আর্কাইভ থেকে ইউরোপ

আফগান শরণার্থীদের অনুপ্রবেশ ঠেকাতে তুর্কি সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার

আফগান শরণার্থীদের অনুপ্রবেশ ও আশ্রয়প্রার্থী অভিবাসীদের ঢল ঠেকাতে সীমান্ত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা শক্তিশালী করছে তুরস্ক। সম্প্রতি আফগানিস্তানে তালেবানের শক্তিবৃদ্ধির পর ইরান-সংলগ্ন সীমান্ত দিয়ে আফগানদের তুরস্কে প্রবেশে ঢল নেমেছে। বাড়ানো হয়েছে সীমান্তরক্ষী সংখ্যা। চলছে সাঁজোয়াযানের টহলও।

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম মিডল ইস্ট মনিটর জানায়, আফগানিস্তানে তালেবান শক্তিবৃদ্ধির পর আতঙ্কে দেশ ছাড়ছে শত শত মানুষ। জীবন বাঁচাতে ইরান হয়ে তুরস্কে আশ্রয় নিতে জড়ো হয়েছে পূর্বাঞ্চলীয় সীমান্ত এলাকা ভানে।

মানুষের ঢল ঠেকাতে তুরস্কের ভান প্রদেশে দেয়াল নির্মাণ করা হচ্ছে। নবনির্মিত সীমানা প্রাচীরের দেয়ালের প্রতিটি ব্লকের উচ্চতা তিন মিটার, প্রস্থ দুই মিটার এবং ওজন সাত টন করে। সীমানা প্রাচীরটি প্রায় ৩শ’ কিলোমিটার দীর্ঘ। ভান প্রদেশ থেকে শুরু করে আগরি প্রদেশের দগুবায়জিদ হয়ে বিস্তৃতি হাক্কারি প্রদেশের ইয়ুকসেকোভা পর্যন্ত ঠেকেছে।

সীমান্ত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা জোরদার করতে অতিরিক্ত প্রতিরোধক নির্মাণ করেছে তুরস্ক। প্রাচীর সহায়ক হিসেবে চারপাশে ১১০ কিলোমিটারের পরিখা থাকবে। পাশাপাশি সীমান্তে নজরদারির জন্য রয়েছে ১০৩টি ইলেক্ট্রো-অপটিক্যাল সার্ভেলেন্স টাওয়ার।

তুরস্কের ভান প্রদেশের গভর্নর এমিন বিলমেজ জানান, আফগানিস্তানের অভ্যন্তরীণ সমস্যার কারণে অবৈধ অভিবাসীদের চাপ আমাদের ওপর বড় ধরনের প্রভাব ফেলছে। যে সব অবৈধ অভিবাসী তুর্কি সীমান্তে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করছে তাদের প্রত্যাবাসনের জন্য ডিটেনশন সেন্টারে নেওয়া হচ্ছে।

ভান প্রদেশের জালদিরান জেলার গভর্নর ইউসুফ দুররানী দিঞ্জ বলেন, অবৈধ অভিবাসীদের অনুপ্রবেশ, সব ধরণের চোরাচালান বিশেষত সন্ত্রাসবাদ রোধে নবনির্মিত দেয়াল এবং অন্যান্য প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সীমান্তকে সুরক্ষিত করবে। এটি তুর্কি জনগণের শান্তি প্রতিষ্ঠায় সীমান্তের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।

তিনি আরো বলেন, আফগানিস্তানের অভ্যন্তরীণ সমস্যা এবং অন্যান্য দেশে অস্থিরতার ফলে অবৈধ অভিবাসীদের অনুপ্রবেশের চাপ তুরস্কেও দীর্ঘ সময় ধরে পড়ছে। যে সব অবৈধ অভিবাসী আমাদের সীমান্তে অনুপ্রবেশের চেষ্টা চালাচ্ছে দেশের বিচারিক ও প্রশাসনিক আইন অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। নিজ দেশে ফিরিয়ে দিতে তাদের প্রত্যাবাসন কেন্দ্রে পাঠানো নিশ্চিত করছি।

গেল সপ্তাহে শত শত আফগান অভিবাসী ও শরণার্থী ইরান হয়ে তুরস্কে প্রবেশ করেছে। তারা জানায়, আফগান সংকট এবং কাবুল সরকার নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকাগুলোতে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তালেবানের সংঘাত থেকে বাঁচতে পালিয়েছে তারা।

তুরস্কের সরকারি কর্মকর্তারা জানায়, ইতোমধ্যে আফগানিস্তান থেকে যাওয়া প্রায় দেড় হাজার অবৈধ অনুপ্রবেশকারীকে আটক করা হয়েছে। বাড়ানো হয়েছে সীমান্তরক্ষীর সংখ্যা। পুরো বিষয়টি দেখভাল করছে তুর্কি সামরিক বাহিনী।

যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তানে তালেবানরা এখন পরিপূর্ণ বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে থাকায় আরো বড় ধরণের আফগান শরণার্থী ও আশ্রয়প্রার্থী অভিবাসীদের ঢল নামার ইঙ্গিত পেয়েছে তুরস্ক। এজন্য সীমান্তে নিরাপত্তা বাড়াতে নতুন করে দেয়াল, পরিখা খনন ও সার্ভেলেন্স টাওয়ার স্থাপন করার কথা জানায় তুর্কি কর্মকর্তারা।

 

এসএন

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন