ফুটবল
বিদায় কিংবদন্তি
৭২ বছর আগেরকার কথা। ১৯৫০ সালে ঘরের মাঠের বিশ্বকাপ ফাইনালে উরুগুয়ের মুখোমুখি ব্রাজিল। ফেভারিট হিসেবে শিরোপার মঞ্চে আসা সেলেসাওরা ৪৭ মিনিটে লিড নেয়। কিন্তু ৩২ মিনিটের ব্যবধানে মারাকানার ১ লাখ ৭৩ হাজার দর্শককে স্তব্ধ করে এগিয়ে যায় উরুগুয়ে। ভাগ্যের কাছে আরও একবার পরাজিত ব্রাজিল!
বিশ্বকাপের প্রথম আসর থেকেই ফেভারিট হিসেবে খেলে আসা দলটির এই হারটা কোনোমতেই মানতে পারছিলেন না ব্রাজিলিয়ানরা। রিও ডি জেনিরোর প্রতিটি কোণায় কোণায় তখন নেমে আসে শোকের ছায়া। হারের ধাক্কাটা ব্রাজিলিয়ানদের কাছে কেমন ছিল সেটা বোঝা যায় তখনকার এক সাংবাদিকের বর্ণনায়, শহরের প্রতিটি ঘরের জানালা বন্ধ ছিল। রাস্তা দিয়ে হাঁটলে চাপা কান্নার আওয়াজ শোনা যেত। মনে হচ্ছিল, প্রত্যেক ব্রাজিলিয়ান তাদের সবচেয়ে কাছের মানুষটিকে হারিয়েছে। অনেকেই ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করেছেন, ফুটবলের ইতিহাসে ১৬ জুলাই যেন আর কখনোই ফিরে না আসে।
হারের ধাক্কাটা কোনোমতেই নিতে পারছিলেন না দোনদিনিয়ো। ঘরের কোণে ঝোলানো যিশু খ্রিস্টের ছবির দিকে তাকিয়ে কাঁদতে কাঁদতে বলছিলেন, হায় ইশ্বর, কেন আমাদের এই শাস্তি দিলে!
বাবার দুঃখটা সেদিন খুব ছুঁয়ে গিয়েছিল দোনদিনিয়ের ৯ বছর বয়সী ছেলেকে। কিন্তু ৯ বছর বয়সী কিশোর ফুটবল বিশ্বকাপের আর কিই বা বোঝে? তবু বাবাকে সেদিন বড় মুখ করে প্রতিশ্রুতি দেয়, ‘কেঁদো না বাবা! তোমার জন্য আমি ওই বিশ্বকাপ নিয়ে আসব একদিন।’
কথা রেখেছিলেন দোনদিনিয়ের ছেলে এডসন আরান্তেস দো নাসিমেন্তো। বাবা ও দেশবাসীর স্বপ্ন পূরণে সময় নিয়েছেন মাত্র ৮ বছর। মাত্র ১৭ বছর বয়সে দেশকে প্রথমবারের মতো বিশ্বজয়ের স্বাদ পাইয়ে দিয়ে হয়েছেন অমর। বিশ্ববাসীর ভালোবাসা জিতে হয়েছেন সবার প্রিয় ‘পেলে’।
১৯৪০ সালের ২৩ অক্টোবর ব্রাজিলের ত্রেস কোরাকোয়েস শহরের এক বস্তিতে জন্ম হয় পেলের।
দরিদ্র পরিবারের প্রথম সন্তান হিসেবে অভাব অনটনটা বেশ ভালোভাবেই অনুভব করতে হয়েছে ছোটবেলা থেকে। আর তাই অভাব মেটাতে কৈশোর থেকেই কাজ শুরু করেন চায়ের দোকানে। এখানেই শেষ নয় রেলস্টেশনে ঝাড়ু দেয়া কিংবা জুতা পরিষ্কার করা, এসব কাজও তাকে করতে হয়েছে ছোটবেলাতেই।
ফুটবল প্রতিভাটা শৈশব থেকেই তার মধ্যে ছিল। তবে অভাবের কারণে তখন ফুটবল দিয়ে খেলতে পারতেন না, বন্ধুদের সঙ্গে পেলেকে খেলতে হত মোজার ভেতরে কাগজ ঠেসে বানানো ফুটবলে। কিন্তু প্রতিভা থাকলে যে শত প্রতিকূলতাকে পেছনে ফেলা যায় সেটারই জ্বলজ্যান্ত উদাহরণ হলেন পেলে। গলির ফুটবলে আলো কেড়ে নজরে চলে আসতে খুব বেশি সময় লাগেনি তার। ১৫ বছর বয়সেই সান্তোসের তৎকালীন তারকা ওয়ালদেমার ডি ব্রিতোর নজরে পড়েন ফুটবল জাদুকর। ফুটবলের পেলের যাত্রা শুরু সেখান থেকেই।
১৫ বছরের কিশোরকে ব্রাজিলের নামকরা ক্লাবে সান্তোসে নিয়ে যান ব্রিতো। তাকে সুযোগ করে দেন সান্তোসের বি টিমে খেলার। জাত চেনাতে সময় লাগেনি পেলের। এক বছরের ব্যবধানে জায়গা করে নেন ক্লাবটির মূল দলে।
সান্তোসে জায়গা করেই চমক দেখান পেলে। ১৬ বছর বয়সী কিশোর নিজের অভিষেক টুর্নামেন্টে হন সর্বোচ্চ গোলদাতা। নজরকাড়া এই পারফরম্যান্স মনে ধরে যায় সবার। এমনকি দেশের সরকারেরও নজর এড়ায়নি এ পারফরম্যান্স। পেলের এই পারফরম্যান্স সরকারের কাছে অমূল্য হিসেবে বিবেচিত হলো। তাই আইন করে পেলেকে ব্রাজিলের জাতীয় সম্পদ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছিল তখনই!
পেলের এমন অতিমানবীয় পারফরম্যান্সের গল্প খুব দ্রুতই প্রচার হয়ে যায় বিশ্বব্যাপী। ইউরোপিয়ান নামিদামি ক্লাবগুলোর তখন তাকে পাওয়ার জন্য রীতিমতো লড়াইয়ে লেগে যাবার মতো অবস্থা। কিন্তু সবাইকে চমকে দিয়ে পেলে থেকে গেলেন নিজ দেশেই। সরকারের অনুরোধ মেনে নিয়ে হাসিমুখেই খেলতে থাকলেন নিজ দেশের লিগে।
ফলাফলটা এসেছে দ্রুতই। ১৯৫৭ সালে মাত্র ১৬ বছর বয়সে জাতীয় দলে সুযোগ পেয়ে যান পেলে। প্রথম ম্যাচ চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আর্জেন্টিনার বিপক্ষে। অভিষেক ম্যাচটা ব্রাজিলের হয়ে জিততে পারেননি মহাতারকা, তবে রেকর্ড ঠিকই নিজের করে নিয়েছিলেন। আন্তর্জাতিক ফুটবলে ১৬ বছর ৯ মাসে গোল করে সর্বকনিষ্ঠ গোলদাতার রেকর্ডটা নিজের করে নিয়েছিলেন।
ব্রাজিলের জার্সিতে মোট ১৪ বছর খেলেছেন পেলে। তাতে অসংখ্য অ্যাসিস্টের পাশাপাশি ৭৭টি গোল করে নিজের ক্যারিয়ারের ইতি টেনেছিলেন। দীর্ঘ ৫০ বছরেরও বেশি সময় পর পেলের সেই গোলের রেকর্ড ভেঙেছেন হালের তারকা নেইমার। অর্জনটা যে কতোটা বড় সেটা এই পরিসংখ্যান দেখেই খানিকটা আন্দাজ করা যেতে পারে।
১৯৫৮ সালে বিশ্বকাপের অন্যতম ফেভারিট ছিল ব্রাজিল। সেসময়ের জিতো, গারিঞ্চা, দিদি, ভাভাদের দিয়ে সাজানো তারকাবহুল দলে ১৭ বছর বয়সী পেলের জায়গা পাওয়াটাই ছিল বিরাট চমক। তাই শুরুতে সাইডবেঞ্চে কাটাতে হয় ফুটবলের কালো মানিককে। কিন্তু সোভিয়েত ইউনিয়নের বিপক্ষে গ্রুপ পর্বের ম্যাচে মাজ্জেলার ইনজুরির কারণে মাঠে নামানো হয় পেলেকে। সে ম্যাচে কোনো গোল না পেলেও এক অ্যাসিস্টে কোচের ভরসা জেতেন মহাতারকা।
এরপর আবার কোয়ার্টারে সুযোগ মেলে তার। সে ম্যাচে রেকর্ডগড়া গোল এল তার পা থেকে। বিশ্বকাপে সর্বকনিষ্ঠ গোলদাতার একমাত্র গোলে সেমির মঞ্চে ব্রাজিল। গোল পাওয়ার পরই যেন পুরো মোড় ঘুরে গেল পেলের ক্যারিয়ারে। এরপর তিনি হয়ে উঠলেন অদম্য, অপ্রতিরোধ্য।
সেমিফাইনালে ফ্রান্সের বিপক্ষে হ্যাটট্রিক ১৭ বছর বয়সী পেলের। বিশ্বকাপের ইতিহাসে তখন সর্বকনিষ্ঠ হ্যাটট্রিকম্যান বনে গেলেন তো বটেই, ছড়ালেন বিস্ময়ও। এখানেই থামেননি পেলে, ১৭ বছর বয়সী তরুণ ফাইনালেও দুই গোল করে ব্রাজিলকে জেতালেন বিশ্বসেরার শিরোপা। রাখলেন বাবাকে দেয়া তার সেই প্রতিশ্রুতি। স্বাভাবিকভাবেই সে বিশ্বকাপের সিলভার বল ও সিলভার বুট দুটো পুরষ্কার জেতেন পেলে। তবে যে নাম এবং সম্মান তিনি জিতেছিলেন, সেটা কোনো পুরষ্কারে পরিমাপ করা সম্ভব নয়।
ইনজুরির কারণে ১৯৬২ সালের বিশ্বকাপটা তেমন ভালো কাটেনি পেলের। তৎকালীন সেরা খেলোয়াড় হিসেবে বিশ্বকাপ শুরু করে প্রথম ম্যাচটা খেলেছিলেন সেরার মতোই। চিলির বিপক্ষে ম্যাচে এক গোল ও এক অ্যাসিস্ট। তবে পরের ম্যাচেই চেকশ্লোভাকিয়ার বিপক্ষে খেলতে নেমে ইনজুরিতে তিনি। এরপর খেলতে পারেননি টুর্নামেন্টের আর একটি ম্যাচেও। তবু পেলের দেখানো পথেই আবারও বিশ্বকাপটা নিজেদের করে নেয় ব্রাজিল।
১৯৬৬ সালের বিশ্বকাপেও ইনজুরির থাবা। প্রথম ম্যাচে বুলগেরিয়ার বিপক্ষে গোল পাওয়ার পর ইনজুরিতে পড়েন মহাতারকা। নামতে পারেননি পরের ম্যাচে। পর্তুগালের বিপক্ষে গ্রুপের শেষ ম্যাচে দলের প্রয়োজনে ইঞ্জুরড পেলেকে নামানো হলে অসংখ্য ফাউলের শিকার হন তিনি। ব্রাজিল হেরে গিয়ে গ্রুপ পর্ব থেকেই বাদ পড়ে যায়। রাগে ক্ষোভে জাতীয় দল থেকে অবসরের ঘোষণাও দিয়ে ফেলেন পেলে। কিন্তু এখানেই যে ‘হ্যাপি এন্ডিং’ না সেটা জানা যায় তিন বছর পর।
জাতীয় দলে কিছুটা বিরতি দিয়ে ১৯৬৯ সালে আবার দেশের হয়ে খেলতে নামেন পেলে। বাছাইপর্বের ৬ ম্যাচে করেন ৬ গোল। এরপরই এসে পড়ে পেলের শেষ বিশ্বকাপ। ১৯৭০ সালের বিশ্বকাপে পেলেকে খেলানো হয় প্লে মেকার হিসেবে। এ কারণে তার পা থেকে আসে চারটা গোল। তবে নিজে খুব বেশি গোল না করলেও গোল করিয়েছেন ৭টা। তাতে টুর্নামেন্টের সেরা পুরষ্কারটা নিজের করে নেয়ার পাশাপাশি দেশের হয়ে জিতে ফেলেন তৃতীয় বিশ্বকাপ ট্রফি। জুলে রিমে ট্রফি হয়ে যায় আজীবনের জন্য ব্রাজিলের।
মাত্র ২৯ বছরে তিনটা বিশ্বকাপের মালিক হন পেলে। বিশ্বকাপের ৯২ বছরের ইতিহাসে এখন পর্যন্ত এ রেকর্ড ভাঙতে পারেনি বিশ্বের কোনো ফুটবলার। নিকট অতীতেও তা সম্ভব কিনা সেটা নিয়েও আছে সন্দেহ!
ফুটবলটা যেন তার কাছে শিল্পীর রঙ তুলির মতো। এই বল দিয়েই পুরো ক্যারিয়ারটা শিল্প কর্ম করে গেছেন ব্রাজিলিয়ান নাসিমেন্তো। ২০০০ সালে আইএফএফএইচএস (International Federation of Football History & Statistics) এর তত্ত্বাবধানে সাবেক খেলোয়াড় আর সাংবাদিকদের ভোটে বিংশ শতাব্দীর সেরা খেলোয়াড় নির্বাচন করা হয়। তাতে ১৭০৫ ভোট পেয়ে সেরা হন পেলে, দ্বিতীয় হওয়া ইয়োহান ক্রুইফের সঙ্গে তার ব্যবধানটা ছিল ৪০২ ভোটের।
ফুটবল ইতিহাসে বিশ্বের সেরা খেলোয়াড় কে, এটা নিয়ে আছে বিভিন্ন তর্ক বিতর্ক। তবে বিশ্বকাপের ইতিহাসে যে পেলেই সেরা এটা মানেন সবাই। কারণ মাত্র ২৯ বছরে বিশ্বকাপের চার আসর খেলে চারটাতেই গোল করা এবং তিনটিতে শিরোপা ছিনিয়ে নেয়া বিশ্বকাপের ইতিহাসেই বিরল এক ঘটনা হয়ে থাকবে শতাব্দীর পর শতাব্দী।
ফুটবলে পেলের অবদান একটা ঘটনা থেকে সহজেই জানা যায়। পেলের সময়কালে ইউরোপিয়ান নন এমন খেলোয়াড়দের ব্যালন ডি অর পুরষ্কার দেয়া হতো না। তবে ২০১৬ সালে অদ্ভুত এক কান্ড করে বসে পুরষ্কার কমিটি। ১৯৯৫ সালের আগ পর্যন্ত ইউরোপের বাইরের খেলোয়াড়দের বিবেচনায় এনে পুরষ্কারের একটি তালিকা করে ব্যালন ডি অর কমিটি। সেখানে ১৯৫৮ থেকে ১৯৭০ পর্যন্ত মোট ৭ বার ব্যালন বিজয়ী ঘোষণা করা হয় পেলেকে, যা এখন পর্যন্ত ফুটবল ইতিহাসের সর্বোচ্চ ব্যালন ডি অর জয়ী লিওনেল মেসির সমান।
মাঠের ফুটবলে পেলে যেমন দ্যুতি ছড়িয়েছেন, মাঠের বাইরেও তার আলো পেয়েছে গোটা বিশ্ব। ১৯৬৭ সালে নাইজেরিয়ায় গৃহযুদ্ধ থামিয়ে দিয়েছিলেন ফুটবলের এই কিংবদন্তি। সেসময় শুধু পেলেকে দেখার জন্য ৪৮ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছিল গৃহযুদ্ধে জড়িত দলগুলো। ফুটবলের বাইরে টিভির পর্দাতেও ছিলেন পেলে। বিভিন্ন টিভি অনুষ্ঠানে নিয়মিতভাবে অতিথি হওয়ার পাশাপাশি সিনেমা ও টেলিভিশন ধারাবাহিকেও কাজ করেছেন তিনি। হলিউডের সিনেমা এসকেপ টু ভিক্টোরিতে এক যুদ্ধবন্দীর চরিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি।
মানুষ পেলেও যেন ছিলেন সবার আপন। অভাব অনটনে বড় হওয়া পেলে খেলোয়াড় থাকা অবস্থায়ই দরিদ্র শিশুদের জন্য গড়েন ফাউন্ডেশন। এরপর ইউনিসেফ ও জাতিসংঘের দূতও হয়েছেন তিনি। পেলেকে সম্মান জানাতে ২০০১ সালে ব্রাজিল ফুটবলে দুর্নীতির বিচার করতে পেলে ল নামে একটি আইন চালু হয়। ১৯৯৯ সালে নিউ ইয়র্কের টাইম ম্যাগাজিন প্রকাশিত বিংশ শতাব্দীর সেরা ১০০ জন মানুষের তালিকায় ছিলেন পেলে।
জীবনের সবটুকু নির্যাস উপভোগ করে শেষ বয়সে এসে ক্যান্সারে আক্রান্ত হন পেলে। তবে মরণব্যধির সঙ্গেও লড়াইটা কম করেননি। অবশেষে হার মানলেন ২০২২ সালের ৩০ ডিসেম্বর। তবে পেলে ধরার মায়া ত্যাগ করলেও ‘মৃত্যু’ হয়নি তার।
কারণ ভক্তদের হৃদয়ে তো অনেক আগেই অমরত্ব গড়ে নিয়েছেন তিনি। আর শতাব্দীর পর শতাব্দী মনে রাখার মতো অর্জন কুড়িয়ে নেয়া এমন তারকাদের কি কখনো মৃত্যু হয়? তাই পেলে না থেকেও ধরার বুকে থাকবেন চিরকাল।
ফুটবল
ম্যানসিটির সাথে আর্সেনালের পার্থক্য দেখালেন রদ্রি
প্রিমিয়ার লিগের শিরোপা জিতেছে ম্যানচেস্টার সিটি। টানা ৪ বারের মতো এই অর্জন নিজেদের করে নিলো ইতিহাদের সৈন্যরা। পেপ গার্দিওয়ালার জন্যেও সময়টা অনেক বেশি আনন্দের। এদিকে ম্যানসিটি মিডফিল্ডার রদ্রিগো হার্নান্দেজ কথা বলেছেন আর্সেনালকে নিয়ে। তিনি মনে করেন, আর্সেনালের সাথে মানসিকতার পার্থক্য ছিলো তার দলের।
জিততে গেলে মানসিকভাবে শক্ত হওয়া খুব জরুরি। এটা ঠিক শক্ত না বলে, জয়ের প্রতি দারুণ আকাঙ্ক্ষা থাকা বলা ভালো। যেখানে আর্সেনাল ব্যর্থ হয়েছে বলে মত রদ্রির।
রবিবার (১৯ মে) রাতের ম্যাচে ওয়েস্ট হ্যামের সাথে ৩-১ গোলে জিতেছে সিটি। তাতে আর কোনোদিকে তাকাতে হয়নি তাদের। শিরোপা নিশ্চিত হয়ে গেছে তখনই। অন্যদিকে আর্সেনাল জিতেছিল ২-১ গোলে এভারটনের বিপক্ষে, কিন্তু তাতে কাঙ্ক্ষিত জায়গায় পৌঁছানো হয়নি তাদের।
এই কাঙ্ক্ষিত জায়গায় পৌঁছানোর জন্য কী করতে হয়? ‘অপটাস স্পোর্টস’ এর সাথে আলাপ করতে গিয়ে সিটি মিডফিল্ডার রদ্রি জানান, “সত্যি বলতে আমি মনে করি, এটা এখানে আছে (নিজের মাথায় ইঙ্গিত করেন)। এটা মানসিকতা। লিগ-জুড়ে অনেক ‘গ্রেট’ খেলোয়াড় আছে, সব ক্লাবেই আছে। আর্সেনালও যোগ্য ছিল। তারা এক অবিশ্বাস্য মৌসুম কাটিয়েছে। কিন্তু আমি মনে করি পার্থক্যটা ছিল এখানে (আবারও মাথায় দেখান)।
এই মিডফিল্ডার আরও যোগ করেন, “তারা যখন ইতিহাদে আসলো, আমি তাদের দেখলাম এবং বললাম; আহ! এই লোকেরা, তারা আমাদের হারাতে চায় না। তারা শুধু একটা ড্র চায়। আর এই মানসিকতা, আমার মনে হয় না আমরা এটা একইভাবে করতাম। এবং আমরা তাদের ধরে ফেললাম।”
যেকোনো খেলায় মানসিকতা অনেক বড় ভূমিকা রাখে। চিন্তাভাবনায় জয়ের আকাঙ্ক্ষা না থাকলে, দিন নিজেদের করা কঠিন হয়ে যায়। রদ্রি হয়তো সাহসিকতার সাথে সেই মানসিকতার পার্থক্য বড় করে দেখালেন শিরোপা উৎসবের পর।
এম/এইচ
ফুটবল
ব্রাজিল দল থেকে ছিটকে গেলেন এডারসন, যুক্ত হলেন নতুন চারজন
টটেনহামের বিপক্ষে চোখের চোটের পড়ে কোপা আমেরিকার জন্য ব্রাজিল দল থেকে ছিটকে গেছেন ম্যানচেস্টার সিটির গোলরক্ষক এডারসন। তার জায়গায় ব্রাজিল কোচ দরিভাল জুনিয়র কোপা আমেরিকার দলে নিয়েছেন সাও পাওলোর গোলরক্ষক রাফায়েলকে।
দক্ষিণ আমেরিকান ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা কনমেবল কোপা আমেরিকার জন্য ২৬ জনের স্কোয়াড গড়ার বিষয়টি অনুমোদন দিয়েছে। এর আগে ব্রাজিলের কোচ কোপা আমেরিকার জন্য ২৩ জনের দল ঘোষণা করায় এডারসনের পরিবর্তন ছাড়াও দলে আরও তিন ফুটবলার যুক্ত হয়েছেন।
তারা হলেন জুভেন্টাসের ডিফেন্ডার ব্রেমের, আতালান্তার মিডফিল্ডার এদেরসন ও পোর্তোর ফরোয়ার্ড পেপে। এদেরসন চোট পেয়েছিলেন গত সপ্তাহে।
কোপা আমেরিকার আগে ৯ ও ১৩ জুন যথাক্রমে মেক্সিকো ও যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে দুটি আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচ খেলবে ব্রাজিল। মহাদেশীয় প্রতিযোগিতাটিতে ব্রাজিলের অভিযান শুরু হবে ২৪ জুন কোস্টারিকার বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে। গ্রুপ ‘ডি’তে ব্রাজিলের অপর দুই প্রতিপক্ষ কলম্বিয়া ও প্যারাগুয়ে।
কোপা আমেরিকার ব্রাজিল দল
গোলকিপার: আলিসন, রাফায়েল, বেন্তো।
ডিফেন্ডার: বেরালদো, এদের মিলিতাও, গ্যাব্রিয়েল, মারকিনিওস, দানিলো, ইয়ান কৌতো, গিলের্মে আরানাল, ওয়েন্দেল, ব্রেমের।
মিডফিল্ডার: আন্দ্রেয়াস পেরেইরা, ব্রুনো গিমারেজ, দগলাজ লুইজ, হোয়াও গোমেজ, লুকাস পাকেতা, এদেরসন।
ফরোয়ার্ড: এনদ্রিক, ইভানিলসন, গ্যাব্রিয়েল মার্তিনেল্লি, রাফিনিয়া, রদ্রিগো, সাভিনিও, ভিনিসিয়ুস জুনিয়র, পেপে।
ফুটবল
কিংবদন্তিদের তালিকায় আর্লিং হালান্ড
কিংবদন্তিদের তালিকায় জায়গা করে নিয়েছেন নরওয়েজীয় স্ট্রাইকার আর্লিং হালান্ড। মৌসুমের শুরু থেকেই দারুণ কিছু করার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন ম্যানচেস্টার সিটির এ তারকা। একের পর এক গোল করে যাচ্ছিলেন নরওয়েজিয়ান এই তরুণ ফুটবলার। পুরো মৌসুম জুড়ে দারুণ খেলার স্বীকৃতিও অবশেষে পেয়ে গেছেন হালান্ড। ২৭ গোল করে টানা দ্বিতীয়বারের মতো প্রিমিয়ার লিগ ফুটবলে গোল্ডেন বুট জিতেছেন তিনি। ম্যানচেস্টার সিটিতে এসে ‘গোলমেশিন’ তকমা জুড়ে গেছে আর্লিং হালান্ডের সঙ্গে।
নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী চেলসির কোল পালমারকে পেছনে এই পুরস্কার জিতে নেন হালান্ড। সদ্য সমাপ্ত প্রিমিয়ার লিগ মৌসুমে ২২ গোল করেছেন পালমার। সে হিসেবে এই ইংলিশ তারকা থেকে ৫ গোল বেশি করেছেন হালান্ড।
গতকাল মৌসুমের শেষ ম্যাচে ওয়েস্টহ্যাম ইউনাইটেডকে হারিয়ে টানা চতুর্থবারের মতো প্রিমিয়ার লিগের শিরোপা নিশ্চিত করেছে সিটি। অপরদিকে এভারটনের বিপক্ষে জয় পেলেও তা কোনো কাজে আসেনি আর্সেনালের। তাদের থেকে ২ পয়েন্ট বেশি নিয়ে শিরোপা ঘরে তুলেছে সিটি।
শুধু অর্জন নয়, মৌসুম জুড়ে নানা সমালোচনার মুখেও পড়েছিলেন হালান্ড। বিশেষ করে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের সাবেক অধিনায়ক রয় কেন তাকে ‘দ্বিতীয় শ্রেণির লিগ খেলোয়াড়’ বলে উল্লেখ করেছেন।
তবে কেনের সমালোচনার জবাব দিয়েছেন সিটি কোচ পেপ গার্দিওলা। হালান্ড বিশ্বের সেরা স্ট্রাইকার বলে দাবি করেছেন তিনি।
প্রিমিয়ার লিগে টানা গোল্ডেন বুট পাওয়া খেলোয়াড়
দল মৌসুম
অ্যালান শিয়ারার ব্ল্যাকবার্ন রোভার্স, নিউক্যাসল ইউনাইটেড ১৯৯৪-৯৫, ১৯৯৫-৯৬, ১৯৯৬-৯৭
মাইকেল ওয়েন লিভারপুল ১৯৯৭-৯৮, ১৯৯৮-৯৯
থিয়েরি অঁরি আর্সেনাল ২০০৩-০৪, ২০০৪-০৫, ২০০৫-০৬
রবিন ফন পার্সি আর্সেনাল, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ২০১১-১২, ২০১২-১৩
মোহাম্মদ সালাহ লিভারপুল ২০১৫-১৬, ২০১৬-১৭
হ্যারি কেইন টটেনহাম ২০১৭-১৮, ২০১৮-২০১৯
আর্লিং হালান্ড ম্যানচেস্টার সিটি ২০২২-২৩, ২০২৩-২৪
-
আইন-বিচার6 days ago
৫ ইলেক্ট্রোলাইট ড্রিংকস কোম্পানির মালিকের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি
-
ক্রিকেট5 days ago
যে বোলারকে খেলতে সবচেয়ে কঠিন লাগতো রোহিতের
-
টুকিটাকি6 days ago
চলন্ত বাইকেই রোম্যান্সে মত্ত প্রেমিক-প্রেমিকা!
-
জাতীয়5 days ago
ঢাকার ২ সিটিতে ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধের নির্দেশ
-
অপরাধ6 days ago
অনলাইনে পাকিস্তানি ড্রেস দেখায়, ডেলিভারি দেয় দেশি ড্রেস
-
বলিউড3 days ago
জরায়ুতে কত বড় টিউমার ধরা পড়েছে জানালেন রাখি
-
আইন-বিচার4 days ago
ইলেক্ট্রোলাইট ড্রিংকস এসএমসি প্লাসকে ১৬ লাখ টাকা জরিমানা
-
আইন-বিচার4 days ago
তনির কাছে পাকিস্তানি ড্রেস বিক্রি করেনি লাখানি কালেকশন
মন্তব্য করতে লগিন করুন লগিন