সাততলা বস্তি ও বিহারী পট্টির অগ্নিকাণ্ড রহস্যজনক

২৭ ঘন্টার মধ্যে রাজধানীর পল্লবীর কালশী এলাকার বাউনিয়া বাঁধ বস্তি, মহাখালীর সাততলা বস্তি ও মোহাম্মদপুরের বাবর রোডে বিহারী পট্টিতে অগ্নিকাণ্ড রহস্যজনক। বললেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

আজ বৃহস্পতিবার (২৬ নভেম্বর) এক বিবৃতিতে গত মঙ্গলবার ও বুধবার রাজধানীর তিনটি বস্তিতে অগ্নিকাণ্ডে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

করোনা পরিস্থিতির মধ্যে এই রহস্যজনক অগ্নিকাণ্ডে রাজধানীর উক্ত তিনটি বস্তির অসংখ্য নিম্নআয়ের মানুষ ঘরবাড়ী, সম্পদ, অর্থ, পরিধেয় বস্ত্র এমনকি রান্না করার সম্বলটুকু হারিয়ে দিশেহারা। এহেন পরিস্থিতিতে তারা শীতের মধ্যে খোলা আকাশের নীচে অত্যন্ত মানবেতর জীবন-যাপন করছেন।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, বস্তির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ক্ষমতাসীন দলের মদদপুষ্টরা ষড়যন্ত্র করে এসব আগুন লাগিয়েছে ভুক্তভোগী বস্তিবাসীদের ধারণা। আগুন লাগিয়ে দখল-পাল্টা দখল, অসৎ প্রক্রিয়ায় কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়া, অবাধে মাদক ব্যবসা ও চাঁদাবাজীর দৌরাত্ম নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে তারা বেপরোয়া।

মির্জা ফখরুল বলেন, গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে-বিগত তিন বছরে ঢাকায় বিভিন্ন বস্তিতে ৯৫৩টি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটলেও আইন শৃঙ্খলা বাহিনী এ পর্যন্ত একটিরও অভিযোগপত্র দিতে পারেনি। মূলত: ক্ষমতাসীন মদদপুষ্ট ভূমিদস্যু মহলের যোগসাজশ ও অবৈধ প্রভাব এর মূল কারণ।

রাজধানীর বস্তিসমূহে বিভিন্ন সময় অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটিয়ে একদিকে ভূমিদস্যুরা প্রচুর অর্থ-বিত্তের মালিক বনে যাচ্ছে, অন্যদিকে নিম্নআয়ের খেটে খাওয়া অসহায় মানুষ অগ্নিকাণ্ডের কারণে এক বস্তি থেকে অন্য বস্তিতে ছুটে বেড়াচ্ছে একট মাথা গোজার ঠাঁইয়ের জন্য এতদসত্ত্বেও সরকার, প্রশাসন কিংবা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এ বিষয়গুলোর প্রতি ন্যুনতম ভ্রুক্ষেপ না করে নির্বিকার থাকছে।

এ ধরনের ভ্রুক্ষেপহীনতাকে চরম মানবতাবিরোধী কর্মকাণ্ড হিসেবে আখ্যায়িত করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, জনগণের দ্বারা নির্বাচিত সরকার কিংবা সিটি কর্পোরেশন না থাকায় চরম বিপদের মুখোমুখি হয়েও ভুক্তভোগী মানুষরা সাহায্য সহযোগিতা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। অগ্নিকাণ্ডে যারা সম্বলহীন, এসব মানুষ এখনও পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে কোন ত্রাণ সামগ্রী পায়নি বলে জানা গেছে।

বিবৃতিতে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সরকারের মন্ত্রী-এমপি’রা উন্নয়নের জোয়ারের কথা বলতে বলতে হয়রান হয়ে যাচ্ছেন, অথচ দেশে প্রকৃত অর্থে কিসের উন্নয়ন হচ্ছে তা এসব বস্তি ও বস্তিবাসীর দিকে তাকালেই সেই চিত্র ফুটে ওঠে।

বিবৃতিতে তিনি নিরপেক্ষ ও বস্তুনিষ্ঠ তদন্তের মাধ্যমে বস্তিতে অগ্নিকাণ্ড এবং দখল-পাল্টা দখল, দখলের সাথে জড়িত চিহ্নিত ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানান।

তিনি অগ্নিকাণ্ডের শিকার হয়ে মানবেতর জীবনযাপনকারী নিম্নআয়ের অসহায় মানুষদের স্থায়ীভাবে পুণর্বাসন, পর্যাপ্ত পরিমান ত্রান ও নতুন করে জীবনযাপনের জন্য আর্থিক সহযোগিতা প্রদান এবং বস্তিতে সেবা সংস্থাগুলোর বৈধ ও সুরক্ষিত সেবা নিশ্চিত, মধ্যস্বত্ত্বভোগীদের অপসারণ ও নিরাপদ জীবন-যাপনে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়ার আহবান জানান বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানা গেছে।

এস

Recommended For You

Exit mobile version