সম্প্রতি কক্সবাজারের মহেশখালীতে স্থানীয় আওয়ামী লীগের এক নেতা ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাসকে হত্যার হুমকি দিয়েছেন। বেশ কয়েকদিন নিরব থাকার পর অবশেষে এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, কূটনীতিকদের বিরুদ্ধে হুমকি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্যহতে পারে না।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।
ব্রিফিংয়ে মুশফিকুল ফজল আনসারি নামে এক সাংবাদিক ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের বিরুদ্ধে হত্যার হুমকির বিষয়ে মিলারের দৃষ্টি আকর্ষণ করলে ম্যাথিউ মিলার বলেন, ‘বিদেশে আমাদের কূটনীতিকদের সেফটি ও সিকিউরিটি অবশ্যই আমাদের শীর্ষ অগ্রাধিকার। তাদের বিরুদ্ধে হুমকিকে আমরা অত্যন্ত সিরিয়াসলি নিই।’
মুশফিকুল ফজল আনসারির প্রশ্ন ছিল-বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন দলের সদস্যদের কাছ থেকে অব্যাহতভাবে হত্যার হুমকি পাচ্ছেন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যন্ত আওয়ামী লীগের নেতারা একই সুরে কথা বলছেন। তারা রাষ্ট্রদূতকে হত্যা করতে চান। এরই মধ্যে নিজের নিরাপত্তা এবং মৌলিক ব্যক্তিগত নিরাপত্তা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রদূত। এ বিষয়টি কি ডিপার্টমেন্ট অব স্টেট সিরিয়াসলি নিচ্ছেন?
জবাবে ম্যাথিউ মিলার বলেন, ‘রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের বিরুদ্ধে হুমকিমূলক বক্তব্যের বিষয়ে বারবার আমরা বাংলাদেশ সরকারের কাছে আমাদের উদ্বেগ তুলে ধরেছি। তাদের আবারও স্মরণ করিয়ে দেব যে, কূটনৈতিক সম্পর্কবিষয়ক ভিয়েনা কনভেনশনের অধীনে মার্কিন কূটনৈতিক মিশন ও এর কর্মকর্তাদের সেফটি এবং সিকিউরিটি নিশ্চিত করতে বাধ্যবাধকতা আছে তাদের। আমরা আশা করব তারা এসব বাধ্যবাধকতা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে।’
সাংবাদিক মুশফিক মিলারের কাছে আরও জানতে চান, যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক ঐকমত্যে আসার আহ্বানকে উপেক্ষা করে এবং বিরোধী দলগুলোর প্রতিবাদ বিক্ষোভ সত্ত্বেও, আসছে ৭ জানুয়ারি বাংলাদেশে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য তফসিল ঘোষণা করেছে সরকার। এই তফসিল বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো প্রত্যাখ্যান করেছে। এর ফলে বিরোধী দলগুলোর সদস্যদের ওপর দমনপীড়ন অব্যাহত আছে। অবাধ, সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের বিষয়ে এবং সরকারের জবাবদিহির বিষয়ে আপনাদের অবস্থান কি?
জবাবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেন, ‘আসছে নির্বাচনে আমরা আমাদের বার্তায় অবিচল আছি। নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হলেও আমাদের বার্তা এখনো একই। বাংলাদেশি জনগণ যা চায়, আমরাও তাই চাই। তা হলো শান্তিপূর্ণ পরিবেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন।’
এসময় ম্যািথিউ মিলার আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে একক কোনো রাজনৈতিক দলকে আমরা সমর্থন করি না। আমরা এক দলকে বাদ দিয়ে অন্য দলকে সমর্থন করি না। সব দলের প্রতি সংযত থাকার, সহিংসতা পরিহারের এবং একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানাই, যাতে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টি হয়।