এ বছর পদার্থবিজ্ঞানে বিশেষ অবদানের জন্য নোবেল পুরস্কার জিতেছেন তিন বিজ্ঞানী। তারা হলেন পিয়েরে অ্যাগোস্টিনি, ফেরেঙ্ক ক্রাউস এবং অ্যান ল'হুইলিয়ার।
সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমে করোলিনস্কা ইনস্টিটিউটে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) নোবেলজয়ী হিসেবে যৌথভাবে এই তিন বিজ্ঞানী নাম ঘোষণা করা হয়। আজ বাংলাদেশ সময় বিকেল পৌনে ৪টায় সুইডেনের স্টকহোমে বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করে রয়্যাল সুইডিশ অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সেস।
ইলেকট্রন গতিবিদ্যার গবেষণায় বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তাদের এ পুরস্কার দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে সুইডিশ অ্যাকাডেমি। ইলেকট্রন গতিবিদ্যায় পরীক্ষামূলক পদ্ধতি ব্যবহার করে আলোর অ্যাটোসেকেন্ড পালস তৈরি করার বিষয়টি তাদের গবেষণায় দেখানো হয়েছে।
নোবেলজয়ী এ তিন পদার্থবিদ এমন আলোর ফ্ল্যাশ (ঝলকানি) তৈরি করেছেন যেগুলো ‘অতি দ্রুত চলাচলকারী’ ইলেকট্রনের স্ন্যাপশট নিতে পারে। ইলেকট্রন সাধারণত এত দ্রতই চলাচল করে যে এটির গতিবিধি পর্যক্ষেণক করার বিষয়টি আগে অসম্ভব হিসেবে মনে করা হতো।
কিন্তু এ বিজ্ঞানীদের তৈরিকৃত ফ্ল্যাশ এতটাই ছোট যে, এগুলো অ্যাটোসেকেন্ডে মাপা যায়। যার অর্থ এসব পালস পরমাণু এবং অণুর ছবির ক্ষেত্রে কাজে লাগানো যাবে।
মানব সভ্যতাকে ইলেকট্রনের রাজ্যে প্রবেশের নতুন টুলস দেয়ার জন্য এ তিন বিজ্ঞানীর প্রশংসা করেছে সুইডিশ অ্যাকাডেমি।
রাজধানী স্টকহোমের রয়্যাল সুইডিশ অ্যাকাডেমি অব সায়েন্স বিশ্বের বিখ্যাত সব বিজ্ঞানীদের মধ্যে থেকে সেরা পদার্থবিজ্ঞানী বা বিজ্ঞানীদের এ পুরস্কারে ভূষিত করে থাকে।
পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল দেয়া শুরু হয় ১৯০১ সালে। এরপর থেকে ১১৬ বার এই পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। এখন পর্যন্ত ২২২ জন সম্মানজনক এ পুরস্কার জিতেছেন। এরমধ্যে মার্কিন পদার্থবিদ জন বার্ডেন একমাত্র ব্যক্তি হিসেবে দুইবার এই পুরস্কার জেতার বিরল কীর্তি গড়েছিলেন।
পদার্থবিজ্ঞানে অনবদ্য অবদান রাখায় গেলো বছর যৌথভাবে এ পুরস্কার পেয়েছিলেন ফ্রান্সের অ্যালাইন অ্যাসপেক্ট, যুক্তরাষ্ট্রের জন এফ ক্লজার ও অস্ট্রিয়ার অ্যান্টন জেলিঙ্গার।
এদিকে প্রথা অনুযায়ী এ বছরও নোবেল পুরস্কার দেওয়া শুরু হয় চিকিৎসাবিজ্ঞানে অবদান রাখাদের নাম ঘোষণার মাধ্যমে। প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের অত্যাধুনক এমআরএনের করোনার টিকা আবিষ্কারে বিশেষ অবদান রাখায় এবার মর্যাদাপূর্ণ এ পুরস্কার জিতে নিয়েছেন ক্যাথলিন কারিকো এবং ড্রিউ ওইসম্যান। গতকাল ২ অক্টোবর তাদের নাম ঘোষণা করা হয়।
আগামীকাল বুধবার (৪ অক্টোবর) রসায়নে নোবেল বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হবে। এরপর বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) সাহিত্যে এবং শুক্রবার (৬ অক্টোবর) শান্তিতে নোবেলজয়ীর নাম জানা যাবে। দুদিন বিরতি দিয়ে ৯ অক্টোবর ঘোষণা করা হবে অর্থনীতিতে নোবেলজয়ীর নাম।
মূলত মোট ছয়টি বিভাগে ছয় দিনে নোবেল বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হয়। নোবেল শান্তি পুরস্কার ঘোষণা হয় নরওয়ে থেকে। সাহিত্য ও অর্থনীতির মতো অন্য পুরস্কারগুলো সুইডেন থেকে ঘোষণা করা হয়।
এদিকে নোবেল পুরস্কার ঘোষণার ক্ষেত্রে খুবই গোপনীয়তা বজায় রাখা হয়। যে বা যারা এ পুরস্কার পান— আনুষ্ঠানিক ঘোষণার মাত্র কয়েক মিনিট আগে তাদের এ ব্যাপারে অবহিত করা হয়।
এর আগে সোমবার (২ অক্টোবর) চিকিৎসাবিজ্ঞান ও শারীরতত্ত্বে নোবেল বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হয়। চিকিৎসাবিজ্ঞানে এ বছর নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন করোনাভাইরাসের টিকা তৈরির প্রযুক্তি আবিষ্কারের জন্য।