শাহরুখ খানকে চেনে গোটা বিশ্ব। তিন দশকের উপর তিনি দর্শককে মুগ্ধ করে রেখেছেন অভিনয়ের জাদুতে। যারা তাকে কাছ থেকে দেখেছেন, শুধু তারাই জানেন শাহরুখ বরাবরই প্রতিভাধর। বড় হয়ে তিনি কেউকেটা হবেন, তা নিয়ে নিশ্চিত ছিলেন ‘বাদশা’র সহপাঠী থেকে শুরু করে শিক্ষকেরা। দিল্লিতে সেন্ট কলম্বাস স্কুলে পড়তেন শাহরুখ। ছাত্রাবস্থায় তার যাবতীয় দুষ্টুমির সঙ্গেই জড়িয়ে থাকত অভিনয়। বন্ধুরা তখনই লক্ষ করেছিলেন তার অভিনয় প্রতিভা। প্রায়ই ক্লাস থেকে পালানোর ফন্দি করতেন শাহরুখ। বিশ্বাসযোগ্য বাহানাও তৈরি করতে পারতেন।
এক সাক্ষাৎকারে শাহরুখ শুনিয়েছিলেন ক্লাস ফাঁকি দেয়ার গল্প। অঙ্কের শিক্ষককে যে ভাবে বোকা বানিয়েছিলেন তিনি, সে-ও তো ছিল অভিনয়। দুষ্টুবুদ্ধি ভালই ছিল তার। করেছিলেন শরীর খারাপের নাটক।
শাহরুখের কথায়, “মিস্টার অরোরা নামে আমাদের এক জন শিক্ষক ছিলেন। তখন সদ্য এসেছেন তিনি, আমাদের ভাল করে চেনেন না। জানতে চেয়েছিলেন আমাদের কোনও সমস্যা হচ্ছে কি না। আমি উঠে দাঁড়িয়ে বলেছিলাম, ‘হ্যাঁ, আমার সেই অ্যাটাকটা হয়েছে!’ উনি জানতে চেয়েছিলেন কী ধরনের অ্যাটাক। সত্যি সত্যিই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিলেন তিনি।” শাহরুখের মুখে চোখে স্পষ্ট হয়েছিল অসুস্থতার ছাপ। মৃগী রোগের কথা প্রকাশ করেছিলেন তিনি, যা পুরোটাই অভিনয়। কিন্তু শিক্ষককে যে এ ভাবে ঠকানো যায় তা দেখে হেসে ফেলেছিলেন সহপাঠীরা।
শাহরুখ জানান, মিস্টার অরোরা খুবই ভদ্র এবং ভালমানুষ ছিলেন। এখন সেই ঘটনার কথা ভাবলে তার খারাপ লাগে। কিন্তু তখন বয়স কম ছিল, বোকা বোকা ব্যাপার ছিল সব। ক্লাস ফাঁকি দেয়ার নানা মতলব বার করতেন শাহরুখ ও তার সহপাঠীরা।
অভিনেতা বলেন, “কী হয়েছে জিজ্ঞাসা করতেই আমি শুধু শিক্ষকের দিকে তাকিয়েছিলাম। আমার বন্ধুই তখন বলল, ‘ওর আবার মৃগীর কাঁপুনি শুরু হয়েছে। প্রায় দিনই হয়। ওকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। আমাদের একটা জুতো লাগবে।”’ এই বলে শিক্ষকের জুতো নিয়েই দু’জন স্কুল থেকে বেরিয়ে পড়েন। যখন তারা ফেরেন, স্কুল তখন শেষ হয়ে গিয়েছে। সারাটা দিন সেই শিক্ষককে ঘুরে বেড়াতে হয়েছিল খালি পায়ে! এই সব ছেলেমানুষির কথা ভেবে হেসে ওঠেন শাহরুখ, কিন্তু এটাও চান, মনটা এমনই থাকুক তার, শিশুর মতো।