রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে ভারত মুখ্য ভূমিকা পালন করতে পারে: প্রধানমন্ত্রী

রোহিঙ্গা শরণার্থীরা বাংলাদেশের জন্য একটি ‘বড় বোঝা’। বললেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ভারতীয় সংবাদসংস্থা এএনআইকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রীর ৫ সেপ্টেম্বর ভারত সফরের আগে ভারতীয় সংবাদ সংস্থা এএনআই রোববার (৪ সেপ্টেম্বর) তাদের ওয়েব সাইটে সাক্ষাৎকারটি প্রকাশ করেছে। 

সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গাদের নিরাপদে তাদের স্বদেশে প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করছে। তবে তিনি মনে করেন এক্ষেত্রে মুখ্য ভূমিকা পালন করতে পারে ভারত।

এএনআইয়ের সঙ্গে আলাপচারিতায় শেখ হাসিনা স্বীকার করেছেন, বাংলাদেশে দশ লক্ষাধিক রোহিঙ্গার উপস্থিতি তার শাসনের জন্য চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আচ্ছা আপনি জানেন… আমাদের জন্য এটি একটি বড় বোঝা। ভারত একটি বিশাল দেশ; তারা রোহিঙ্গাদের থাকার জায়গার ব্যবস্থা করতে সক্ষম হলেও সেখানে খুব বেশি শরণার্থী নেই। কিন্তু আমাদের দেশে… আমরা ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছি। তাই ভালো… আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এবং আমাদের প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে পরামর্শ করছি, তাদেরও কিছু পদক্ষেপ নেয়া উচিত যাতে তারা দেশে ফিরে যেতে পারে।

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার মানবিক দিকটি মাথায় রেখে বাস্তুচ্যুত সম্প্রদায়ের ভালো রাখার চেষ্টা করেছেন।

তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ… মানবিক কারণে আমরা এই রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছি এবং সব সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছি। এমনকি করোনার সময়, আমরা রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সবাইকে টিকা দিয়েছি। কিন্তু তারা কতদিন এখানে থাকবে? তাই তারা ক্যাম্পে অবস্থান করছে। আমাদের পরিবেশ বিপজ্জনক। এখন আবার কেউ কেউ মাদক ব্যবসায় বা নারী পাচার বা অস্ত্র সংঘাতের সঙ্গে জড়িত। দিনকে দিন তা বেড়েই চলেছে। তাই যত তাড়াতাড়ি তারা নিজ দেশে ফিরবে  তা আমাদের দেশের জন্য এবং মিয়ানমারের জন্যও মঙ্গলজনক। তাই আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করে যাচ্ছি। আমরা তাদের সঙ্গে এবং আসিয়ান বা ইউএনও-সহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গেও আলোচনা করছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশ অনেক সমস্যার মুখোমুখি হয়েছে। এখন তাদের দেশে ফিরে যাওয়া উচিত। প্রতিবেশী দেশ হিসেবে এক্ষেত্রে ভারত মুখ্য ভূমিকা রাখতে পারে।

সাক্ষাৎকারে শেখ হাসিনাকে তিস্তাসহ অভিন্ন আন্তঃসীমান্ত নদীর পানি বণ্টন নিয়ে ভারতের সঙ্গে তার দেশের সহযোগিতার বিষয়েও প্রশ্ন করা হয়। শেখ হাসিনা বলেন, চ্যালেঞ্জ থাকলেও সেগুলো এমন কিছু নয় যা পারস্পরিকভাবে সমাধান করা যায় না।

তিনি বলেন, তবে এটা খুবই দুঃখজনক যে, আমরা একটি… আপনি জানেন… এটি ঝুলে আছে। ভারত থেকে আমাদের দেশে পানি আসে, তাই ভারতের আরও উদারতা দেখাতে হবে। কারণ এতে উভয় দেশই লাভবান হবে। কখনও কখনও পানির অভাবে আমাদের জনগণও অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিশেষ করে তিস্তায় (পানি না পেয়ে) আমরা ফসল রোপণ করতে পারিনি এবং আরও অনেক সমস্যা দেখা দিয়েছে। তাই আমি মনে করি এর সমাধান হওয়া উচিত। অবশ্য, হ্যাঁ আমরা দেখেছি- প্রধানমন্ত্রী (মোদি) …আপনি জানেন… এই সমস্যাটি সমাধান করার জন্য অনেক আগ্রহী, কিন্তু সমস্যাটি আপনার দেশেই। তাই… আমরা আশা করি এটি (সমাধান) হবে, আপনি জানেন… এটি সমাধান করা উচিত।

তিনি আরও বলেন, দুই দেশ গঙ্গা নদীর পানি ভাগ করে নিয়েছে। শুধু গঙ্গার পানি আমরা ভাগ করি। আমরা চুক্তি স্বাক্ষর করেছি। কিন্তু আমাদের আরও ৫৪টি নদী আছে। হ্যাঁ… তাই এটি একটি দীর্ঘস্থায়ী সমস্যা, এটি সমাধান করা উচিত।

টিআর

Recommended For You

Exit mobile version