Connect with us

জাতীয়

ফুলবাড়ীতে মাদকের করাল গ্রাসে তরুন-যুব সমাজ

Published

on

স্ত্রী-দুই ছেলেসহ চার সদস্যের সুখের সংসার। যেন সাজানো বাগান। বড় ছেলে(ছদ্দ নাম) জীবন অনার্স শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী।

করোনা কালে কলেজ বন্ধ থাকায় বড় ছেলে পড়াশুনার পাশাপাশি বাড়ীতে মুরগীর ফার্ম দিয়ে নিজের পায়ে দ্বারানোর চেষ্টা করছেন। একটু হলেও সংসারের সহযোগীতা করছেন। ছোট ছেলে(ছদ্দ নাম) আকাশ -দ্বাদশ শ্রেণীতে পড়ে। সামনে এইচ এসসি পরীক্ষা দিবে।

স্ত্রী-দুই ছেলেসহ চার সদস্যের সংসার ভালই চলছিল। আমার ছোট আকাশ পড়াশুনার পাশাপাশি কখন কিভাবে যে বন্ধুদের সাথে সঙ্গ দিতে দিতে কখন যে মাদকাসক্ত হয়ে পড়েছে তা আমার জানা ছিল না। যখন জানতে পারলাম আমার ছোট-ছেলে মরণ নেশায় জড়িয়ে পড়েছেন,তখন থেকে আজও পর্যন্ত শত চেষ্টা করেও তাকে স্বাভাবিক জীবনে ফেরাতে পারিনি।

নেশার টাকার জন্য প্রায় বাড়ীতে ভাংচুর করতো সে। কখনো তার হাতে লাঞ্ছনার শিকার হয়েছি বলে হাউ-মাউ করে কেঁধে উঠেন অসহায় এক বাবা। তিনি পেশা একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। নাম না প্রকাশের শর্তে কান্না জড়িত কন্ঠে জানান, ছোট-ছেলেটাকে স্বাভাবিক জীবনে ফেরাতে এক এক করে দুই রংপুরের মাদক নিরাময় কেন্দ্রে পাঠাই। এখনও রংপুরের শান্তি মাদক নিরাময় কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন আছে। ছেলেটা মাদকাসক্ত হওয়ায় সমাজে অনেক ছোট হয়ে বসবাস করছি।

যেন লজ্ঝায় কাউকে মুখ দেখাতে পারছিনা। শেষ বারের মতো মাদকাসক্ত সন্তানকে স্বাভাবিক জীবনে ফেরার জন্য রংপুর শহরে শান্তি মাদক নিরাময় ক্লিনিকে ভর্তি করে দিয়েছি। জানি না কি হবে। এই সমস্যার শিকার শুধু তিনি একা নন। চারিদিকে সবুজের ঘেরা দেশের উত্তরের জেলা কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী সীমান্তঘেষা এলাকায় অনেক পরিবারের চিত্র এটি।

Advertisement

ফুলবাড়ী উপজেলার ৩৬ কিলোমিটার ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত হওয়ায় লালমনিরহাট ১৫ বিজিবি’র সদস্যরা সর্তক অবস্থানে টহল অব্যাহত থাকলেও সুকৌশলে ভারতের উৎপাদিত মাদক দ্রব্য ইয়াবা ট্যাবলেট, ফেন্সিডিল, গাঁজা, মদ সীমান্ত পথে ভারত থেকে পাঁচার করে নিয়ে আসছেন চোরাকারবারীরা।

এই সব মাদক দ্রব্য স্কুল-কলেজ পড়–য়া শিক্ষার্থীসহ যুব সমাজ বিপথগামী করে দেশ ও জাতিকে অন্ধকারের ঠেঁলে দিচ্ছে। মাদকের কাঁচা টাকার সু-গন্ধে খুব সহজেই মাদক ব্যবসার সঙ্গে অনেকেই জড়িয়ে যান সীমান্ত স্কুল-কলেজ পড়–য়া শিক্ষার্থীসহ অনেক উচ্চ শিক্ষিত বেকার যুবক জীবন-জীবিকার তাগিতেই মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। পুরো উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নের ঘুরে এসব তথ্য জানা গেছে।

ফুলবাড়ী থানা সুত্রে জানা গেছে, থানা পুলিশসহ বিভিন্ন আইন শৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা মাদক বিরোধী অভিযানে মাদক নির্মুল ও মাদক মুক্ত ফুলবাড়ী গড়তে রাত দিন অক্লান্ত পরিশ্রম করে মাদক বিরোধী অভিযান অব্যাহত রেখে গত ১ বছরে পুলিশ মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ ও চোরাচালান প্রতিরোধ আইনে ফুলবাড়ী থানায় মোট ১৯১ টি মামলা দায়ের হয়েছে।

২০২০ সালে ১ লা জানুয়ারী থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ফুলবাড়ী থানা পুলিশসহ বিভিন্ন আইন শৃংখলা বাহিনীর হাতে মোট ৩৩৮ কেজি ২২ গ্রাম গাঁজা, ৬ হাজার ৬০৯ পিচ ইয়াবা ট্যাবলেট, ১ হাজার ১৬১ বোতল ফেন্সিডিল, ১৮ বোতল মদ ও ২৬৬ বোতল স্কাপ সিরাপ উদ্ধার ও ২২৮ জন মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে। পুলিশসহ বিভিন্ন আইন শৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা দিন রাত কট্টর শ্রম করে গত ১ বছরে ছয় মাসে ১৯১ টি মাদক মামলা ও বিপুল পরিমান মাদক দ্রব্য উদ্ধার এবং ২২৮ জন মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করলেও কোন ক্রমেই থামছে না মাদক ব্যবসা।

উপজেলার ৬ টি ইউনিয়নের মাদকের নিরাপদ রুট গুলো হলো -সীমান্তঘেষা ১ নং নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের চর-গোরকমন্ডল, আনন্দ বাজার, চর-আবাসন, গোরক মন্ডল, বিডিআর বাজার, নামাটারী, কৃষ্ণানন্দ বকসী, বালাতাড়ি, ধুলারকুটি, ক্যাম্পের ছড়া, জুগিটারী, গজেরকুটি, ঠোস খলিশাকোঠাল, খলিশাকোঠাল,বাদশার বাজার, চওড়াবাড়ী, কুরুষাফেরুষা, পূর্বফুলমতি, বালারহাট ও বারাইটারী, নাওডাঙ্গা বকুলতলা।

Advertisement

সীমান্তঘেষা ২ নং শিমুলবাড়ী ইউনিয়নের ঠাকুরপাট, বোর্ডের হাট, টেপরীর বাজার, আছিয়ার বাজার, রসুন শিমুলবাড়ী, ভুরিয়ার কুটি,জুম্মাড়পাড়। সীমান্তঘেষা ৩ নং ফুলবাড়ী সদর ইউনিয়নের ব্রাকমোড়, পানিমাছকুটি, চাঁন্দের বাজার, আব্দুল্লাবাজার, চৌত্তাবাড়ী মোড়, নাখারজান, ঠোস বিদ্যাবাগিস, দাসিয়ারছড়া, সীমান্তঘেষা ৬ নং কাশিপুর ইউনিয়নে গংগাহাট বাজার, আজোয়াটারী, কাশিয়াবাড়ী, বেড়াকুটি, অনন্তপুর, ধর্মপুর, বালাবাড়ীসহ উপজেলার বড়ভিটা,খরিবাড়ী,আমতলা,।

এই সব রুটে কুড়িগ্রাম, নাগেশ্বরী, রংপুর, কাউনিয়া, রাজারহাট ও লালমনিরহাট থেকে শতশত তরুন-যুবকসহ বিভিন্ন বয়সী মাদক সেবনকারীর ঢল নামে। ফুলবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রাজীব কুমার রায় জানান, জেলা পুলিশ সুপার স্যারের নিদের্শে আমাদের থানা পুলিশসহ বিভিন্ন আইন শৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা ফুলবাড়ী থানাকে মাদক মুক্ত করার জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম চালিয়ে যাচ্ছে।

প্রতিনিয়ত মাদক বিরোধী অভিযান চালিয়ে গত ১ বছরে মাদক ও চোরাচানের উপর ১৯১ টি মামলা ও বিপুল পরিমান মাদক দ্রব্য উদ্ধার এবং ২২৮ মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রতিদিনেই মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান চলছে চলবে। তিনি আরও জানান, স্থানীয় সচেতনমহল ও জনপ্রতিনিধিরা পুলিশসহ আইন শৃংখলা বাহিনীকে সহযোগিতা করলে চোরাচালানের বিরুদ্ধে ও মাদক সেবনকারী এবং মাদক ব্যবসায়ী একে বারে নির্মূল করা সম্ভব।

এ প্রসঙ্গে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) লালমনিরহাট ১৫ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে.কর্নেল এস এম তৌহিদুল-আলম জানান, সীমান্তে রাত-দিন ২৪ ঘন্টা আমাদের বিজিবি’র সদস্যরা সর্তক অবস্থান থেকে ডিউটি পালন করছে। তবে কিছু অসাধু চোরাকারবারী তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।

বিজিবিসহ বিভিন্ন আইন শৃংখলা বাহিনীকে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, সুশীল সমাজ, মসজিদের ইমামসহ সব ধরনের জনসাধারণ সহযোগীতা করলে সীমান্তে চোরাচানানসহ বিভিন্ন অপরাধ মূলক কর্মকান্ড নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে।

Advertisement

এস মুন্নী

জাতীয়

ড. ওয়াজেদ মিয়া ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে অনুপ্রেরণার উৎস

Published

on

বিশিষ্ট পরমাণু বিজ্ঞানী ড. ওয়াজেদ মিয়া তার কর্মের জন্য ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে অনুপ্রেরণার উৎস হিসেবে বেঁচে থাকবেন। বললেন রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন।

বৃহস্পতিবার (৯ মে) ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়ার পঞ্চদশ মৃত্যুবার্ষিকী। এ উপলক্ষ্যে দেয়া বাণীতে রাষ্ট্রপতি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, ড. ওয়াজেদ মিয়া ১৯৪২ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি রংপুরের পীরগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর ডাক নাম ছিলো সুধা মিয়া। অসাধারণ মেধার অধিকারী সুধা মিয়া শৈশব থেকেই ছিলেন শিক্ষানুরাগী, যার প্রতিফলন ঘটে তাঁর শিক্ষা ও কর্ম জীবনে। তিনি ছিলেন দেশে আণবিক গবেষণার পথিকৃৎ। পরমাণু গবেষণায় তিনি উল্লেখযোগ্য অবদান রেখে গেছেন এবং বাংলাদেশ আণবিক শক্তি কমিশনের চেয়ারম্যানসহ বিভিন্ন পদে দক্ষতা ও সাফল্যের সাথে দায়িত্ব পালন করেছেন। তাঁর গবেষণা কর্মের পরিধি ছিলো অত্যন্ত ব্যাপক। তিনি ফান্ডামেন্টাল ইন্টার‌্যাকশন এন্ড পার্টিকেল ফিজিক্স, নিউক্লিয়ার এন্ড রিঅ্যাকটর ফিজিক্স, সলিড স্ট্যাট ফিজিক্স প্রভৃতি ক্ষেত্রে গবেষণা করেন।

মোঃ সাহাবুদ্দিন উল্লেখ করেন, ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া বাংলাদেশ আণবিক শক্তি বিজ্ঞানী সংঘের দু’বার সাধারণ সম্পাদক ও পাঁচবার সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া তিনি বাংলাদেশ পদার্থবিজ্ঞানী সমিতি, বাংলাদেশ বিজ্ঞান উন্নয়ন সমিতি, বাংলাদেশ বিজ্ঞানী ও বিজ্ঞানজীবী সমিতিসহ বিভিন্ন সংগঠনের সাথে যুক্ত ছিলেন। ১৯৯৭ সালে তারই পরামর্শ ও পৃষ্ঠপোষকতায় জাতীয় সমন্বিত উন্নয়ন ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠিত হয়। ড. ওয়াজেদ মিয়া তাঁর কর্মের জন্য ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে অনুপ্রেরণার উৎস হিসেবে বেঁচে থাকবেন। বিজ্ঞানমনস্ক জাতি গঠনে ড. ওয়াজেদ মিয়ার আদর্শ নতুন প্রজন্মের জন্য পাথেয় হয়ে থাকবে।

রাষ্ট্রপতি আরও বলেন, ড. ওয়াজেদ মিয়া বিজ্ঞান গবেষণার পাশাপাশি জাতীয় রাজনীতিতে নীরবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে গেছেন। ষাটের দশকে তিনি ছাত্রলীগের সাথে সম্পৃক্ত হন। ১৯৬২ সালে আইয়ুব খানের সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে গিয়ে তিনি গ্রেপ্তার হন এবং কিছুদিন জেলে কাটান।

Advertisement

১৯৬৭ সালের ১৭ নভেম্বর জাতির পিতার জ্যেষ্ঠ কন্যা শেখ হাসিনার সঙ্গে তিনি বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধকালীন চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে তিনি বঙ্গবন্ধু পরিবারের পাশে থেকে তাদের সাহস ও শক্তি যুগিয়েছেন।
ক্ষমতার কাছে অবস্থান করলেও ড. ওয়াজেদ ছিলেন নির্লোভ, নির্মোহ ও নিভৃতচারী একজন সহজ-সরল মানুষ। এ কর্মবীর বিজ্ঞানী ২০০৯ সালের ৯ মে মৃত্যুবরণ করেন। রাষ্ট্রপতি তার রুহের মাগফেরাত কামনা করেন।

 

পুরো পরতিবেদনটি পড়ুন

জাতীয়

দেশবরেণ্য পরমাণু বিজ্ঞানী ওয়াজেদ মিয়ার মৃত্যুবার্ষিকী আজ

Published

on

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বামী ও দেশবরেণ্য পরমাণু বিজ্ঞানী ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়ার ১৫তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ বৃহস্পতিবার (৯ মে)।

বর্ণাঢ্য কর্মময় জীবনের অধিকারী বিজ্ঞানী ওয়াজেদ মিয়া ১৯৪২ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি লালদিঘীর ফতেহপুর গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ২০০৯ সালের ৯ মে ইন্তেকাল করেন।

ওয়াজেদ মিয়ার মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে রাজধানী ঢাকাসহ রংপুর মহানগরীতে, পীরগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন, ড. ওয়াজেদ মিয়ার পরিবার, উপজেলা আওয়ামী লীগ ও বিভিন্ন সংগঠন, ড. ওয়াজেদ স্মৃতি সংসদ ও ড. ওয়াজেদ ফাউন্ডেশান ফাতিহা পাঠ, কবর জিয়ারত, মিলাদ মাহফিল ও গরীবদের মাঝে খাবার বিতরণসহ নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। বৃহস্পতিবার সকালে ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়ার কবরে পুষ্পমাল্য অর্পণের মাধ্যমে কর্মসূচির আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জামাতা এম এ ওয়াজেদ মিয়া বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের চেয়ারম্যান ছিলেন। তিনি তার সমগ্র কর্মজীবনে মেধা, মনন ও সৃজনশীলতা দিয়ে দেশ, জাতি ও জনগণের কল্যাণে নিরলসভাবে কাজ করে গেছেন। পিতা মরহুম আব্দুল কাদের মিয়া ও মাতা মরহুমা ময়জুন নেসার চার পুত্র ও তিন কন্যার মধ্যে তিনি ছিলেন সর্ব-কনিষ্ঠ।

গ্রামের প্রাইমারি বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণি ও পীরগঞ্জ থানার হাইস্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত অধ্যয়ন শেষে তিনি ১৯৫২ সালে রংপুর শহরের সরকারি জেলা স্কুলে সপ্তম শ্রেণীতে ভর্তি হন। ১৯৫৬ সালে এই স্কুল থেকে ডিস্টিংশনসহ ম্যাট্রিকুলেশন পাস করেন।

Advertisement

১৯৫৮ সালে তিনি রাজশাহী সরকারি কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগে কৃতিত্বের সাথে উত্তীর্ণ হন। ১৯৬১ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের স্নাতক (সম্মান) পরীক্ষায় এবং ১৯৬২ সালে স্নাতকোত্তর পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণিতে কৃতিত্বের সাথে উত্তীর্ণ হন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালে তিনি ফজলুল হক হলের আবাসিক ছাত্র ছিলেন এবং ছাত্রলীগ মনোনীত প্রার্থী হিসেবে ১৯৬১-’৬২ শিক্ষা বছরের জন্য হল ছাত্র সংসদের সহ-সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৬২ সালে শিক্ষা কমিশন বিরোধী আন্দোলনে গ্রেপ্তার বরণ করেন। ১৯৬৩ সালের ১ এপ্রিল তিনি তৎকালীন পাকিস্তান আণবিক শক্তি কমিশনের চাকরিতে যোগ দেন। ১৯৬৩-’৬৪ শিক্ষা বছরে তিনি কৃতিত্বের সঙ্গে লন্ডনের ইম্পেরিয়াল কলেজের ‘ডিপ্লোমা অব ইম্পেরিয়াল কলেজ কোর্স’ সম্পন্ন করেন। ১৯৬৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে যুক্তরাজ্যের ‘ডারহাম বিশ্ববিদ্যালয়’ থেকে পদার্থ বিজ্ঞানে ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ করে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করলে, তাকে ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা হিসেবে ঢাকার আণবিক শক্তি গবেষণা কেন্দ্রে পদায়ন করা হয়।

আজন্ম সৎ, নির্লোভ ও নিখাদ দেশপ্রেমিক এই পরমাণু বিজ্ঞানী ১৯৬৭ সালের ১৭ নভেম্বর বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ কন্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বিবাহ-বন্ধনে আবদ্ধ হন। তাঁদের এক পুত্র ও এক কন্যা সন্তান রয়েছে।

১৯৬৯ সালে ইতালির ট্রিয়েস্টের আন্তর্জাতিক তাত্ত্বিক পদার্থ বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্র তাকে এসোসিয়েটশিপ প্রদান করে। তিনি ওই গবেষণা কেন্দ্রে গবেষণায় নিয়োজিত ছিলেন। ১৯৬৯ সালের নভেম্বর থেকে ১৯৭০ সালের অক্টোবর পর্যন্ত তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন শহরের ড্যারেসবেরি নিউক্লিয়ার ল্যাবরেটরিতে পোস্ট ডক্টোরাল গবেষণায় নিয়োজিত ছিলেন।

১৯৭৫ সালের ১২ মার্চ থেকে ২৪ আগস্ট পর্যন্ত তিনি তৎকালীন পশ্চিম জার্মানির কার্লসরবয়ে শহরের ‘আণবিক গবেষণা কেন্দ্রে’ আণবিক রিঅ্যাক্টর বিজ্ঞানে উচ্চতর প্রশিক্ষণ লাভ করেন। ১৯৭৫ সালের ১ অক্টোবর থেকে ১৯৮২ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তিনি ভারতের আণবিক শক্তি কমিশনের দিল্লির ল্যাবরেটরিতে গবেষণায় নিয়োজিত ছিলেন। তিনি অনেক জাতীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান বিষয়ক সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন। তাঁর অনেক গবেষণামূলক ও বিজ্ঞান বিষয়ক প্রবন্ধ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পত্রপত্রিকায় এবং সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছে।

Advertisement

বিশিষ্ট পরমাণু বিজ্ঞানী ড. ওয়াজেদ মিয়া ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নৃশংস হত্যাকান্ডের পর দীর্ঘ সাত বছর নির্বাসিত জীবন কাটান। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক স্তরের পদার্থ বিজ্ঞান, ফলিত পদার্থ বিজ্ঞান ও প্রকৌশলের ছাত্রদের জন্য দু’টি গ্রন্থ রচনা করেন।

তাঁর লেখা ৪৬৪ পৃষ্ঠার ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে ঘিরে কিছু ঘটনা ও বাংলাদেশ’ শিরোনামের গ্রন্থটি ১৯৯৩ সালের জানুয়ারিতে এবং ৩২০ পৃষ্ঠার ‘বাংলাদেশের রাজনীতি ও সরকারের চালচিত্র’ শিরোনামের গ্রন্থটি ১৯৯৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটিপ্রেস লিমিটেড  থেকে প্রকাশিত হয়।

১৯৭২ ও ১৯৭৩ সালের জন্য তিনি পর পর দু’বার বাংলাদেশ আণবিক শক্তি বিজ্ঞানী সংঘের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৮৩, ১৯৮৪ ও ১৯৮৫ সালে তিনি পর পর তিনবার ওই বিজ্ঞানী সংঘের সভাপতি নির্বাচিত হন।

১৯৮৫ থেকে ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত চার বছর তিনি বাংলাদেশ পদার্থ বিজ্ঞান সমিতির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ১৯৯৭ সালে দু’বছর মেয়াদের জন্য ওই বিজ্ঞান সমিতির সভাপতি নির্বাচিত হন। তিনি বিজ্ঞান সমিতির আজীবন সদস্য ছিলেন। ১৯৮৯ সালে দ’ুবছর মেয়াদের জন্য ওই বিজ্ঞান সমিতির সভাপতি নির্বাচিত হন।

ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া ১৯৮৯ থেকে ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত পরপর দু’টি দু’বছর মেয়াদকালের জন্য বাংলাদেশ বিজ্ঞান উন্নয়ন সমিতির জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি এবং ১৯৯৪ সাল থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত তিনি পর পর দুই দু’বছর মেয়াদকালের জন্য ওই বিজ্ঞান সমিতির সভাপতি নির্বাচিত হন।

Advertisement

এ ছাড়া তিনি ওই সমিতির একজন আজীবন সদস্য। ১৯৯১-১৯৯২ সালে তিনি বাংলাদেশ আণবিক শক্তি বিজ্ঞানী সংঘের সভাপতি নির্বাচিত হন। এছাড়া ১৯৮৯ সাল থেকে ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত পরপর তিনবার দু’বছর মেয়াদকালের জন্য তিনি ‘বাংলাদেশ বিজ্ঞানী ও বিজ্ঞানজীবী সমিতি’র সভাপতি নির্বাচিত হন এবং তিনি ওই সমিতির একজন আজীবন সদস্য। তিনি ঢাকার রংপুর জেলা সমিতির আজীবন সদস্য এবং ১৯৯৪ থেকে ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত দু’বছর মেয়াদকালের জন্য এই সমিতির সভাপতি নির্বাচিত হন। তিনি বাংলাদেশ জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের উপদেষ্টা এবং ঢাকার বৃহত্তম রংপুর কল্যাণ সমিতি, উত্তরবঙ্গ জনকল্যাণ সমিতি, রাজশাহী বিভাগীয় উন্নয়নফোরাম, বেগম রোকেয়া স্মৃতি সংসদ ও রংপুর জেলার মিঠাপুকুর থানার মির্জাপুর বছির উদ্দিন মহাবিদ্যালয়ের প্রধান উপদেষ্টা ছিলেন।

মৃত্যুর পর তাঁর শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী পীরগঞ্জ উপজেলার ফতেহপুর গ্রামে তাঁর বাবা-মায়ের কবরের পাশে তাঁকে দাফন করা হয়।

জেএইচ

পুরো পরতিবেদনটি পড়ুন

জাতীয়

হজযাত্রীদের আবেগ-অনুভূতিকে সম্মান দেখাবেন: ধর্মমন্ত্রী

Published

on

হজযাত্রা যাতে আরামদায়ক হয় এবং কোনোভাবে যাতে যাত্রীরা কষ্ট না পান, সে বিষয়টি খেয়াল রাখতে হবে। এছাড়া তাদের স্ন্যাক্স বা খাবারের দিকে বিশেষ যত্ন নিতে হবে। হজযাত্রীদের আবেগ-অনুভূতিকে সম্মান দেখাতে সেবা সংস্থাগুলোকে নির্দেশনা দিয়েছেন ধর্মমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান।

বৃহস্পতিবার (৯ মে) হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের হজ ফ্লাইটের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ নির্দেশনা দেন।

ধর্মমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশের অনেক হজযাত্রী আছেন যারা তিল তিল করে জমানো সঞ্চয় দিয়ে হজ করে থাকেন। তাদের আবেগ অনুভূতিকে সম্মান দেখাতে হবে। হজযাত্রীদের সন্তুষ্টি অর্জনের মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করা সম্ভব। এ কারণে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সসহ অন্যান্য এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানাবো আপনারা সর্বোচ্চ সেবা দেবেন। হজযাত্রীদের লাগেজ লোডিং-আনলোডিংয়ে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করবেন।

মো. ফরিদুল হক খান বলেন, বাংলাদেশ এবং সৌদি সরকারের যৌথ ব্যবস্থাপনায় হজের সাতটি কার্যক্রম সম্পাদিত হয়ে থাকে। আমরা উভয় দেশই পারস্পরিক যোগাযোগ এবং সমন্বয়ের মাধ্যমে এ কাজটি সফলভাবে সম্পন্ন করতে যাচ্ছি। হজের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব সংস্থা তাদের সর্বোত্তম সেবা দিতে বদ্ধপরিকর। আল্লাহর রহমতে এবার সেবায় কোনো সমস্যা হবে না। প্রত্যেকের প্রতি আমাদের দায়িত্ব আছে, যার যার আঙ্গিকে আমাদের দায়িত্ব পালন করতে হবে।

এ বছর বাংলাদেশ থেকে মোট ৮৬ হাজার ৫২৭ জন পবিত্র হজ পালনে যাবেন। এরমধ্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ৫০ শতাংশ হাজিদের পরিবহন করবে। বাকি যাত্রী পরিবহন করবে সৌদি এয়ারলাইন্স ও ফাইনান্স এয়ারলাইন্স। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১৬ জুন পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে।

Advertisement
পুরো পরতিবেদনটি পড়ুন

সর্বাধিক পঠিত

Exit mobile version