করোনা মহামারি রোধে আজ থেকে প্রথমবারের মতো পূর্ণাঙ্গ লকডাউনে যাচ্ছে তুরস্ক। ভাইরাসের সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার বেড়ে যাওয়ায় লকডাউনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে তুর্কি সরকার। আজ বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৭টা থেকে আগামী ১৭ মে পর্যন্ত লকডাউন ঘোষণা করেছে এরদোয়ান প্রশাসন।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, রাস্তায় মানুষের ভিড়, ক্রেতা সামলাতে ব্যস্ত বিপণিবিতানগুলো আর সড়কে যানবাহনের চাপ। কেউ ইস্তাম্বুল ছাড়তে ছুটছে প্রধান বাস টার্মিনালে। কেউ আবার মদে বিধিনিষেধের খবরে অ্যালকোহল মজুতের চেষ্টা করছে। করোনার মহামারিকালে প্রথমবারের মতো লকডাউন দেওয়ার প্রাক্কালে এমনটাই ছিল তুরস্কের চিত্রটা।
লকডাউনের আসন্ন দিনগুলো কীভাবে যাবে, কেমন হবে জীবনযাপন এখন আলোচনায় ব্যস্ত হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপগুলো। গেল বছর ঠিক এই সময়ে বৈশ্বিক মহামারির সময় দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে সফল হয়েছিল তুরস্ক। দেশটির উদ্যোগের প্রশংসাও করেছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। তবে তা এখন অতীত। এক বছর পর তুরস্ক এখন করোনায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর একটি। ইউরোপীয় দেশগুলোর মধ্যে করোনার সংক্রমণের হার সর্বাধিক তুরস্কে।
নতুন বিধিনিষেধে কী কী থাকছে?
লকডাউনের আওতায় কঠোরভাবে মানতে হবে স্টে অ্যাট হোম বিধিমালা। আবশ্যকীয় কেনাকাটা এবং স্বাস্থ্য সংক্রান্ত জরুরি পরিস্থিতি ছাড়া বাড়ির বাইরে যেতে পারবে না কেউ।
এক শহর থেকে অন্য শহরে যেতে হলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দেখাতে হবে যৌক্তিক কারণ।
বন্ধ থাকবে স্কুল। অনলাইনে চলবে পাঠদান। চলবে গণপরিবহণ। তবে বহন করতে হবে অর্ধেক যাত্রী।
সীমিত থাকবে অ্যালকোহল বিক্রি।
জরুরি চিকিৎসা সেবা, খাবার, পানি ও জ্বালানি সরবরাহের পাশাপাশি কয়েকটি ব্যবসায়কে দেওয়া হয়েছে বিশেষ ছাড়।
কিছু কিছু ব্যবসার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে না নতুন বিধিনিষেধ।
এদিকে, নতুন করে লকডাউন দেওয়ার সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়েছে অনেক বিশেষজ্ঞ। এই লকডাউনের দরকার আছে বলছে তারা। তবে, লকডাউনের বিরোধিতাও করছে কেউ কেউ। তারা বলছে, সংক্রমণ বাড়া প্রতিরোধে বেশিদিন টিকবে না লকডাউন। আর তাদের যুক্তি, দ্রুততার সঙ্গে টিকাকরণ কার্যক্রম চালানো না গেলে এই লকডাউন খুব বেশি কাজে আসবে না। পাশাপাশি, লকডাউন বা এ ধরনের যেকোনো পদক্ষেপ নিলে স্বল্প-আয়ের মানুষের জন্য আর্থিক সহায়তার ব্যবস্থা থাকা উচিত বলে মনে করে তারা।
এসএন
