মানি লন্ডারিংবিরোধী অভিযান চালিয়েছে সিঙ্গাপুরের পুলিশ। অভিযানে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ১০ বিদেশি নাগরিককে। তাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট আরও ৮ জনকে খুঁজছে দেশটির আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
বুধবার (১৬ আগস্ট) সন্ধ্যায় সিঙ্গাপুর পুলিশের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেয়া এক পোস্টে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
ওই পোস্টে বলা হয়েছে, যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে তারা কেউই সিঙ্গাপুরের নাগরিক বা স্থায়ী বাসিন্দা নন। ১৫ আগস্ট দেশটির বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালান প্রায় ৪০০ কর্মকর্তা।
অভিযানে ৯৪টি স্থাপনা এবং ৫০টি গাড়ি হস্তান্তরের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। এগুলোর সম্মিলিত মূল্য ৮১৫ মিলিয়ন সিঙ্গাপুর ডলার বা ৬৫৭৬ কোটি টাকা। এছাড়া জব্দ করা হয়েছে বিপুল পরিমাণ দামি ব্যাগ, গহনা এবং ওয়াইন।
সিঙ্গাপুর পুলিশের দেয়া ওই তালিকায় দেখা গেছে, ১১০ মিলিয়ন সিঙ্গাপুর ডলার বা ৮৮৭ কোটি টাকা আছে এমন ৩৫টি ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়েছে। ২৩ মিলিয়ন সিঙ্গাপুর ডলার বা ১৮৫ কোটি টাকা সমমূল্যের নগদ মূদ্রা, ২৫০টি দামি ব্যাগ এবং ঘড়ি, বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ডিভাইস, গহনা এবং কিছু ডকুমেন্ট রয়েছে ওই তালিকায়।
ওই দশজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে ১৬ আগস্ট আদালতে তোলা হয়।
ফেসবুক পোস্টে অভিযোগের যে বিবরণ দেয়া হয়েছে তাতে দেখা গেছে, গ্রেপ্তারদের মধ্যে একজন ৪০ বছর বয়সী সাইপ্রাসের পুরুষ নাগরিক রয়েছেন। তার কাছ থেকে চীন এবং কম্বোডিয়ার পাসপোর্টও পাওয়া গেছে।
৪২ বছর বয়সী একজন তুরস্কের পুরুষ নাগরিক রয়েছেন যার কাছে চীন এবং ভানুয়াতুর পাসপোর্ট মিলেছে। অন্য একটি বাড়ি থেকে একজন ৪৪ বছর বয়সী চীনা পুরুষ এবং ৪৩ বছর বয়সী চীনা নারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকেও সেন্ট কিটস অ্যান্ড নেভিস, ডোমিনিকান রিপাবলিক এবং তুরস্কের পাসপোর্ট জব্দ করা হয়েছে।
গ্রেপ্তারদের মধ্যে ৪১ বছর বয়সী কম্বোডিয়ান পুুরুষ রয়েছেন। তার কাছ থেকে চীনা পাসপোর্ট এবং ব্যাগ-গহনাসহ বিপুল পরিমাণ সম্পদ জব্দ করা হয়েছে।
গ্রেপ্তার করা হয়েছে ভানুয়াতুর ৩৫ বছর বয়সী একজন পুরুষকে। তার কাছেও ছিল চীনের পাসপোর্ট। ৩৩ বছর বয়সী কম্বোডিয়ার একজন পুরুষ নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে চীন ও ডোমিনিকান রিপাবলিকের পাসপোর্ট এবং বিপুল পরিমাণ মূদ্রা-গহনাসহ।
৩৪ বছর বয়সী সাইপ্রাসের একজন পুরুষ নাগরিককে চীন এবং কম্বোডিয়ার পাসপোর্টসহ গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার কাছেও মিলেছে বিপুল বিদেশি মূদ্রা।
এছাড়া ৩১ বছর বয়সী একজন চীনা এবং কম্বোডিয়ার নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের কাছেও মিলেছে অন্য দেশের পাসপোর্ট এবং ব্যাগ-গহনা-মূদ্রা।
দেশটির পুলিশ বলছে, তদন্ত এখনো চলছে। আরও অনেক ব্যাংক হিসাব, সম্পদ জব্দ করা হবে। গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে সেগুলোতে দোষী প্রমাণিত হলে ১০ বছর পর্যন্ত জেল বা ৫ লাখ মার্কিন ডলার জরিমানা বা উভয় দণ্ড হতে পারে।