কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) একমাত্র মেডিকেল সেন্টারের সেবা এক পাতা নাপা, এক পাতা গ্যাস্ট্রিকের ঔষধ আর দুই প্যাকেট ওরস্যালাইনের মধ্যে সীমাবদ্ধ। এই তিন ধরনের ঔষুধ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে মেডিকেল সেবা চালু রয়েছে। অনেক সময় প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সদস্যদের হিমশিম খেতে হয়।
এছাড়া পর্যাপ্ত চিকিৎসক নাই, প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সামগ্রী সংকট, আবাসিক চিকিৎসকের দায়িত্বে কোন চিকিৎসক না থাকাসহ নানামুখী সমস্যায় জর্জরিত বিশ্ববিদ্যালয়ের একমাত্র মেডিকেল সেন্টারটি।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের নিচ তলায় সাতটি ছোট ছোট কক্ষে ভাগ করা একটি বড় কক্ষে চলে মেডিকেল সেন্টারের কার্যক্রম। মেডিকেল সেবায় নিয়োজিত রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ৭ হাজার শিক্ষার্থীসহ প্রায় ৩'শতাধিক শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য রয়েছে মাত্র ৫জন চিকিৎসক, ১জন নার্স ও ১জন প্রশাসনিক কর্মকর্তা।
মেডিকেল সেবায় অসন্তুষ্ট হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী তারারাতবির হোসেন পাপন মিয়াজি বলেন, 'ঢাবি, চবি, রাবিসহ অন্যান্য বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনায় আমাদের চিকিৎসা সেবার মান খুবই পিছিয়ে। হঠাৎ করে কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে আমাদের কুমিল্লা মেডিকেলে চলে যেতে হয়। এছাড়া প্রয়োজনীয় কোন ঔষুধ পাওয়া যায় না, বিকালের পর থেকে বন্ধ থাকে মেডিকেল সেন্টার, শুধুমাত্র কয়েকটি নাপা ট্যাবলেট ও প্যারাসিটামলের মধ্য সীমাবদ্ধ থাকে। দ্রুত সময়ের মধ্যে উন্নত সেবা নিশ্চিত করা হউক।
তালহা নামে এক শিক্ষার্থী ক্ষোভ প্রকাশ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের হল এবং ক্যাম্পাসের আশেপাশে অনেক শিক্ষার্থী থাকে। ভার্সিটির মেডিকেলের ডাক্তাররা ৯-৫টা পর্যন্ত ডিউটি করে চলে যায়। তাদের ভাবখানা এমন যেন শিক্ষার্থীরা ঘড়ি ধরে অসুস্থ হবে। গভীররাতে আমাদের শিক্ষক-শিক্ষার্থী অসুস্থ হলে তাকে নিয়ে আমরা কই যাবো? আমরা কি মেডিকেলের ফ্লোরে ফ্লোরে দৌঁড়াবো?
মেডিকেল সেন্টারের স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে ডেপুটি চিফ মেডিকেল অফিসার ডা. মাহমুদুল হাসান খান বলেন 'আমাদের অপ্রতুল বাজেট, অপ্রতুল ঔষুধ, এছাড়া প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি সংকট, চিকিৎসা সেবা দেওয়ার জন্য যতটুকু ম্যান পাওয়ার প্রয়োজন ততটুকু নাই। একজন ফার্মাসিস্ট দরকার কিন্তু আমাদের ফার্মাসিস্টও নাই।
তিনি আরো বলেন, এবছর আমাদের বাজেট কম। এই অল্প বাজেট একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেলের জন্য খুবই নগন্য। এ ছাড়া আমাদের একজন আবাসিক ডাক্তার দরকার।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈন ছুটিতে থাকায় এ বিষয়ে মন্তব্য জানা সম্ভব হয় নি, তবে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির এ বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হন নি।