বিশ্বের ১০০ শহরের মধ্যে প্রায় ২ কোটি মানুষের এ শহরের বায়ুদূষণে ঢাকা অবস্থান ৪৬ তম। অথচ এক দিন আগে, অর্থাৎ গতকাল বৃহস্পতিবার সকালেও বাতাস ছিল অস্বাস্থ্যকর, অবস্থান ছিল ষষ্ঠ। তবে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বাতাস ‘ভালো’হয়ে গেছে। ঢাকার বাতাসে যেন বৃষ্টির জাদু।
শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) সকাল ১০টার দিকে বিশ্বের ১০০টি শহরের মধ্যে বায়ুদূষণে ঢাকার অবস্থান ৪৬। আইকিউএয়ারের বাতাসের মানসূচকে (এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স-একিউআই) এ সময় ঢাকার স্কোর ছিল ৫১। বাতাসের এ মান ‘গ্রহণযোগ্য’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ৫০-এর মধ্যে থাকলেই তাকে ভালো বলা যেত। তবে আজকের বাতাসও অপেক্ষাকৃত ভালো। বাতাসের এই অপেক্ষাকৃত উন্নত মানের কারণ ‘বৃষ্টি’। সাগরে গভীর নিম্নচাপ এবং পরে এ থেকে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় মিধিলির কারণে ঢাকায় সকাল থেকেই বৃষ্টি হচ্ছে।
ঢাকার বায়ুদূষণের অন্যতম উৎস যানবাহনের কালো ধোঁয়া, নির্মাণকাজের ধুলাবালু, শিল্পকারখানার দূষিত বায়ু। দূষণ রোধে সরকারি তৎপরতা তেমন কাজে আসে না।
বায়ুর মান উন্নত করতে বৃষ্টিতে ভরসার কথা সরকারের শীর্ষ ব্যক্তিরাও বলেছেন একাধিকবার। রাজধানীর বায়ুর মান বেশি খারাপ হতে শুরু করে নভেম্বর মাস থেকে। তবে এবার অক্টোবর মাসে গত সাত বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি দূষিত ছিল ঢাকার বাতাস। নভেম্বরের শুরু থেকে একাধিক দিন বিশ্বের শীর্ষ দূষিত শহর হয়েছে ঢাকা।
আজ ১০টার দিকে দূষিত বায়ুর শহরগুলোর তালিকায় প্রথম ও দ্বিতীয় স্থানে ছিল পাকিস্তানের লাহোর ও ভারতের নয়াদিল্লি। শহর দুটির স্কোর যথাক্রমে ৩৭৩ ও ২৬৫।
বায়ুদূষণের এ পরিস্থিতি নিয়মিত তুলে ধরে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ার।
বাতাসের মান নিয়ে তৈরি করা এ লাইভ বা তাৎক্ষণিক একিউআই সূচক একটি নির্দিষ্ট শহরের বাতাস কতটা নির্মল বা দূষিত, সে সম্পর্কে মানুষকে তথ্য দেয় ও সতর্ক করে।
আইকিউএয়ারের দেয়া আজকের তালিকায় বলা হয়েছে, ঢাকার বাতাসে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণাই (পিএম ২.৫) দূষণের প্রধান উৎস। আজ ঢাকার বাতাসে যতটা এই বস্তুকণা আছে, তা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মানদণ্ডের চেয়ে মাত্র দুই গুণের বেশি। গতকাল এ সময় এটি ছিল ১৬ গুণ বেশি।
আজ বাতাসের মান যেহেতু ভালো, তাই শুধু সংবেদনশীল গোষ্ঠীর মানুষকে আজ বাইরে বের হলে মাস্ক ব্যবহারের জন্য বলা হয়েছে।
আইকিউএয়ারের মানদণ্ড অনুযায়ী, স্কোর ৫১ থেকে ১০০ হলে তাকে ‘মাঝারি’ বা ‘গ্রহণযোগ্য’ মানের বায়ু হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ১০১ থেকে ১৫০ স্কোরকে ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ ধরা হয়।
বায়ুদূষণ বেশি হলে সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকেন সংবেদনশীল গোষ্ঠীর ব্যক্তিরা। তাদের মধ্যে আছেন বয়স্ক, শিশু, অন্তঃসত্ত্বা, জটিল রোগে ভোগা ব্যক্তিরা। তাঁদের বিষয়ে বিশেষ যত্নবান হওয়া দরকার বলে পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের।
স্কোর ১৫১ থেকে ২০০ হলে তা ‘অস্বাস্থ্যকর’বায়ু। স্কোর ২০১ থেকে ৩০০ হলে তাকে ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’ বায়ু ধরা হয়।
৩০১ থেকে তার ওপরের স্কোরকে ‘দুর্যোগপূর্ণ’ বা ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ ধরা হয়। ঢাকায় গত জানুয়ারি মাসে সবচেয়ে বেশিসংখ্যক দিন দুর্যোগপূর্ণ বাতাসের মধ্যে কাটিয়েছে নগরবাসী। জানুয়ারির মোট ৯ দিন রাজধানীর বাতাসের মান দুর্যোগপূর্ণ ছিল, যা গত ৭ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।
এএম/