সুদানে বাংলাদেশ দূতের বাসা-দূতাবাসে গুলি

সুদানে

সুদানে চলমান যুদ্ধে ক্ষমতার দ্বন্দ্ব নিয়ে বিবাদমান দুই সশস্ত্র বাহিনীর সংঘর্ষের মধ্যে দেশটির রাজধানী খার্তুমের অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসে গুলি আঘাত হেনেছে।

এর আগে গেলো ১৫ এপ্রিল দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত (চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স) তারেক আহমেদের বাসাতেও গুলি লাগে। তার বাসভবনটিও খার্তুমেই।

বুধবার (২৬ এপ্রিল) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং সুদানে বাংলাদেশ দূতাবাসের একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।

কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গুলির আঘাতে দূতাবাস ও ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূতের বাসভবন ক্ষতিগ্রস্ত হলেও হতাহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি। চলমান পরিস্থিতিতে ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূতসহ কর্মকর্তারা সুদানের রাজধানী খার্তুম ত্যাগ করে ২৪০ কিলোমিটার দূরের মাদানী শহরে অবস্থান করছেন।

তারা জানায়, সুদানের সেনাবাহিনী ও প্যারামিলিটারি র‌্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সের (আরএসএফ) মধ্যে যুদ্ধ চলছে। খার্তুমের পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ সেখান থেকে বাংলাদেশিদের নিরাপদে সরিয়ে নিতে কাজ করছেন।

ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত জানিয়েছেন, সুদানে দেড় হাজারের মতো বাংলাদেশি রয়েছেন। এর মধ্যে খার্তুমেই প্রায় ১ হাজার ২০০ বাংলাদেশি রয়েছেন। এদের মধ্যে প্রথম দফায় ৫০০ বাংলাদেশিকে এপ্রিলের শেষে জেদ্দায় নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি চলছে। শুরুতে ১০টি বাসে ৫০০ বাংলাদেশিকে পোর্ট সুদান নামে একটি শহরে নিয়ে যাওয়া হবে। পরে সেখান থেকে জাহাজ বা ফেরিতে করে জেদ্দায় যাবে তারা।

এদিকে সুদানে যুদ্ধ পরিস্থিতিতে দেশটিতে অবস্থানরত বাংলাদেশি নাগরিকদের নিরাপদে ফিরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। মঙ্গলবার (২৫ এপ্রিল) বিকেলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে এ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, সুদানে অবস্থানরত বাংলাদেশি নাগরিকদের নিরাপদে অন্য দেশের মাধ্যমে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনার কার্যক্রম শুরুর সিদ্ধান্ত হয়েছে। খারতুমে বাংলাদেশ দূতাবাস এরই মধ্যে এ বার্তা সেখানে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের মধ্যে প্রচার শুরু করেছে।

শনিবার (২২ এপ্রিল) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সুদানের চলমান যুদ্ধ পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে দেশটিতে সফর থেকে বিরত থাকতে বাংলাদেশি নাগরিকদের পরামর্শ দিয়ে সতর্কতা জারি করেছিল।

উল্লেখ্য, আফ্রিকার তৃতীয় বৃহত্তম দেশ সুদানে গেলো ১৫ এপ্রিল থেকে সেনাবাহিনী ও আরএসএফের মধ্যে লড়াই শুরু হলে এ পর্যন্ত চার শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। দেশটির আবাসিক এলাকাও পরিণত হয়েছে রণক্ষেত্রে। রাজধানী খার্তুমের লাখ লাখ মানুষ গৃহবন্দি হয়ে পড়েছেন। এর মধ্যে অবশ্য যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরবের মধ্যস্ততায় দুপক্ষ সোমবার মধ্যরাত থেকে ৭২ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতি পালন করছে।

Recommended For You

Leave a Reply Cancel reply

Exit mobile version