ডা. মুরাদ হাসানের ছাত্র রাজনীতির হাতেখড়ি ছাত্রদল

বিতর্কিত মন্তব্য আর কল রেকর্ড ফাঁসের পর পদত্যাগ করার নির্দেশ পাওয়া তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানের ছাত্র রাজনীতির হাতেখড়ি হয়েছিল ছাত্রদল দিয়ে। ওই সময় তিনি ছাত্রদল কমিটির প্রচার সম্পাদকও হয়েছিলেন। ছাত্রদলের পদধারী নেতা থেকে হয়েছেন ছাত্রলীগের সভাপতিও।

জানা যায়, ১৯৯৪ সালে ডা. মুরাদ ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে (মমেক) যখন পড়াশোনা শুরু করেন তখন ছিল বিএনপির শাসনামল। তাই তিনিও ক্ষমতার লোভে নাম লেখান ছাত্রদলে। ১৯৯৫ সালে মমেক শাখা ছাত্রদলের প্রচার সম্পাদক হন। ১৯৯৬ সালে ক্ষমতার পালাবদলে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলে ছাত্রদলের পদেই থেকে যান মুরাদ হাসান। কিন্তু ১৯৯৮ নিজের ভোল পাল্টে নাম লেখান ছাত্রলীগে। বাবার ক্ষমতার দাপটে মমেক ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদকও হন। এরপর ২০০০ সালে মমেক শাখা ছাত্রলীগের সভাপতির পদ নিয়ে নিজেকে জাহির করেন সাচ্চা আওয়ামী লীগ নেতা হিসেবে। 

ডা. মুরাদের বাবা মতিউর রহমান তালুকদার ছিলেন জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। তৎকালীন সময়ে মুরাদের একাধিক রাজনৈতিক সতীর্থদের সঙ্গে কথা বলে মিলেছে এতসব তথ্য। 

জানা গেছে, ১৯৯৮ সালের মমেক ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ডা. বিজয় কুমার পাল বলেন, ডা. মুরাদের বাবা জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও উনি বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ একজন সহচর ছিলেন। সে জন্য মুরাদকে পদে আনতে চারদিক থেকেই আমাদের চাপ ছিল। যার ফলে অনেকটা বাধ্য হয়েই আমরা তাকে সাংগঠনিক সম্পাদক বানিয়েছিলাম। 

ডা. মুরাদের এক ব্যাচ সিনিয়র ও ১৯৯৮ সালের মমেক ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ডা. মো. ইসহাকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বর্তমান তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান তার পিতার জোরে ছাত্রলীগের পদ বাগিয়েছেন। মুরাদ ছাত্রদলের প্রচার সম্পাদক থাকা অবস্থাতেই ক্ষমতার পালাবদল হয়। অর্থাৎ বিএনপি-আওয়ামী লীগ দুই আমলেই তিনি ছিলেন সর্বোচ্চ সুবিধাভোগী। 

তবে এতদিন কেন এই বিষয়টি জানা গেল না, এমন প্রশ্নের জবাবে ডা. মো. ইসহাক বলেন, যখন কাউকে নিয়ে বিতর্ক হয় তখনই পেছনের ইতিহাসও সামনে আসে। 

এদিকে বেশ কদিন আগে সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম থাকা না থাকা নিয়ে এক ভিডিও বার্তায় মন্তব্য করে আলোচনায় আসেন ডা. মুরাদ। এছাড়াও বিভিন্ন ব্যক্তিকে নিয়ে উল্টা-পাল্টা কথা বলে ‘টক অব দ্যা কান্ট্রিতে’ পরিণত হয়েছেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী। তবে চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহীর সঙ্গে একটি ফোনালাপ তাকে মূল আলোচনায় আনে।

শেষতক সমালোচনার মুখে মুরাদ হাসানকে মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সোমবার রাতে তাকে পদত্যাগের এ নির্দেশ দেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশের বিষয়ে প্রতিমন্ত্রীকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

এসআই/

Recommended For You

About the Author: Delwar Hossain

This is Delwar Hossain from Bangladesh, He is experienced in working in various organizations & industries. currently working in Bayanno TV As a Digtal Incharge.
Exit mobile version