জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে ৭৬ হাজার ৭৫১ কোটি ৩০ লাখ টাকা আহরণ করেছে, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৮ হাজার ১৯৫ কোটি ৬৩ লাখ টাকা কম। জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর—এ তিন মাস রাজস্ব আয়ের লক্ষ্য ছিল ৮৪ হাজার ৯৪৬ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। সবচেয়ে বেশি ঘাটতি আয়করে, ৩ হাজার ৫২৬ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। এনবিআর সূত্রে এ তথ্য জানা যায়।
এ কারণ হিসেবে এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মজিদ বলেন, অনেক বেশি লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। তাই ঘাটতি বাড়ছে। এজন্য প্রথমেই সঠিকভাবে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা দরকার ছিল।
এনবিআর সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে এনবিআরের তিন খাতেই রাজস্ব আহরণের ঘাটতি। এর মধ্যে আয়করে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৭ হাজার ১৬৮ কোটি টাকা। সেখানে আয় হয়েছে মাত্র ২৩ হাজার ৬৪১ কোটি ১৫ লাখ টাকার রাজস্ব। শুল্ক পর্যায়ে রাজস্ব আয়ে এনবিআরের ঘাটতি ২ হাজার ৫১৪ কোটি ১০ লাখ। এ খাত থেকে আয় হয়েছে ২৪ হাজার ১২৭ কোটি ৯০ লাখ টাকা, যেখানে লক্ষ্য ছিল ২৬ হাজার ৬৪২ কোটি টাকা। এছাড়া স্থানীয় পর্যায়ে মূসক (ভ্যাট) আদায়ে রাজস্ব ঘাটতি ২ হাজার ১৫৪ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। অর্থাৎ ৩১ হাজার ১৩৬ কোটি ৯৩ লাখ টাকা লক্ষ্যের বিপরীতে ২৮ হাজার ৯৮২ কোটি ২৫ লাখ টাকা আহরণ করতে পেরেছে এনবিআর।
জানা যায়, চলতি অর্থবছরের প্রথম মাস থেকেই লক্ষ্য অনুযায়ী রাজস্ব আহরণে ব্যর্থ এনবিআর। জুলাইয়ে ১ হাজার ৮৬৫ কোটি ৬০ লাখ টাকা ঘাটতি ছিল। আগস্টে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৪ হাজার ৮৭ কোটি ৬৩ লাখ টাকায়।
চলতি অর্থবছরে এনবিআরের মোট রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ৪ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। আগের অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা। এর বিপরীতে আহরণ করা হয় ৩ লাখ ৩৩ হাজার কোটি টাকার মতো।
এনবিআরের কর্মকর্তাদের দাবি, ডলার সংকট ও এলসি নিয়ন্ত্রণ করায় শুল্ক পর্যায়ে রাজস্ব আয়ে ঘাটতি বাড়ছে। আর আয়কর থেকে সাধারণত অর্থবছরের শেষের দিকে বেশি রাজস্ব আসে। তাই এখন কিছুটা ঘাটতি থাকলেও অর্থবছর শেষে তারা রাজস্ব আয়ের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য পূরণ করতে পারবেন বলে আশাবাদী।
ড. মোহাম্মদ আবদুল মজিদ বলেন, অনেক জায়গা থেকে এনবিআর কর অব্যাহতি দিচ্ছে বা করের হার কমাচ্ছে। এতে রাজস্ব আহরণ কমছে। তবে রাজস্ব আয় বাড়াতে এসব জায়গায় এনবিআরের স্থির থাকা দরকার ছিল।