শিল্প-সাহিত্য
মায়ের প্রতি তাদের ভালোবাসা
বিশ্ব মা দিবস আজ। মায়ের প্রতি আমাদের রয়েছে অগাধ শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা। আর এ ভালোবাসা প্রকাশের জন্যই তো প্রতি বছর মে মাসের দ্বিতীয় রোববার পালন করা হয় বিশ্ব মা দিবস।
মা আমাদের জীবনে সত্যিই আকাশের সমান ছায়া হয়ে থাকে। আমরা যতদিন মায়ের ছায়াতলে থাকি, ততদিন পৃথিবীটাকে বাধাহীন বিচরণভূমি বলে মনে হয়।মায়ের স্নেহের তুলনা হয় না পৃথিবীর আর কিছুর সঙ্গে।
তবে আজ মা দিবসে জানব জীবনানন্দ দাশ, শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, বুদ্ধদেব বসু ও তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের মায়ের প্রতি ভালোবাসা কেমন ছিল, আবার তাদের প্রতি মায়ের ভালোবাসা কেমন ছিল।
জীবনানন্দ দাশ : বালক জীবনানন্দ দাশ অনেক রাত পর্যন্ত জেগে থাকত কখন মা ঘরে আসবে। তারপরেই সে ঘুমাবে। আর ঘরের এক কোণে তার বাবা বাতি জ্বালিয়ে রাত অবধি লিখতেন। আর জীবনানন্দের মা তখনও রান্নাঘরে। যৌথ পরিবারের বড় হেঁশেল। পরিবারের প্রতিটি মানুষের খাওয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত তিনি শুতে যাবেন না। তারপর সব কাজ শেষ করে ঘরে এলে এক দফা ছেলের সঙ্গে গল্প না করে ঘুমোতেন না। ছেলের সারাদিনের কাজের হিসেব নিতেন তখনই। তারপর ঘুমিয়ে পড়তে বলতেন।
এদিকে ঘুম না আসা পর্যন্ত জীবনানন্দের কেবলই ভয় করত এই বুঝি কোনও পড়শি তার মা-কে ডাকতে এল। কারণ পাড়াপড়শির রোগভোগে মা থাকতেন সব সময় পাশে। এমনকী কোনও দুঃস্থ পরিবারকে হয়তো ভিটেছাড়া করা হয়েছে, হয়তো কোনও ‘নিচু জাতের’ কেউ মারা গেছে, কার ঘরে কোনও পোয়াতি মায়ের প্রসব হবে, মার কাছে এক বার খবর এলেই হলো ঠিক চলে যেতেন। সারারাত হয়তো বাড়িই ফিরতেন না আর।
বালক জীবনানন্দর ডাকনাম ছিলো মিলু। সে তখনও জানতেই পারেনি তার মা কুসুমকুমারীর কবি হিসেবে কত সুখ্যাতি ছিলো। ‘ব্রহ্মবাদী’, ‘মুকুল’, ‘প্রবাসী’র মতো পত্রিকায় নিয়মিত তার লেখা বেরোত। তবে এত বড় পরিবারের ঝক্কি ঠেলে তত সময় দিতে পারেন না লেখার জন্যে।
তবুও জীবনানন্দ নিজেই দেখেছেন ‘সংসারের নানা কাজকর্মে খুবই ব্যস্ত আছেন তার মা, এমন সময়ে ‘ব্রহ্মবাদী’র সম্পাদক আচার্য মনোমোহন চক্রবর্তী এসে বললেন, এক্ষুনি ‘ব্রহ্মবাদী’র জন্য তোমার কবিতা চাই প্রেসে পাঠাতে হবে, লোক দাঁড়িয়ে আছে। শুনে মা খাতা-কলম নিয়ে রান্নাঘরে ঢুকে এক হাতে খুন্তি, আর এক হাতে কলম নাড়ছেন দেখা যেত এবং আশ্চর্য’র বিষয় এ যে চক্রবর্তীকে প্রায় তখনই কবিতা দিয়ে দিতেন তার মা’।আবার ছেলের জন্মদিনে তার বন্ধুদের, স্বামীর অফিসের লোকজনকে বাড়িতে নেমন্তন্ন করতেন কুসুমকুমারী। সেখানে গান হত। কবিতা পাঠও।
কখনও কখনও ছেলের বন্ধুদের নিয়ে বসাতেন সাহিত্যসভা সেখানে ছোটদের সঙ্গে বঙ্কিমচন্দ্রর উপন্যাস, কি রামায়ণের নানান সব চরিত্র নিয়ে তর্কও করতেন। মুগ্ধ হয়ে তার কথা শুনত ছেলেমেয়েরা।
জীবনানন্দের মা কুসুমকুমারীই লিখেছিলেন ‘আমাদের দেশে হবে সেই ছেলে কবে?কথায় না বড় হয়ে, কাজে বড় হবে।’
তাই জীবনানন্দ যখন তারুণ্যের স্থূলতায় বড় বড় আদর্শ মহাপুরুষদের সম্পর্কে সন্দেহ প্রকাশ করতে শুরু করলেন, তখন মা তাকে বলেছিলেন ‘ও-রকম করে হয় না আগে তাদের মহত্ত্বে বিশ্বাস করো মনের নেতিধর্ম নষ্ট করে ফেলো; শুধু মহামানুষ কেন যে কোনও মানুষ কতখানি শ্রদ্ধা ও বিশ্বাসের পাত্র অনুভব করতে শেখো’।
তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় : বই পড়ার অভ্যাস মায়ের থেকে পেয়েছিলেন তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়। তার মা প্রভাবতী দেবীর নিজেরই ছিল বই পড়ার দারুণ নেশা। আফিম খেতেন, তার ঝোঁকে সন্ধ্যার দিকে ঘুমিয়ে পড়তেন। দু’ঘণ্টা পর উঠে সবাইকে খাইয়ে একটা হ্যারিকেন জ্বালিয়ে পড়তে বসে যেতেন। রাত্রি দুটো পর্যন্ত আলো জ্বেলে বই পড়তেন তার মা।হাতের লেখা ছিল যেন মুক্তো। বানান নির্ভুল, ব্যাকরণেও ভুল করতেন না। এ নিয়ে একবার অদ্ভুত কান্ড ঘটে।তারাশঙ্করের বাবা মারা যাওয়ার পর বিষয়-সম্পত্তি সংক্রান্ত মামলায় দাখিল করা কাগজে মায়ের সই বা লেখা দেখে বিচারকের সন্দেহ হয়, এ কোনও মেয়ের লেখা হতেই পারে না! শুধু পড়াশুনো নয়, পুত্র বিস্মিত হতেন মায়ের সাহস আর স্থৈর্য দেখেও।
এদিকে গ্রামের বাড়ি। প্রায়ই ভূত বা প্রেতাত্মার গুজব ছড়াত। প্রভাবতীদেবীর তাতে ভ্রুক্ষেপ নেই। সটান বেরিয়ে পড়তেন বাড়ি থেকে।নিজ চোখে দেখেশুনে অন্যের ভয় ভাঙাতেন।ঘরে সাপ ঢুকলে নিমেষে বুঝে ফেলতেন। সাপের গন্ধ নাকি টের পেতেন তিনি। একবার পায়ের উপর দিয়ে হেঁটে গেছে গোখরো সাপ। তাতে অচলা মূর্তি হয়ে দাঁড়িয়ে বিপদ এড়িয়েছিলেন তিনি।
মায়ের কথা তারাশঙ্কর লিখেছেন “আমার মায়ের দেহবর্ণ ছিল উজ্জ্বল শুভ্র। আর তাতে ছিল একটি দীপ্তি। চোখ দুটি স্বচ্ছ, তারা দুটি নীলাভ। কথাবার্তা অত্যন্ত মিষ্ট, প্রকৃতি অনমণীয় দৃঢ়, অথচ শান্ত। আমার মা যদি উপযুক্ত বেদীতে দাঁড়াবার সুযোগ পেতেন তবে তিনি দেশের বরণীয়াদের অন্যতমা হতেন এ বিষয়ে আমি নিঃসন্দেহ’।
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় : জীবনযুদ্ধে কখনই হার মানতেন না শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের মা ভুবনমোহিনী দেবী। ভুবনমোহিনীর বাবা কেদারনাথ ভাগলপুরের ধনী সম্ভ্রান্ত ব্যক্তি ছিলেন। এই বাড়িতেই আশ্রিত ছিলেন মতিলাল চট্টোপাধ্যায়। মেয়েকে কাছে রাখবেন ভেবে মতিলালের সঙ্গে তার বিয়ে দিয়ে দিলেন কেদারনাথ। ঘরজামাই মতিলাল ছিলেন আয়েসি ও খুব শৌখিন। অর্থ উপার্জনের কোনো চেষ্টাই করতেন না। তিনি মজে থাকতেন তাস-দাবায়, তামাকের নেশায় আর দিবানিদ্রায়। স্কুল মাস্টারির চাকরি পেলেন বছর না ঘুরতেই তাতে ইস্তফা দিয়ে চলে এলেন। বাপের বাড়িতে লজ্জায় কুণ্ঠিত হয়ে থাকতে হয় ভুবনমোহিনীকে। তবু তিনি সংসারটাকে ভেসে যেতে দেননি।
মা সম্পর্কে শরৎচন্দ্র লিখেছেন ‘আমার মা ছিলেন খুবই উদারপ্রাণ। সংসারের সকল দুঃখ কষ্ট তিনি হাসিমুখেই সহ্য করতেন। ত্যাগ, কর্তব্যবোধ, নিষ্ঠা, স্নেহপ্রবণতা এসব গুণের সমন্বয়ে গঠিত ছিল তার চরিত্র’।
সংসারে ভুবনমোহিনীর ভূমিকা কী ছিল তা বোঝা যায় ১৯১৯ এর ২৪ আগস্ট শরৎচন্দ্রেরই লেখা একটি চিঠিতে “মায়ের মৃত্যুর পরে বাবা প্রায় পাগলের মতো হয়ে যা কিছু ছিল সমস্ত বিলিয়ে নষ্ট করে দিয়ে স্বর্গগত হন।
বুদ্ধদেব বসু : বুদ্ধদেব বসু তার দিদিমাকে ডাকতেন ‘মা’। বুদ্ধদেব বসুর মা বিনয়কুমারী বুদ্ধদেবের জন্মের পর চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে ধনুষ্টংকার রোগে মারা যান। আর এ মৃত্যুর জন্যই পুত্রের নাম রাখা হয় বুদ্ধদেব। বুদ্ধদেবের দিদিমার ব্যক্তিগত সম্পত্তির মধ্যে একটি ফটোগ্রাফ ছিল ক্ষীণাঙ্গ এক যুবক, তার কাঁধে মাথা রেখেছে এক তরুণী। আর তরুণীটির মুখটি গোল মতো, পিঠ-ছাপানো একরাশ চুল, কিন্তু চোখ তার বোজা, যুবকটি তার কোমর জড়িয়ে ধরে আছে। বুদ্ধদেব বসুর বাবা ভূদেবচন্দ্র বসু তার মৃত পত্নীকে নিয়ে ছবিটি তুলেছিলেন। এর পরেই তিনি সংসারত্যাগী হন। তারপর একমাত্র ওই ছবিটি নিয়ে কোনও কৌতূহল বা চিন্তা করার অবকাশ পাননি বুদ্ধদেব। জীবনের শেষ প্রান্তে এসে, ষাট পেরোনো মানুষটির প্রান্তিক নির্জনতায় বসে ওই ছবির কথা মনে পড়ত তার।
সেই সঙ্গে বুদ্ধদেবর মনে হত ‘কেমন ছিল সে দেখতে, কেমন পছন্দ-অপছন্দ ছিল তার? বই পড়তে ভালোবাসত? আমার মধ্যে তার কোনও একটি অংশ কি কাজ করে যাচ্ছে? মনে হয় আমাকে জন্ম দেবার পরিশ্রমে যে মেয়েটির মৃত্যু হয়েছিল তার কিছু প্রাপ্য ছিল আমার কাছে’।
শিল্প-সাহিত্য
কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬৩তম জন্মজয়ন্তী আজ
আজ পঁচিশে বৈশাখ। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬৩তম জন্মজয়ন্তী। ১৮৬১ সালের (বঙ্গাব্দ ১২৬৮) এই দিনে কলকাতার জোড়াসাঁকো ঠাকুর বাড়িতে জন্ম নিয়েছিলেন বিশ্বকবি। বাবা ছিলেন দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং মা সারদাসুন্দরী দেবী। রবীন্দ্রনাথ ছিলেন তার বাবা-মায়ের চতুর্দশ সন্তান।
তিনি ছিলেন অগ্রণী বাঙ্গালী কবি, ঔপন্যাসিক, সঙ্গীতস্রষ্টা, নাট্যকার, চিত্রকর, ছোটগল্পকার, প্রাবন্ধিক, কন্ঠশিল্পী ও দার্শনিক। তাঁকে বাংলা ভাষার সর্বশ্রেষ্ঠ্য সাহিত্যিক মনে করা হয়। ১৯১৩ সালে গীতাঞ্জলি কাব্যগ্রন্থের জন্য তাঁকে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার প্রদান করা হয়। ইউরোপের বাহিরের প্রথম নোবেল পুরস্কার বিজয়ী হিসাবে তিনি বিশ্বে ব্যপক খ্যাতি লাভ করেন।
রবীন্দ্রনাথের অন্তর্নিহিত জীবনবোধ ছিল স্থির এবং বহু পরিবর্তনকে স্বীকার করে নিয়েও আপন আদর্শে প্রতিষ্ঠিত; অন্যদিকে তার সৃজনশীল রূপটি ছিল চলিষ্ণু ও পরিবর্তনশীল। রবীন্দ্রনাথ কেবল তার কালের কবি নন, তিনি কালজয়ী। বাংলা কাব্যসাহিত্যের ইতিহাসে তাঁর আবির্ভাব ছিল এক যুগান্তর।
বিশ্বকবি ১৯০১ সালে পশ্চিমবঙ্গের শান্তিনিকেতনে ব্রাহ্মচর্যাশ্রম প্রতিষ্ঠা করেন। এরপর কবিগুরু সেখানেই বসবাস করেন। ১৯০৫ সালে জড়িয়ে পড়েন বঙ্গভঙ্গবিরোধী আন্দোলনে। ১৯২১ সালে গ্রামোন্নয়নের জন্য প্রতিষ্ঠা করেন ‘শ্রীনিকেতন’ নামে সংস্থা। ১৯২৩ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হয় ‘বিশ্বভারতী’।
১৮৯১ সাল থেকে বাবার আদেশে কুষ্টিয়ার শিলাইদহে, পাবনা, নাটোরে ও উড়িষ্যায় জমিদারিগুলো তদারকি শুরু করেন। শিলাইদহে তিনি দীর্ঘদিন অতিবাহিত করেন। এখানে জমিদার বাড়িতে রচনা করেন অসংখ্য কবিতা ও গান। ১৯০১ সালে শিলাইদহ থেকে সপরিবারে কবি বোলপুরে শান্তিনিকেতনে চলে যান।
রবী ঠাকুরের জন্মজয়ন্তীতে পৃথক বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন তার দেয়া বাণীতে বলেন, ছিল রবীন্দ্রনাথের জীবনবোধের প্রধান পাথেয় ছিল মনুষ্যত্বের বিকাশ, মানবমুক্তি ও মানবপ্রেম। রবীন্দ্রনাথ সাহিত্য অঙ্গনের এক বিস্ময়কর প্রতিভা। তিনি একাধারে কবি, ঔপন্যাসিক, গল্পকার, গীতিনাট্যকার ও প্রবন্ধকার। সাহিত্যের এমন কোনো শাখা নেই যেখানে তিনি বিচরণ করেননি।
রাষ্ট্রপতি আরও বলেন, সাহিত্যের মাধ্যমে তিনি গেয়েছেন মানবতার জয়গান। শুধু সাহিত্য সাধনা নয়, পূর্ববঙ্গের জমিদারি পরিচালনার পাশাপাশি দরিদ্র প্রজাসাধারণের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন, অর্থনৈতিক মুক্তি ও মানবিক বিকাশের জন্য নানামুখী উদ্যোগ নিয়েছিলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার দেয়া বাণীতে বলেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাংলা সাহিত্যে এক বিস্ময়কর প্রতিভা। তিনি একাধারে কবি, কথাসাহিত্যিক, প্রাবন্ধিক, নাট্যকার, সংগীতজ্ঞ, চিত্রশিল্পী, শিক্ষাবিদ, দার্শনিক ও সমাজ সংস্কারক। তার হাতেই বাংলা কবিতা, গান, ছোট গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ, নাটক, গীতি নাট্য, নৃত্য নাট্য পূর্ণতা পেয়েছে। বাংলা সাহিত্য স্থান করে নিয়েছে বিশ্বসভায়। তিনিই প্রথম বাঙালি কবি, যিনি এশীয়দের মধ্যে প্রথম সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পান।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, রবীন্দ্রনাথ শান্তি ও মানবতার কবি। বিশ্বমানবতার সংকটে তিনি সবসময় গভীর উদ্বেগ বোধ করতেন। রবীন্দ্র দর্শনের প্রধান বিষয় অসাম্প্রদায়িক চেতনা, বিশ্বমানবতাবোধ ও মানুষে মানুষে মিলন। রবীন্দ্রনাথের শিক্ষাভাবনা বিজ্ঞানভিত্তিক, যা আধুনিক শিক্ষায় অগ্রগামী হতে আমাদের উদ্বুদ্ধ করে। বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামে তার (রবীন্দ্রনাথের) রচনা আলোক শিখা হয়ে বাঙালিকে দেখিয়েছে মুক্তির পথ। বাঙালির সুখে-দুঃখে তার গান যেমন দিশা দিয়েছে, বাঙালির জাতীয় সংকটেও তার গান হয়ে উঠেছে একান্ত সহায়। ১৯৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধে রবীন্দ্রনাথের কবিতা ও গান হয়ে উঠেছিল মুক্তিকামী বাঙালির চেতনা সঞ্চারী বিজয় মন্ত্র।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে সরকারের পক্ষ থেকে জাতীয় পর্যায়ে বিস্তারিত কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়েছে। জাতীয় পর্যায়ের অনুষ্ঠানের অংশ হিসেবে বিশ্বকবির স্মৃতিবিজড়িত নওগাঁ জেলার আত্রাই উপজেলার পতিসরে, কুষ্টিয়ার শিলাইদহ কুঠিবাড়ী, সিরাজগঞ্জের শাহাজাদপুর এবং খুলনার দক্ষিণডিহি ও পিঠাভোগে স্থানীয় প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় যথাযোগ্য মর্যাদায় বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মবার্ষিকী উদযাপন করা হবে। এ উপলক্ষ্যে রবীন্দ্রমেলা, রবীন্দ্রবিষয়ক আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছে।
বাংলাদেশ শিল্পকলা একডেমির জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে সকাল ১১টায় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। তিন দিনব্যাপী এ অনুষ্ঠান মালা উদ্বোধন করবেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। রবীন্দ্রজয়ন্তী উপলক্ষ্যে ছায়ানটের রবীন্দ্র-উৎসব ২৫ ও ২৬ বৈশাখ (৮ ও ৯ মে) ছায়ানট মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হবে। প্রতিদিন সন্ধ্যা ৭টায় অনুষ্ঠান শুরু হবে।
টিআর/
শিল্প-সাহিত্য
বইমেলায়ে এসেছে মোশতাক আহমেদ এর ‘রূপার সিন্দুক’
এবারের অমর একুশে বইমেলায় এসেছে জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক মোশতাক আহমেদের লেখা শিশিলিন সিরিজের নতুন কিশোর গোয়েন্দা উপন্যাস ‘রূপার সিন্দুক’।
এছাড়াও রয়েছে – প্যারাসাইকোলজি উপন্যাস- হারানো জোছনার সুর; সায়েন্স ফিকশন- দ্য ওল্ড ওয়ার্ল্ড এবং ভৌতিক- মৃত্যুবাড়ি।
উল্লেখ্য, মোশতাক আহমেদ পেশায় একজন পুলিশ অফিসার। ২০১৮ সালে বাংলা একেডেমি সাহিত্য পুরস্কার এবং শিশু একাডেমি সাহিত্য পুরস্কারে ভূষিত হন। এছাড়াও তিনি কালি ও কলম সাহিত্য পুরস্কার, ছোটদের মেলা সাহিত্য পুরস্কার, কৃষ্ণকলি সাহিত্য পুরস্কার এবং চ্যানেল আই সিটি আনন্দ সাহিত্য পুরস্কারসহ নানা সম্মাননায় ভূষিত হন।
শিল্প-সাহিত্য
আজ বইমেলা শুরু বেলা ১২টায়
পবিত্র শবে বরাতের ছুটির দিনে অমর একুশে বইমেলা শুরু হবে বেলা ১২টায়। চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত। তবে রাত সাড়ে ৮টার পর নতুন করে কেউ মেলা প্রাঙ্গণে প্রবেশ করতে পারবে না।
সোমবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) বাংলা একাডেমির জনসংযোগ, তথ্যপ্রযুক্তি ও প্রশিক্ষণ বিভাগ থেকে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
আরো জানানো হয়েছে, অমর একুশে বইমেলার ২৬তম দিনে বিকেল ৪টায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে স্মরণ : আবুবকর সিদ্দিক এবং স্মরণ : আজিজুর রহমান আজিজ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন ফরিদ আহমদ দুলাল এবং কামরুল ইসলাম। আলোচনায় অংশগ্রহণ করবেন মামুন মুস্তাফা, তৌহিদুল ইসলাম, মো. মনজুরুর রহমান এবং আনিস মুহম্মদ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন কবি আসাদ মান্নান। এছাড়া বিকেলে ‘লেখক বলছি’ এবং বই-সংলাপ ও রিকশাচিত্র প্রদর্শন মঞ্চের আয়োজনও অনুষ্ঠিত হবে।
উল্লেখ্য, চলতি মাসের এক তারিখ থেকে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ এবং ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের প্রায় সাড়ে ১১ লাখ বর্গফুট জায়গায় চলছে অমর একুশে বইমেলা। একাডেমি প্রাঙ্গণে ১২০টি প্রতিষ্ঠানকে ১৭৩টি এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে ৫১৫টি প্রতিষ্ঠানকে ৭৬৪টি ইউনিট অর্থাৎ মোট ৬৩৫টি প্রতিষ্ঠানকে ৯৩৭টি ইউনিট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। মেলায় ৩৭টি (একাডেমি প্রাঙ্গণে ১টি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে ৩৬টি) প্যাভিলিয়ন বই বিক্রি করছে।
-
ক্রিকেট6 days ago
যে বোলারকে খেলতে সবচেয়ে কঠিন লাগতো রোহিতের
-
জাতীয়6 days ago
ঢাকার ২ সিটিতে ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধের নির্দেশ
-
বলিউড4 days ago
জরায়ুতে কত বড় টিউমার ধরা পড়েছে জানালেন রাখি
-
আইন-বিচার5 days ago
ইলেক্ট্রোলাইট ড্রিংকস এসএমসি প্লাসকে ১৬ লাখ টাকা জরিমানা
-
বলিউড3 days ago
অর্থাভাবে চড়া দামে ফ্ল্যাট ভাড়া দিলেন মালাইকা অরোরা
-
আইন-বিচার5 days ago
তনির কাছে পাকিস্তানি ড্রেস বিক্রি করেনি লাখানি কালেকশন
-
ঢাকা3 days ago
এ যেনো আরেক ছুটির ঘণ্টা!
-
আইন-বিচার7 days ago
চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নতুন নির্বাচন দাবি করে নিপুণের রিট