হত্যা মামলায় সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যানসহ ৮ জনের আমৃত্যু কারাদণ্ড

গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার চাঞ্চল্যকর হাসান আলী হত্যা মামলায় সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যানসহ আটজনের আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া প্রত্যককে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরও তিনমাস করে সশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। একই মামলার অপর আটজন আসমিকে খালাস দেন আদালত।

আজ বৃহস্পতিবার ( ২৪নভেম্বর) দুপুরে গাইবান্ধা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক দিলীপ কুমার ভৌমিক এই রায় প্রদান করেন।

রায় প্রদানের সময় দন্ডপ্রাপ্ত আটজন আসামির মধ্যে ছয়জন আদালতে উপস্থিত ছিলেন। বাকি দুইজন আসামি পলাতক রয়েছেন।

দণ্ডপ্রাপ্ত আটজন আসাসি হলে- পলাশবাড়ী উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা জামায়াতের রাজনৈতিক সেক্রেটারি মাওলানা মো. নজরুল ইসলাম, পলাশবাড়ী উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়াম্যান ও উপজেলা জামায়াতের প্রচার সেক্রেটারি আবু তালেব, আবদুর রউফ, মো. জালাল, গোলাম মোস্তফা, শাহ আলম, ফারুক মিয়া ও মিজানুর রহমান। এরমধ্যে আবু তালেব ও মিজানুর রহমান পলাতক রয়েছেন। দণ্ডপ্রাপ্তদের সবার বাড়ি গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার বিভিন্ন এলাকায়।

আজ দুপুর দেড়টায় রায় প্রদানের বিয়ষটি নিশ্চিত করছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবি ফারুক আহম্মদ। তিনি জানান, আটজন আসামির আমৃত্যুকারাদণ্ড ছাড়াও প্রত্যেককের সাত বছর করে কারাদণ্ড, ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও তিনমাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়।

খালাসপ্রাপ্তরা হলেন, এম এ মালেক,  লুৎফর রহমান, আবু বক্কর, রফিকুল ইসলাম, আবদুর রহিম, আবু বকর মিয়া ও শফিকুল ইসলাম। খালাসপ্রাপ্তদের বাড়ি পলাশবাড়ী উপজেলার বিভিন্ন এলাকায়।

মামলার বিবরণে জানা যায়, ১৯৯৯ সালে পলাশবাড়ী আর্দশ (ডিগ্রী) কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে অব্যাহতি প্রদান করা হয়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে পলাশবাড়ী উপজেলার সুইগ্রাম ও আমবাড়ী গ্রামের মানুষের মধ্যে উত্তেজনা জড়িয়ে পড়ে।

এক পর্যায়ে দুই গ্রামের মানুষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, সংর্ঘষ ও পথেঘাটে মারধরের ঘটনা ঘটে। এর জের ধরে একই সালের (১৯৯৯ সাল) ২২ অগাস্ট পলাশবাড়ী উপজেলার আমবাড়ী গ্রামের হাসান আলীকে হত্যার উদ্দেশ্যে আক্রমণ করেন আাসমিরা। আক্রমণে হাসান আলী গুরুত্বর আহত হয়। পরে তাকে বগুড়া মোহাম্ম্দ আলী হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

এই ঘটনায় একই সালের ২৪ আগস্ট নিহতের বড়ভাই আবুল কাশেম বাদী হয়ে পলাশবাড়ী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় পলাশবাড়ী উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা জামায়াতের রাজনৈতিক সেক্রেটাটি মাওলানা নজরুল ইসলাম, পলাশবাড়ী উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়াম্যান ও উপজেলা জামায়াতের প্রচার সেক্রেটারি আবু তালেবসহ ১৭ জনকে আসামি করা হয়। এরমধ্যে বাবর আলী নামের এক আসামি মারা যান। বাকী ১৬ জনের মধ্যে আটজনের অমৃত্যু কারাদন্ড ও অপর আটজনকে খালাস দেন আদালত। দীর্ঘ ২২ বছর এই মামলার রায় ঘোষণা করা হয়।

এদিকে, আাসামি পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন সিরাজুল ইসলাম, আবদুল হালিম প্রমানিক, শিশির মনির। আসামি পক্ষের আইনজীবী সিরাজুল ইসলাম বলেন, তারা এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাবেন। উচ্চ আদালতে গেলে তারা ন্যায় বিচার পাবেন বলে আশা করেন।

Recommended For You

Exit mobile version