরা মাসে একটি ট্রান্সপ্ল্যান্ট করতাম, এরপর দুটি থেকে তিনটি। এমনকি এক পর্যায়ে সপ্তাহে একটি, দুটি করে করতে শুরু করলাম। এখন আমরা সপ্তাহে পাঁচটি করে কিডনি প্রতিস্থাপন করছি। প্রতি সপ্তাহে পাঁচটি করে করলে এক মাসে ২২০ থেকে ২৩০টির মতো হয়। কিন্তু আমরা যদি প্রতি সপ্তাহে ছয়টি করে করতে পারি তাহলে প্রতি মাসে আড়াইশোর বেশি কিডনি প্রতিস্থাপন করতে পারব।

কিডনি প্রতিস্থাপনে আমাদের দেশে খরচটা অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক কম। আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের মধ্যে সবচেয়ে কম খরচে কিডনি প্রতিস্থাপন হয় তামিলনাড়ুর ভেলোরে। সেখানে শুধু হাসপাতাল খরচই চলে যায় ১২ থেকে ১৫ লাখ টাকা। আমাদের দেশে অর্থাৎ আমাদের সিকেডি হাসপাতালে লাগে মাত্র দুই লাখ ১০ হাজার টাকা।

দেশের বাইরে বেসরকারি হাসপাতাল ও সরকারি হাসপাতালের সঙ্গে তুলনামূলক কিডনি প্রতিস্থাপনে খরচ কেমন? আর সিকেডি হাসপাতালে খরচ কেমন?

Advertisement

অধ্যাপক ডা. কামরুল ইসলাম: আমার কাছে মনে হয়, কিডনি প্রতিস্থাপনে আমাদের দেশে খরচটা অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক কম। আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের মধ্যে সবচেয়ে কম খরচে কিডনি প্রতিস্থাপন হয় তামিলনাড়ুর ভেলোরে। সেখানে শুধু হাসপাতাল খরচই চলে যায় ১২ থেকে ১৫ লাখ টাকা। আমাদের দেশে অর্থাৎ আমাদের সিকেডি হাসপাতালে লাগে মাত্র দুই লাখ ১০ হাজার টাকা।

সরকারি কিডনি হাসপাতালে যদি যন্ত্রপাতি সব ঠিকঠাক থাকে, তাহলে প্রতিস্থাপনে কোনো খরচ লাগার কথা নয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্ভবত এক লাখ ৮০ হাজার থেকে দুই লাখ টাকার মতো লাগে, যদিও সেখানে সরকারি অনেক বরাদ্দ থাকে। এছাড়া প্রাইভেট হাসপাতালগুলোর মধ্যে কিডনি ফাউন্ডেশনে দুই লাখ ৫০ থেকে ৭০ হাজারের মতো হতে পারে। বারডেম হাসপাতালে তিন লাখের বেশি, পপুলারে পাঁচ থেকে ছয় লাখ টাকার মতো খরচ হয়। এভারকেয়ারে আট থেকে নয় লাখের মতো খরচ পড়ে।

কম খরচে কিডনি প্রতিস্থাপন করতে গিয়ে চিকিৎসার মানের বিষয়ে ছাড় দিতে হয় কি না?

অধ্যাপক ডা. কামরুল ইসলাম : তামিলনাড়ুর ভেলোরে যেই মানের কিডনি প্রতিস্থাপন হয়, আমাদের হাসপাতালের মান কিন্তু কোনো অংশেই কম নয়। দুই হাসপাতালেই কাজ কিন্তু একই, ফলাফলও একই। গত বছর ২১৪টি কিডনি প্রতিস্থাপন করেছি, এগুলোর মধ্যে মাত্র ছয়টি কাজ করেনি। সেগুলো ফেলে দিয়ে আবারও প্রতিস্থাপন করতে হয়েছে। পরিসংখ্যান করলে দেখা যাবে, কাজ না করার হার দাঁড়াবে তিন শতাংশের মতো।

সবমিলিয়ে আমাদের দেশে কিডনি প্রতিস্থাপনে সফলতার হার ৯৫ শতাংশের মতো। এটা কিন্তু আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন। কাজেই আমার মনে হয়, মানের দিক থেকে আমাদের কোনো কমতি নেই। আমাদের সীমাবদ্ধতাটা হলো, আমরা পোস্ট ট্রান্সপ্ল্যান্ট ফলোআপে কিছুটা পিছিয়ে আছি। এটি নিয়ে আমরা কাজ করছি। এখন যদি দেশের সব প্রাইভেট হাসপাতালের সঙ্গে আমাদের হাসপাতালের মানের তুলনা করেন, তাহলেও কিন্তু দেখবেন অন্যদের চেয়ে কোনো অংশেই আমরা কম নই বরং বেশি।

Advertisement

আমরা হয়তো এত সুন্দর পরিবেশ দিতে পারি না, সুন্দর বিছানা, ভালো মানের এসি হয়তো দিতে পারি না। কিন্তু আমরা চিকিৎসা সেবার দিকটা ভালো করার চেষ্টা করছি। বিশেষ করে সার্জিক্যাল দিকটা যেন ভালো হয়, সার্জারির ফলাফলটা যাতে ভালো হয়, সে লক্ষ্যে সমস্ত যন্ত্রপাতি আমরা ব্যবহার করি। গত দুই বছরে আমরা অনেক যন্ত্রপাতি সংযোজন করেছি, যাতে ট্রান্সপ্ল্যান্ট-পরবর্তী রোগীদের আরও ভালো সেবা দেয়া সম্ভব হয়।

কিডনি প্রতিস্থাপনের পর অনেক ক্ষেত্রে নানা জটিলতা দেখা দেয়। এর কারণ ও পরবর্তীতে করণীয় কী?

অধ্যাপক ডা. কামরুল ইসলাম : কিডনি প্রতিস্থাপনের পর যে সব জটিলতা তৈরি হয়, এগুলোর অধিকাংশই সার্জারি রিলেটেড। এক্ষেত্রে যিনি কাজ করেন তাকে প্রতিষ্ঠানে একটু বেশি সময় দিতে হয়। একটি ট্রান্সপ্ল্যান্টে প্রায় সময়ই তিন থেকে চার ঘণ্টা সময় লেগে যায়, কিন্তু আমি এর বাইরেও আরও চার-পাঁচ ঘণ্টা হাসপাতালে থাকি। দেখা গেল যে, ট্রান্সপ্ল্যান্টের পর হঠাৎ একজন রোগীর ব্লিডিং হচ্ছে, সেই সময় তাকে আবারও ওটিতে নিতে হয়। জাস্ট ব্লিডিংটা বন্ধ করে দিলে রোগী আবার ঠিক হয়ে যায়। কিন্তু কাজটি যদি দেরিতে করা হয়, অনেক ক্ষেত্রে রোগীর মৃত্যুও হতে পারে। এজন্য আমার মনে হয়, একজন চিকিৎসককে লম্বা সময় হাসপাতালে অবস্থান করা উচিত। অনেক সময় দেখা যায়, ট্রান্সপ্ল্যান্টের পর বডি এটাকে গ্রহণ করছে না। সেক্ষেত্রে কারণটা খুঁজে বের করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সেইসঙ্গে দ্রুততম সময়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করাও জরুরি। এ সময়টায় যদি চিকিৎসক কাছে না থাকেন, যথাসময়ে ব্যবস্থা গ্রহণ না করেন, তাহলে গুরুতর সমস্যা দেখা দিতে পারে। দেখা যায় প্রতি চার থেকে পাঁচজন রোগীর মধ্যে একজনেরই এসব সমস্যা হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে দ্রুততম সময়ে ব্যবস্থা নিলে ৮০ শতাংশ রোগীকেই আবার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনা সম্ভব।

কিডনির ওষুধের লাগামহীন দামে অসংখ্য রোগী নিঃস্ব হচ্ছেন। অনেক রোগী ট্রান্সপ্ল্যান্ট-পরবর্তী সময়ে ওষুধ কিনতে না পেরে মাঝপথে চিকিৎসা থামিয়ে দিতে বাধ্য হচ্ছেন। এক্ষেত্রে কী করণীয় বলে আপনি মনে করেন?

অধ্যাপক ডা. কামরুল ইসলাম : কিডনি রোগের চিকিৎসার ওষুধ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সর্বক্ষেত্রেই আমাদেরকে ওষুধ কিনতে হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় প্রতিষ্ঠানকে কিনতে হয়, আবার রোগীর যখন ছুটি হয়ে যায় তখন তাকে কিনতে হয়। কিন্তু কিডনি রোগের ওষুধ আমাদের দেশে খুবই ব্যয়বহুল। কারণ, বেশির ভাগ ওষুধই এখন পর্যন্ত বিদেশ থেকে কিনতে হয়। তাই আমাদের ওষুধ উৎপাদনের ওপর নজর দেয়া উচিত। আগে কিডনির ওষুধগুলো ইউরোপ-আমেরিকা থেকে আসত। তখন একজন রোগীর প্রতি মাসে ৩০-৪০ হাজার টাকা ওষুধের পেছনে যেত। এখন পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন দেশ থেকে আসে, ফলে খরচটাও কিছুটা কমে এসেছে। তারপরও ট্রান্সপ্ল্যান্ট-পরবর্তী সময়ে একজন রোগীর এখন ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকার ওষুধ প্রয়োজন হয়। চিকিৎসাটা যেহেতু দীর্ঘ সময়ের একটি প্রক্রিয়া, তাই আমরা বলব যে খরচটা কীভাবে আরও কমিয়ে আনা যায় সে ব্যাপারে উদ্যোগ নেয়া জরুরি।

Advertisement

আগে দেশে কিডনি রোগীর সংখ্যা কম ছিল, ফলে ওষুধের পরিমাণ কম লাগত। যে কারণে ওষুধ কোম্পানিগুলো কিডনি রোগের ওষুধ উৎপাদনে এগিয়ে আসত না। একই সঙ্গে প্রযুক্তিগত কিছু বিষয় ছিল। বর্তমানে দেশে কিডনি রোগীর সংখ্যা অনেক, আমরা কয়েকটি কোম্পানিকে বলে বলে কিছু ওষুধ উৎপাদনের ব্যবস্থা করেছি। সেইসঙ্গে পার্শ্ববর্তী দেশগুলো থেকে কিছু আসছে। কিন্তু চাহিদার তুলনায় এগুলো খুবই অপ্রতুল। কাজেই আমাদের দেশে এগুলো উৎপাদন হওয়া দরকার।

ওষুধগুলো এতটাই জীবনরক্ষাকারী যে এক দিনও যদি ওষুধের গ্যাপ পড়ে, তাহলে কিডনিটা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। আরেকটি বিষয় হলো আমাদের দেশের রোগীরা গরিব, যে কারণে প্রতিনিয়ত তাদের জন্য ওষুধ কেনা কষ্টকর। এখন আমাদের ভাবতে হবে ওষুধের দামটা কীভাবে কমানো সম্ভব। ব্যক্তিগতভাবে আমি একটি ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানিকে বলেছিলাম, আপনারা অন্যান্য অনেক ওষুধ তো বিক্রি করেন, কিডনির ওষুধ একটু লাভ কম করলে রোগীদের জন্য ভালো হতো। প্রয়োজনে অন্যান্য ওষুধে লাভ একটু বেশি করে সেটি ব্যালেন্স করে নিলেন। ব্যক্তিগতভাবে আমি আমার প্রতিষ্ঠানেও এভাবে অনেক ক্ষেত্রে ব্যালেন্স করি।

যেমন- আমার হাসপাতালে ট্রান্সপ্ল্যান্টকে আমি ভর্তুকি খাত হিসেবে বিবেচনা করি। এর বাইরেও আমার হাসপাতালে কিডনি স্টোন সার্জারি হচ্ছে, ক্যান্সার সার্জারি হচ্ছে, প্রোস্টেট সার্জারি হচ্ছে, অন্যান্য নেফ্রোলজিক্যাল সার্জারিগুলো আমরা করছি। সেগুলো থেকে যে আয়টা আসে, সেখান থেকে একটা অংশ আমরা ট্রান্সপ্ল্যান্টে খরচ হয়। প্রতি মাসে আমাদের হাসপাতালে ৬০০ থেকে ৭০০ রোগী ফলোআপে আসছেন, তাদের সম্পূর্ণ পরীক্ষা আমরা বিনা মূল্যে করে থাকি।

প্রতি মাসে আমরা প্রায় চার থেকে পাঁচ লাখ টাকার ওপরে পরীক্ষা বিনা মূল্যে করে দিচ্ছি। টাকাটা কিন্তু আমাদের লস হচ্ছে না, অন্যান্য খাত থেকে চলে আসছে। ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানিগুলোকে আমি এটাই বোঝানোর চেষ্টা করছি যে আপনি অন্য খাত থেকে বেশি আয় করেন, কিডনি রোগের চিকিৎসা যেহেতু অত্যন্ত ব্যয়বহুল, এখান থেকে আয় একটু কম করেন। এ দায়িত্ব যে শুধু ওষুধ কোম্পানিগুলোর তা কিন্তু নয়, সরকারকেও এগিয়ে আসতে হবে। বিশেষ করে আমদানি করা ওষুধ ও কাঁচামালের ওপর সরকার ট্যাক্স কমাতে পারে। এতে ওষুধের দাম কিছুটা কমতে পারে। আমি সবসময় বলি, আমাদের সার্বজনীন হওয়া দরকার। ওষুধের দাম কমলে সব মানুষই উপকৃত হবেন।

কিডনির ওষুধের দাম কমাতে আর কী কী উদ্যোগ নেয়া যায়?

Advertisement

অধ্যাপক ডা. কামরুল ইসলাম : দাম কমানোর বিষয়টি নিয়ে আমাদের প্রত্যেককে ভাবতে হবে। আমি ব্যক্তিগতভাবে ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানিগুলোর সঙ্গে আবারও কথা বলার চেষ্টা করব। তারা তো নিয়মিতই আমাদের চেম্বারে আসেন, প্রত্যেকেই নিজ নিজ অবস্থান থেকে নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে দাম কমানোর প্রস্তাব জানালে হয়তো কিছুটা কমে আসবে। আমি বিষয়টি নিয়ে পরবর্তীতে কাজ করব। আমার প্রথম টার্গেট হলো ওষুধ কোম্পানিগুলোর নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে যারা আছেন তাদেরকে নিয়ে এক টেবিলে বসা।

দ্রব্যমূল্য বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রে খরচ বাড়ছে। ওষুধের দামের পাশাপাশি দেশের চিকিৎসা ব্যয় বেড়েছে। এ অবস্থায়ও আপনি দেশের মানুষের জন্য নিঃস্বার্থভাবে কাজ করছেন, কোনোরকম পারিশ্রমিক ছাড়াই মানুষকে সেবা দিচ্ছেন। এর পেছনের রহস্য কী?

অধ্যাপক ডা. কামরুল ইসলাম : আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষই দরিদ্র শ্রেণির। এমন অনেকেই আছেন যাদের সারা মাসের ওষুধ কেনা কষ্টকর হয়ে পড়ে। অর্থের অভাবে অসংখ্য রোগী মাঝপথে চিকিৎসাই ছেড়ে দেন। অনেক রোগী চিকিৎসার অভাবে প্রতি বছর না ফেরার দেশে পাড়ি জমান। বিশেষ করে যারা কিডনি রোগী, চিকিৎসার ব্যয় বেশি হওয়ায় জীবনের কাছে তাদের হার মানতে হয়েছে। এসব মানুষের কথা চিন্তা করে আমি কিছু করার চেষ্টা করি।

বড় লোকদের জন্য তো দেশে অসংখ্য হাসপাতাল রয়েছে, বিদেশে গিয়ে চিকিৎসা নেয়ার সুযোগ রয়েছে। কিন্তু যারা গরিব তারা কোথায় যাবে? তাদের কথা মাথায় নিয়ে হাসপাতালটি করা হয়েছে।

আমি যে কাজটি করছি হয়তো এটি করে আরও অনেক বেশি টাকা আয় করা সম্ভব। কিন্তু আমার তো এর চেয়ে বেশি প্রয়োজন নেই। যেটুকু আসছে সেটুকু দিয়েই ভালোভাবে আমি চলতে পারছি। অন্য একজন চিকিৎসক একটি সার্জারি করে যে টাকা উপার্জন করেন, আমি না হয় দুটি বা তিনটি সার্জারি করে তার সমপরিমাণ উপার্জন করলাম। এতে হয়তো আমার একটু খাটুনি বাড়বে, কষ্টটা বেশি হবে। কিন্তু আমার উপার্জন তো কমছে না। আপনি চাইলে কর্পোরেট হাসপাতালে একজন চিকিৎসক যে টাকা উপার্জন করছেন, আপনিও সেটি করতে পারেন। শুধু কাজের পরিমাণটা একটু বাড়িয়ে দেন।

Advertisement

আরেকটি বিষয় হলো, আমি সবসময় নিজেকে তুলনা করি নিচের দিকের মানুষের সঙ্গে। হাদিসে এসেছে, ‘তুমি সবসময় নিচের দিকে খেয়াল রাখ। এতে করে তোমার মনে শান্তি বেশি আসবে। ওপরের দিকে খেয়াল কর না, তাহলে অশান্তি বেশি আসবে।’ একজন রিকশাওয়ালা সারাদিন হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করে, রোদে পুড়ে, ঘামে ভিজে অর্থ উপার্জন করছেন। সেই তুলনায় আমি এসি রুমে বসে কাজ করছি, বলতে গেলে আমি তো রাজার হালেই আছি।

দেশে করোনা শুরু হলো, ওই সময় এবং এখনও আমার হাসপাতালে কোনো চিকিৎসার ব্যয় বাড়েনি। কারণ, একটা হাদিসে আছে- মহামারির সময় কোনো জিনিসের দাম বাড়াতে নেই। আমিও ভেবেছি, দাম বাড়াব না। দেখি না, যা হওয়ার হবে।

করোনার প্রথমদিকে আমাদের অনেক নতুন নতুন যন্ত্রপাতি কিনতে হলো। তারপর আবার করোনার রোগী কমে গেল। একটা সময়ে ভাবতে লাগলাম হাসপাতাল খরচ কীভাবে চালাব, স্টাফদের বেতন কীভাবে দেব। কিন্তু আল্লাহর রহমতে আমাদের সবকিছুই ঠিকঠাক মতো চলেছে। করোনায় কোনো স্টাফের বেতন আমি কমায়নি বা কর্তন করিনি। বরং প্রতি বছর বাড়িয়েছি। আমি চিন্তা করেছি, ভর্তুকি দিয়ে হলেও কাজটি চালিয়ে যাব। কিন্তু আল্লাহ পাক আমাকে সেই পরিস্থিতিতে ফেলেননি, এতটা ভর্তুকিও আমাকে দিতে হয়নি। চলেই তো যাচ্ছে, তাই আমি আর চিকিৎসার ব্যয় বাড়ানোর চিন্তা করিনি।

যতটুকু জেনেছি, কিডনি প্রতিস্থাপনে হাসপাতাল থেকে আপনাদের ভর্তুকি দিতে হয়। সেই ভর্তুকির পরিমাণ কত আর কীভাবে আপনারা এ সেবা চালিয়ে নিচ্ছেন?

অধ্যাপক ডা. কামরুল ইসলাম : কিডনি প্রতিস্থাপনে আমাদের ভর্তুকি দিতে হয়, কিন্তু সেই পরিমাণটা খুব বেশি নয়। মোটা দাগে বলতে গেলে, আমাদের প্রতি মাসে চার থেকে পাঁচ লাখ টাকার পরীক্ষা ফ্রি হচ্ছে। হয়তো পরীক্ষার মূল্যমান হিসাবে এ টাকার অঙ্কটা বলা যায়, কিন্তু এটা তো পুরোপুরি আমার পকেট থেকে যাচ্ছে না। সর্বোচ্চ হয়তো ১০ থেকে ১৫ শতাংশের মতো যাচ্ছে। কারণ, আমি যে মেশিনে ফ্রি পরীক্ষা করছি, সেই মেশিনে তো অন্য পরীক্ষাও হচ্ছে। যে লোকটা পরীক্ষাগুলো করছেন, অন্য পরীক্ষাও তাকে করতে হচ্ছে। ফ্রি ওই পরীক্ষাগুলোর জন্য তাকে বেতন বেশি দিতে হচ্ছে না। আমার হাসপাতালের যে ভাড়া, বিনা মূল্যে পরীক্ষাগুলো না করলেও তো সেই ভাড়া আমাকে দিতে হচ্ছে। এক্ষেত্রে আমার শুধু বিদ্যুতের খরচটা বাড়ছে, আর পরীক্ষা-নিরীক্ষায় ব্যবহৃত রি-অ্যাজেন্টগুলো আমাকে কিনতে হচ্ছে। এ খরচটাই শুধু আমার পকেট থেকে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে আমি মনে করি, ১০ টাকা দিয়ে যদি ১০০ টাকার লাভ মানুষকে দিতে পারি, সেটি তো আমার জন্য অনেক বড় অর্জন।

Advertisement

কিডনি প্রতিস্থাপন করে দেশে মাইলফলক গড়েছেন। আর কত দূর যেতে চান? এ পথচলা কোথায় গিয়ে থামবে?

অধ্যাপক ডা. কামরুল ইসলাম : আমি কখনওই থামতে চাই না। এটা থামার জায়গা নয়। কারণ, রোগী তো কমে আসছে না। হয়তো রোগটা যখন বন্ধ হয়ে যাবে, তখন আমার থামার সময় হবে। আমি না থাকলেও যেন প্রতিষ্ঠানটি অনেক রোগীকে সুস্থ জীবন দিতে পারে সেটাই আমার চাওয়া। আল্লাহ তায়ালার কাছে আমি সবসময় এ দোয়া করি। শত বর্ষ ধরে যেন এ হাসপাতাল মানুষকে সেবা দিয়ে যেতে পারে।

সিকেডি হাসপাতাল নিয়ে ভবিষ্যৎ কোনো পরিকল্পনা আছে কি না?

অধ্যাপক ডা. কামরুল ইসলাম : আমি সবসময় চিন্তা করি, এখন আমরা যে পর্যায়ে আছি এর গুণগত মান কীভাবে আরও বাড়ানো যায়। অনেক ক্ষেত্রে আমরা হয়তো এখনও পিছিয়ে আছি, বিষয়গুলো নিয়ে আমার কাজ করার ইচ্ছা আছে। চিকিৎসকের সংখ্যা বাড়ানোর ইচ্ছা আছে। আরেকটি বিষয় হলো, যে সব কাজ আমাদের দেশে ভালোভাবে হচ্ছে না অথবা কম হচ্ছে, বিশেষ করে লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্ট, বোনম্যারু ট্রান্সপ্ল্যান্ট— এগুলোও আমাদের দেশে বেশি করে করা দরকার। কিন্তু কাজগুলো কে করবে?

আমি কখনওই থামতে চাই না। এটা থামার জায়গা নয়। কারণ, রোগী তো কম আসছে না। হয়তো রোগটা যখন বন্ধ হয়ে যাবে, তখন আমার থামার সময় হবে। আমি না থাকলেও যেন প্রতিষ্ঠানটি অনেক রোগীকে সুস্থ জীবন দিতে পারে সেটাই আমার চাওয়া। আল্লাহ তায়ালার কাছে আমি সবসময় এ দোয়া করি। শত বর্ষ ধরে যেন এ হাসপাতাল মানুষকে সেবা দিয়ে যেতে পারে

Advertisement

আমার অনেক চিকিৎসক বন্ধু রয়েছেন যারা লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্ট, বোনম্যারু ট্রান্সপ্ল্যান্ট করতে আগ্রহী। এমন কিছু চিকিৎসককে নিয়ে একটা গ্রুপ করে কাজগুলো আমরা করতে পারি কি না, এটি আমার চেষ্টায় থাকবে। এতে অসংখ্য রোগীকে আর বিদেশে যেতে হবে না।

অর্থাৎ সামনের দিনে আমরা দুটি কাজ করতে চাই। প্রথমত, আমাদের গুণগত মান বৃদ্ধি করা। দ্বিতীয়ত হলো, চিকিৎসা ব্যবস্থার ক্ষেতে বিশ্বে যা চলছে, আমাদের দেশেও তেমনটি করা। সবসময় আমার চেষ্টা থাকবে দেশের গরিব জনগণের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত রাখা।

এক নজরে অধ্যাপক ডা. কামরুল ইসলাম

ব্যক্তিজীবনে কামরুল ইসলাম তিন কন্যাসন্তানের জনক। মুক্তিযুদ্ধের সময় তার বাবা আমিনুল ইসলাম পাকশী ইক্ষু গবেষণা ইনস্টিটিউটে কর্মরত ছিলেন। মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগিতা করায় স্থানীয় রাজাকার ও বিহারিরা তাকে হত্যা করেন।

১৯৮০ সালে তিনি পাবনার চন্দ্রপ্রভা বিদ্যাপীঠ থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা সম্পন্ন করেন এবং মেধা তালিকায় রাজশাহী বিভাগে ১৫তম স্থান অর্জন করেন। এরপর তিনি ঢাকা কলেজে ভর্তি হন এবং সেখান থেকে ১৯৮২ সালে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ১০ম স্থান অর্জন করেন।

Advertisement

কামরুল ছিলেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের কে ৪০তম ব্যাচের শিক্ষার্থী, ১৯৯০ সালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে আটটি মেডিকেল কলেজের সম্মিলিত ভর্তি পরীক্ষায় প্রথম স্থান অর্জন করে স্বর্ণপদকসহ এমবিবিএস ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৯৫ সালে এফসিপিএস এবং ২০০০ সালে বিএসএমএমইউ থেকে ইউরোলজিতে এমএস ডিগ্রি অর্জন করেন। ২০০৩ সালে ইংল্যান্ডের রয়েল কলেজ থেকে তিনি এফআরসিএস ডিগ্রি অর্জন করেন।

কামরুল ইসলাম ১৯৯৩ সালে বিসিএসের মাধ্যমে স্বাস্থ্য ক্যাডারে যোগ দেন। তিনি ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কিডনি ডিজিজেস অ্যান্ড ইউরোলজি হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক হিসেবেও কর্মরত ছিলেন। ২০০৭ সালে তিনি প্রথমবারের মতো সফলভাবে কিডনি প্রতিস্থাপনের কাজ করেন। জাতীয় কিডনি ইনস্টিটিউটে সহকারী অধ্যাপক থাকাকালে ২০১১ সালে সরকারি চাকরি ছেড়ে দিয়ে শ্যামলীতে কিডনি হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেন। ২০১৪ সালে প্রতিষ্ঠা করেন সেন্টার ফর কিডনি ডিজিজেস অ্যান্ড ইউরোলজি হাসপাতাল।

চিকিৎসা বিদ্যায় বিশেষ অবদান রাখার জন্য ২০২২ সালে তিনি স্বাধীনতা পুরস্কার লাভ করেন।

Advertisement
মন্তব্য করতে ক্লিক রুন

মন্তব্য করতে লগিন করুন লগিন

রিপ্লাই দিন

আন্তর্জাতিক

বাংলাদেশে বিক্রিত শিশু খাদ্য সেরেলাক নিয়ে ভয়ংকর তথ্য

Avatar of author

Published

on

সুইস কোম্পানি নেসলের বাংলাদেশে শিশুখাদ্য হিসেবে সর্বাধিক বিক্রিত দুটি পণ্য— সেরেলাক এবং নিডোতে উচ্চ-মাত্রার চিনির উপস্থিতি পাওয়া গেছে। যদিও যুক্তরাজ্য, জার্মানি, সুইজারল্যান্ড এবং অন্যান্য উন্নত দেশে নেসলের বিক্রি করা একই শিশুখাদ্যে কোনও ধরনের বাড়তি চিনি যুক্ত করা হয় না।

সম্প্রতি সুইজারল্যান্ড ভিত্তিক অলাভজনক বেসরকারি সংস্থা পাবলিক আই ও ইন্টারন্যাশনাল বেবি ফুড অ্যাকশন নেটওয়ার্কের যৌথ গবেষণায় নেসলের শিশুখাদ্য সেরেলাক ও নিডো নিয়ে এসব চাঞ্চল্যকর তথ্য মিলেছে।

যৌথ গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়,  বিশ্বের অনুন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলোতে বিক্রি করা নেসলের এই দুই শিশুখাদ্যে উচ্চ-মাত্রায় চিনি যুক্ত করার প্রমাণ পাওয়া গেছে। শিশুদের খাবারে চিনি যুক্ত না করার বিষয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) সুপারিশ রয়েছে। কারণ শিশুখাদ্যে চিনি যুক্ত করা হলে তা স্থূলতা এবং দীর্ঘস্থায়ী কয়েকটি রোগের কারণ হতে পারে।

গবেষণা প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বাংলাদেশে একজন শিশুকে একবারে যে পরিমাণ সেরেলাক খাওয়ান হয় তাতে তিন দশমিক তিন গ্রাম বাড়তি চিনি থাকে। বাংলাদেশ ছাড়াও বাড়তি চিনির উপস্থিতি পাওয়া গেছে ফিলিপাইন, নাইজেরিয়া, ভারত, পাকিস্তান, ইন্দোনেশিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকাসহ বেশ কিছু উন্নয়নশীল ও অনুন্নত দেশে এ বাড়তি চিনির উপস্থিতি দেখা গেছে।

পাবলিক আই বলছে, নেসলে সুইজারল্যান্ডে বাজারজাত করা তাদের পণ্য সেরেলাকে বাড়তি কোনও চিনি ব্যবহার করে না। কিন্তু বাংলাদেশ, ভারত, থাইল্যান্ডসহ এশিয়ার উন্নয়নশীল ও দরিদ্র দেশগুলোতে সেরেলাকে বাড়তি চিনি যুক্ত করে তারা।

Advertisement

মধ্য-আমেরিকার বেশিরভাগ দেশে ইনফ্লুয়েন্সারদের ব্যবহার করে নিডোর আক্রমণাত্মক প্রচার চালায় নেসলে। ওই অঞ্চলে এক বছর বা তার বেশি বয়সী বাচ্চাদের জন্য বাজারজাত করা ফর্মুলায় একটি শিশুকে সাধারণভাবে একবার যে পরিমাণ খাবার দেওয়া হয় তাতে চিনির পরিমাণ অনেক বেশি।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভিকে দেয়া সাক্ষাৎকারে নেসলে ইন্ডিয়ার এক মুখপাত্র জানায়,  তারা গত পাঁচ বছরে নেসলের শিশুখাদ্যে যোগ করা চিনির পরিমাণ প্রায় ৩০ শতাংশ কমিয়েছে। এছাড়া আরও কমিয়ে আনার বিষয়ে তারা পণ্যগুলো নিয়ে পর্যালোচনা করছেন।

গবেষণার বিষয়ে বাংলাদেশের পণ্যের মান প্রণয়ন ও নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা বিএসটিআইয়ের উপপরিচালক রিয়াজুল হক জানান, সেরেলাক ও নিডো যদি দেশের স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী মান ঠিক রেখে পণ্য তৈরি করে তাহলে ঠিক আছে। এটা নিয়ে বিএসটিআইয়ের কিছু করার নেই। তবে যেহেতু একটি প্রতিবেদনে ক্ষতির বিষয়টি এসেছে তাই বিষয়টি তাঁরা দেখবেন। যদি কোনো ক্ষতিকারক কিছু থাকে, তাহলে এ বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে।

আই/এ

Advertisement
পুরো পরতিবেদনটি পড়ুন

স্বাস্থ্য

‘ডেঙ্গু চিকিৎসায় স্বাস্থ্য বিভাগ সচেতন আছে’

Avatar of author

Published

on

স্বাস্থ্যমন্ত্রী-ডা.-সামন্ত-লাল-সেন

বর্তমানে দেশের সকল ডাক্তার ডেঙ্গু রোগের চিকিৎসা সম্পর্কে অভিজ্ঞ। কাজেই সঠিক সময়ে রোগীরা হাসপাতালে ভর্তি হলে, চিকিৎসায় কোনো সমস্যা হবে না। বলেছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন।

শনিবার (১৩ এপ্রিল) সকালে আকস্মিকভাবে রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল এবং কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী সরকারি হাসপাতাল পরিদর্শনকালে সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে এসব কথা বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, ডেঙ্গু প্রতিরোধে হাসপাতালের আগে মশা নিধন বেশি জরুরি। ডেঙ্গুর পিক মৌসুমে গত বছরের চেয়ে এবার রোগী বেশি হবে এমন শঙ্কা থেকেই স্বাস্থ্য বিভাগ প্রস্তুতি নিয়েছে। সবাই সচেতন হয়ে যদি নিজেদের বাড়িঘর নিজেরা পরিচ্ছন্ন রাখে তাহলে এই ডেঙ্গু মশার উপদ্রব থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে।

এক প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাজ হলো ডেঙ্গু আক্রান্ত হলে চিকিৎসা করা। চিকিৎসায় যাতে ব্যত্যয় না ঘটে, তার জন্য আমার পর্যায়ে আমি মিটিং করেছি। সচিবরাও সবাইকে নিয়ে মিটিং করছেন। আর ডেঙ্গুর রোগীকে সঠিক সময়ে হাসপাতালে ভর্তি করাতে হবে।

এ সময় স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ঈদের আগে আমি বলেছিলাম স্বাস্থ্য সেবায় যেন কোনো বিঘ্ন না ঘটে। এই কয়দিন শুধুমাত্র ঢাকা নয়, আমি প্রতিটা ডিভিশন, প্রতিটা মেডিকেল কলেজের যারা বাইরে আছেন তাদের সাথেও কথা বলেছি। তারা আমাকে নিশ্চিত করে বলেছেন, চিকিৎসা সেবায় কোনো ব্যাঘাত ঘটেনি। আরেকটা বিষয় হলো, এবার ঈদে আমরা ডাক্তার-নার্সদের থাকা খাওয়ার ভালো ব্যবস্থাও করেছি, যার ফলে তারা স্বতঃস্ফূর্তভাবে কাজ করছে।

Advertisement

তিনি আরও বলেন, আমি অঙ্গীকার করেছিলাম ঈদে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার তদারকি আমি নিজে করবো। সেজন্য আমি আজ এখানে এসেছি। এই তদারকি চলমান থাকবে।

এ সময় তার সাথে ছিলেন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. রোকেয়া সুলতানা।

পুরো পরতিবেদনটি পড়ুন

স্বাস্থ্য

ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ভাতা বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন

Avatar of author

Published

on

ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ভাতা পাঁচ হাজার টাকা বাড়িয়ে ২০ হাজার করেছে সরকার। বর্ধিত এ ভাতা চলতি এপ্রিল মাসের ১ তারিখ থেকে কার্যকর হবে এবং এ তারিখের পূর্বের বকেয়া ভাতা নির্ধারিত হারে প্রাপ্য হবেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা।

সোমবার (৮ এপ্রিল)  স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সেবা বিভাগের বাজেট ১-শাখার সিনিয়র সহকারী সচিব সুশীল কুমার পাল স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, উপরি-উক্ত বিষয় ও সূত্রের পরিপ্রেক্ষিতে চলতি ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ-সচিবালয় অংশে সাধারণ থোক বরাদ্দ খাতে বরাদ্দকৃত ৯৬ কোটি ২১ লাখ এক হাজার টাকার অব্যয়িত অর্থ হতে ভর্তিকৃত ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা বিবেচনায় সর্বশেষ ইন্টার্ন চিকিৎসকের সংখ্যা ৪ হাজার ৭০০ জন হিসাবে মাসিক ভাতা ৫ হাজার টাকা বৃদ্ধি করে ২০ হাজার টাকায় উন্নীতকরণের ফলে অতিরিক্ত ৩১ কোটি আশি লক্ষ টাকা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অনুকূলে নিম্নবর্ণিত শর্তে নির্দেশক্রমে বরাদ্দ প্রদান করা হলো।

 

শর্তাবলী হলো-

১. এ অর্থ ব্যয়ের ক্ষেত্রে যাবতীয় আর্থিক বিধি-বিধান যথাযথভাবে অনুসরণ করতে হবে;

Advertisement

২. এ অর্থ ব্যয়ের ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে কোনো অনিয়ম উদ্ঘাটিত হলে সংশ্লিষ্ট বিল পরিশোধকারী কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবেন;

৩. এ অর্থ ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ভাতা পরিশোধ ব্যতীত অন্য কোনো কাজে ব্যয় করা যাবে না;

৪. এ অর্থ চলতি ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে সংশ্লিষ্ট খাতে প্রতিফলন করতে হবে;

৫. এ বিষয়ে প্রশাসনিক মন্ত্রণালয় কর্তৃক সকল আনুষ্ঠানিকতা প্রতিপালনপূর্বক সরকারি আদেশ (জি,ও) জারি করে ০৪ (চার) কপি পৃষ্ঠাংকনের জন্য অর্থ বিভাগে প্রেরণ করতে হবে;

৬. প্রাপ্যতা নিশ্চিত হয়ে ভাতা পরিশোধ করতে হবে; এবং

Advertisement

৭. ২০২৪ সালের ১ এপ্রিল থেকে এ বর্ধিত হার কার্যকর হবে এবং এ তারিখের পূর্বের বকেয়া ভাতা ইতোপূর্বে নির্ধারিত হারে প্রাপ্য হবেন।

প্রসঙ্গত, এর আগে ২৮ মার্চ প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাসের প্রেক্ষিতে ধর্মঘট প্রত্যাহার করেন পোস্টগ্রাজুয়েট ট্রেইনি ও ইন্টার্ন চিকিৎসকরা।

পুরো পরতিবেদনটি পড়ুন

জাতীয়

বাংলাদেশ39 mins ago

মার্কিন প্রতিনিধি দলের ঢাকা সফর: ‘চমক’ নেই, অভিমত বিশ্লেষকদের

বাংলাদেশে আবারও আসছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদল।  গত ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের পর দ্বিতীয় বারের মতো বাইডেন সরকারের উচ্চ পর্যায়ের...

জাতীয়2 hours ago

সড়কে শৃঙ্খলা জোরদারে নতুন সিদ্ধান্ত বিআরটিএ’র

সম্প্রতি ঘটে যাওয়া সব মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনার পর নড়েচড়ে বসেছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)। সড়ক দুর্ঘটনা রোধে ও সড়কে...

জাতীয়3 hours ago

আসছেন না ভারতের পররাষ্ট্র সচিব, যেকারণে স্থগিত হলো ঢাকা সফর

আসছে শনিবার (২০ এপ্রিল) ঢাকা সফরে আসছেন না ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রা।  এক দিনের সফরে ঢাকায় এসে প্রধানমন্ত্রী...

জাতীয়4 hours ago

‘চিকিৎসক ও রোগীদের সুরক্ষায় আইন পাস করা হবে’

আমি যেমন চিকিৎসকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করবো তেমনি রোগীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করাও আমার দায়িত্ব। আমি চিকিৎসকেরও মন্ত্রী, রোগীদেরও মন্ত্রী। দুজনের সুরক্ষা...

অর্থনীতি5 hours ago

৫০ বছরে বাংলাদেশের সফলতা চোখে পড়ার মতো: রেহমান সোবহান

‘স্বাধীনতার পর ৫০ বছরে বাংলাদেশের সফলতা চোখে পড়ার মতো।এই সময়ে বাংলাদেশের বিভিন্ন খাতে আর্থ-সামাজিক উত্তরণ ঘটেছে।’ বললেন বেসরকারি গবেষণা সংস্থা...

বাংলাদেশ6 hours ago

নিজ বাহিনীতে ফিরে গেলেন খন্দকার আল মঈন

নিজ বাহিনী বাংলাদেশ নৌ বাহিনীতে ফিরে গেলেন র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন। এখনো মঈনের স্থলাভিষিক্ত...

আইন-বিচার6 hours ago

কুকি চিনের ৫৩ সদস্যের রিমান্ড মঞ্জুর

বান্দরবানের রুমা ও থানচি উপজেলায় ব্যাংক ডাকাতি, টাকা ও অস্ত্র লুটের ঘটনার করা মামলায় আটক কেএনএফের ৫৭ জনকে বান্দরবান চিফ...

অপরাধ9 hours ago

ধানের খলা দখল নিয়ে ২ পক্ষের সংঘর্ষে পুলিশসহ আহত অর্ধশতাধিক

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের নারী, পুরুষ ও পুলিশসহ অর্ধশতাধিক...

জাতীয়11 hours ago

বাংলাদেশে দূতাবাস খুলবে গ্রিস : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

গ্রিক পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন তার দেশ আরও ৬টি দেশে দূতাবাস খোলার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে তার মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। জানালেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড....

জাতীয়13 hours ago

বিএনপির সময়ে খাদ্য ঘাটতি ছিল, এখন স্বয়ংসম্পূর্ণ: প্রধানমন্ত্রী

আমাদের দেশে এতো নদী-নালা, খাল-বিল থাকতে মানুষের আমিষের অভাব হয় কেন? খাদ্যের পর পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই সরকারের লক্ষ্য। বিএনপির...

Advertisement
বাংলাদেশ39 mins ago

মার্কিন প্রতিনিধি দলের ঢাকা সফর: ‘চমক’ নেই, অভিমত বিশ্লেষকদের

প্রবাস1 hour ago

বাংলাদেশ-আরব আমিরাতের কূটনৈতিক সম্পর্কের সুবর্ণজয়ন্তী

আন্তর্জাতিক2 hours ago

ভারতে ৫৪৩ আসনে ৭ দফায় ভোট, বিজেপির টার্গেট ৩৭০ আসন

ঢালিউড2 hours ago

পদপ্রার্থী নিপুণের অর্থ লেনদেনের অডিও ফাঁস

জাতীয়2 hours ago

সড়কে শৃঙ্খলা জোরদারে নতুন সিদ্ধান্ত বিআরটিএ’র

ঢাকা3 hours ago

গাড়ির ফিটনেস ও লাইসেন্স ছাড়া ঢোকা যাবে না ফরিদপুরে

ক্যাম্পাস3 hours ago

ফের পরীক্ষা বর্জনে বুয়েট শিক্ষার্থীরা

জাতীয়3 hours ago

আসছেন না ভারতের পররাষ্ট্র সচিব, যেকারণে স্থগিত হলো ঢাকা সফর

দেশজুড়ে3 hours ago

ট্রাকচাপায় ১৪ জন নিহতের ঘটনায় চালক-হেলপার কারাগারে

জাতীয়4 hours ago

‘চিকিৎসক ও রোগীদের সুরক্ষায় আইন পাস করা হবে’

সৌদি-পতাকা
আন্তর্জাতিক1 day ago

ইরান-ইসরায়েল প্রসঙ্গে অবস্থান স্পষ্ট করলো সৌদি

ডাকসুর-সাবেক-ভিপি-নুরুল-হক
আইন-বিচার3 days ago

নুরের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি

আন্তর্জাতিক1 day ago

ইসরাইলে আবারও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা

ইসলাম2 days ago

ঈদুল আযহার সম্ভাব্য তারিখ ঘোষণা

বাংলাদেশ5 days ago

ইসরাইল থেকে সরাসরি ঢাকায় বিমানের অবতরণ- যা জানা গেলো

টুকিটাকি3 days ago

অপ্রাপ্তবয়স্ক ছাত্রকে যৌন নির্যাতন করলেন শিক্ষিকা

ফায়ার-সার্ভিস
জাতীয়6 days ago

নিয়ন্ত্রণে এসেছে বাড্ডার আগুন

বাংলাদেশ3 days ago

সন্যাসী হতে ২০০ কোটি রুপির সম্পত্তি দান করলেন দম্পতি

আন্তর্জাতিক4 days ago

ইসরাইলে ইরানের হামলা: ভূমধ্যসাগরে ঢুকলো রাশিয়ার যুদ্ধজাহাজ

দেশজুড়ে5 days ago

যুবকের পায়ুপথ থেকে বের করা হলো ৬ ইঞ্চি ডাব

প্রধানমন্ত্রী-শেখ-হাসিনা
জাতীয়3 weeks ago

গায়ের চাদর না পুড়িয়ে বউদের ভারতীয় শাড়ি পোড়ান: প্রধানমন্ত্রী

ফুটবল4 weeks ago

ইংল্যান্ডকে হারিয়ে ব্রাজিল কোচ জানালেন এটা মাত্র শুরু

টুকিটাকি4 weeks ago

জিলাপির প্যাঁচে লুকিয়ে আছে যে রহস্য!

অর্থনীতি1 month ago

বাজারে লেবুর সরবরাহ বেশি, তবুও দাম চড়া

রেশমা
বাংলাদেশ1 month ago

রাজধানীতে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার কিশোরীর ঠিকানা খুঁজছে পুলিশ

হলিউড1 month ago

নীল দুনিয়ায় অভিনেত্রী সোফিয়ার রহস্যজনক মৃত্যু

ফুটবল1 month ago

জামালকে ঠিকঠাক বেতন দেয়নি আর্জেন্টাইন ক্লাব

টুকিটাকি2 months ago

রণবীরের ‘অ্যানিম্যাল’ দেখে শখ, মাইনাস ২৫ ডিগ্রিতে বসলো বিয়ের আসর

অর্থনীতি2 months ago

গরুর মাংসের দাম কেজি প্রতি পৌনে ৬ লাখ টাকা!

অপরাধ2 months ago

ডিবিতে যে অভিযোগ দিলেন তিশার বাবা

সর্বাধিক পঠিত