গরমের খাদ্যাভ্যাস

শীত চলে গিয়ে প্রকৃতিতে আগমন ঘটেছে গ্রীষ্মের। আমাদের ষড়ঋতুর এদেশে এখন আর আগের মতো ঋতু বৈচিত্র দেখা যায় না। আর যা অনুভব করা যায় তা হলো গরমের তীব্র দাবদাহ। দিনে প্রচণ্ড গরমে নাজেহাল জনজীবন। সন্ধ্যার পর হঠাৎই হয়তো শীতল বাতাসে জুড়িয়ে যাচ্ছে প্রাণ। আর দিনে সূর্য়ের তীব্রতা যেন পুড়িয়ে দিচ্ছে শরীরকে। আর এই হঠাৎ ঠাণ্ডা আর গরমের কারণেই দেখা দিতে পারে নানা অসুখ। তাই এ আবহাওয়াতে খাবারের তালিকায় সামান্য পরিববর্তন কিন্তু সুস্থতাকেই দাওয়াত দেয়। সেইসঙ্গে সতেজ রাখতে পারবেন নিজেকে। 

এ সময় খাদ্য তালিকায় শাকসবজি, তাজা খাবার, ফলের রস, মাছ, সালাদ ও মৌসুমি ফল রাখা উচিত। লক্ষ্য রাখতে হবে, তরকারি ও শাকসবজিতে মসলা এবং ঝালের পরিমাণ যতটা সম্ভব কম রাখা যায়। ঝাল ও অতিরিক্ত মসলাযুক্ত খাবার খেলে পেটে গ্যাসসহ বিভিন্ন ধরনের অসুখ দেখা দেয়। এছাড়া বাসি ও বাইরের খোলা খাবার এড়িয়ে চলাও শরীরের জন্য ভালো।

এ সময়ের জন্য একটা নির্দিষ্ট খাদ্যতালিকা তৈরি করে মেনে চলাটাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ।

সকালের নাস্তা:  নাস্তা হিসেবে দই-চিড়া, ছোলা ভেজানো, ছাতু, রুটি, পাউরুটি, ভাত, ডাল বা তরকারি। এর সঙ্গে খাওয়া যেতে পারে যে কোনও ফল।

মধ্যাহ্ন ভোজন:  দুপুরে যারা ভারি খাবার গ্রহণ করেন তাদের জন্য ভাত, প্রচুর শাকসবজি, ছোট-বড় মাছের হালকা রান্না, ডালসহ গোশত, ডিম অভ্যাস মতো খেতে পারেন। যাই খাওয়া হোক না কেন সালাদ কিন্তু থাকবেই। 

সন্ধ্যার খাবার : সন্ধ্যায় শরবত বা চা-কফির পাশাপাশি রসালো ফল— তরমুজ, জামরুল, শসা খেতে পারেন। সে সময়  দুধের তৈরি  পরিমাণ মতো মিষ্টিও খেতে পারেন। 

নৈশভোজ : গরমের সময় রাতের খাবার হবে খুবই সাধারন। ভাত বা রুটি, সঙ্গে মাছ, সবজি, ডাল বা দুধ-আম খাওয়া যেতে পারে অল্প পরিমাণে।

শোয়ার আগে : এ সময় এক গ্লাস পানি বা হালকা শরবত বা অভ্যাস থাকলে এক গ্লাস দুধ শরীরের জন্য বেশ উপকার দিবে। 

এছাড়াও কিছু টিপস মনে রাখা জরুরি-

একজন স্বাভাবিক পূর্ণ বয়সের মানুষের গরমকালে কমপক্ষে তিন থেকে সাড়ে তিন লিটার পানীয় পানের প্রয়োজন। পানি ছাড়াও ঘরে তৈরি ফলের শরবত বা জুসও খাওয়া যেতে পারে। লেবুর শরবত ও ডাবের পানি সকলের স্বাস্থ্যের জন্যই উপকারী। এ ছাড়া ওরস্যালাইন বা গ্লুকোজও খাওয়া যেতে পারে। এগুলো দেহ ঠাণ্ডা রাখবে। গরমে ঘামের সঙ্গে প্রচুর পানি বেরিয়ে যায়, যার জন্য দেহ ক্লান্ত হয়ে পড়ে। এ ঘাটতি পূরণে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে। শুধু পিপাসা পেলেই পানি পান করবেন, এমনটা নয়। একটু পরপর এমনিতেই পানি পান করুন।

গরমে এমন খাবার খেতে হবে যা শরীরের ভিতর থেকে রাখবে ঠাণ্ডা। যেমন বিভিন্ন রকমের রসালো ফল, দই। 

সালাদ গরমের জন্য একটি উপাদেয় খাবার। দই, শসা, টমেটো, গাজর, কাঁচা পেঁপে, কাঁচা মরিচ, ধনেপাতা, পুদিনাপাতা, পেঁয়াজ, লেবু, পেয়ারা ইত্যাদি দিয়ে সালাদ তৈরি করে খেলে বেশ উপকার পাওয়া যাবে। 

গ্রীষ্মকালের সবজি মোটামুটি সবগুলোই ভালো। এ গরমে বেশি করে সবজি খেতে হবে।

শরীরকে ঠান্ডা রাখতেই যেন প্রকৃতিতে এ সময় পাওয়া যায় প্রচুর রসালো ফল। পেঁপে, তরমুজ, আম,জাম,কাঁঠাল, পেয়ারা, লিচু, ফুটি, বাঙি এ ফলগুলো খেলে শরীর ত্বক উভয়ই ভালো থাকবে।

যে খাবারগুলো এড়িয়ে চলবেন এ সময়: 

গরমে অতিরিক্ত তেল ও মসলাযুক্ত খাবার এবং ফাস্টফুড এড়িয়ে চলাই ভালো এ ধরনের খাবার সহজে হজম হতে চায় না।

শুকনা ফল শরীরকে ডিহাইড্রেটেড করে দেয় তাই এ সময় এগুলো পরিহার করাই শ্রেয়। 

ক্যাফেইনজাতীয় খাবারে প্রচুর পরিমানে চিনি থাকে যা এ গরমে শরীরকে অসুস্থ করে ফেলতে পারে।  

অনন্যা চৈতী

Recommended For You

Exit mobile version