আর্কাইভ থেকে বাংলাদেশ

অবৈধ মোবাইল ফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন শুরু

আজ থেকে বন্ধ হচ্ছে অবৈধ মোবাইল ফোন। এর আগে ১ জুলাই থেকে পরীক্ষামূলকভাবে মোবাইল ফোন অবৈধ শনাক্ত হলেও তা নেটওয়ার্ক থেকে বিচ্ছিন্ন করা হয়নি। তাই এখন থেকে হ্যান্ডসেট কেনার আগে গ্রাহককে যাচাই করে দেখার অনুরোধ জানিয়েছে বিটিআরসি।

এদিকে সঠিক কাগজপত্র না থাকা, ফিরতি বার্তা না পাওয়াসহ হ্যান্ডসেট নিবন্ধনে নানা ভোগান্তিতে পড়ছেন গ্রাহকরা। এ অবস্থায় পরীক্ষামূলক সময়সীমা বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন তারা।

দেশে নকল ও অবৈধ হ্যান্ডসেট আমদানি ঠেকাতে গত ১ জুলাই ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টার-এনইআইআর কার্যক্রম চালু করে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। এই ব্যবস্থা চালুর দিন থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত- অর্থাৎ তিন মাসের মধ্যে বিদেশ থেকে আনা স্মার্টফোন কিংবা অবৈধ হ্যান্ডসেট নিবন্ধনের নির্দেশনা দেয় বিটিআরসি। শুধু তাই নয়, নেটওয়ার্কে থাকা হ্যান্ডসেট কিংবা নতুন হ্যান্ডসেট কেনার আগে বৈধতা যাচাইয়ের পরামর্শ দেওয়া হয়।
 
কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী, নিবন্ধনের জন্য বিটিআরসির ওয়েবসাইটে গিয়ে অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে গ্রাহকদের। এরপর পাসপোর্ট, ভিসা ও কেনার রশিদ আপলোডের মাধ্যমে করা যাবে নিবন্ধন। ফোনটি সেট বৈধ কি না তা জানা যাবে এসএমএসের মাধ্যমে। তবে, নিবন্ধন প্রক্রিয়ায় ফিরতি বার্তা না আসা এমনকি অনলাইনে কাগজপত্র আপলোড করতে গিয়ে ভোগান্তিতে পড়ছেন গ্রাহকরা।
 
তারা বলেন, অনলাইনে আবেদন করার পর কোনো ফিরতি ম্যাসেজ আসেনি। এখন আমি বুঝব কীভাবে আমার রেজিস্ট্রেশন হয়েছে কি হয়নি?
 
কমিশন জানায়, এনইআইআর ব্যবস্থা চালুর পর দেশে প্রতিদিন এক লাখ ১০ হাজার নতুন মোবাইল হ্যান্ডসেট নিবন্ধন হয়েছে। যার মধ্যে প্রায় ১০ শতাংশই অবৈধ ও নকল হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। এ হিসাবে প্রতিদিন গ্রাহকের হাতে আসা ১১ হাজার অবৈধ ও নকল হ্যান্ডসেট চিহ্নিত হয়েছে। অবৈধ হ্যান্ডসেট নেটওয়ার্কে যুক্ত হওয়া মাত্র গ্রাহকের কাছে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বার্তা চলে যাচ্ছে তার সেটটি 'অবৈধ বা নকল'। তিন মাসের পরীক্ষামূলক সময় শেষে নিয়ন্ত্রক সংস্থা দাবি করছে, অপারেটরদের দেওয়া ৪৪ কোটি ৫৩ লাখ আইএমইআই নম্বরকে নিবন্ধন করা হয়েছে। এ অবস্থায় হ্যান্ডসেট বৈধ করতে পরীক্ষামূলক সময়সীমা আর নতুন করে বাড়াচ্ছে না বিটিআরসি।
 
তবে কমিশন বলছে, এখনো অবৈধ তালিকায় থাকায় হ্যান্ডসেটগুলো ১ জুলাইয়ের আগে থেকে নেটওয়ার্কে সচল থাকলে তা নিবন্ধিত হবে স্বয়ংক্রিয়ভাবে। ১ জুলাই থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নেটওয়ার্কে যুক্ত হওয়া অবৈধ হ্যান্ডসেটগুলোও প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে বৈধ করা যাবে। সেক্ষেত্রে দেওয়া হবে খুবই স্বল্প সময়। তবে ১ অক্টোবর থেকে নেটওয়ার্কে আসা অবৈধ হ্যান্ডসেট নিবন্ধনে সময় পাবে সর্বোচ্চ ১০দিন। অনলাইনে নিবন্ধন না করতে পারলে গ্রাহক যে অপারেটরের সিম ব্যবহার করছেন সংশ্লিষ্ট মোবাইল অপারেটরদের কাস্টমার কেয়ারে গিয়ে নিবন্ধন করতে পারবে।
 
বিটিআরসির ভাইস চেয়ারম্যান সুব্রত রায় বলেন, ১ তারিখের পর যারা মোবাইল কিনবে সেগুলোর আইএমইআই নম্বর না থাকলে তা বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। এরপর নিবন্ধন করে তারা ব্যবহার করতে পারবেন।
 
বিটিআরসির নির্দেশনা অনুযায়ী শুধু অবৈধ হ্যান্ডসেটই নয়, ১ অক্টোবর থেকে নতুন কোনো হ্যান্ডসেট কিনলে তাও নিবন্ধন করে দেওয়ার কথা জানিয়েছে মোবাইল অপারেটররা।
 
রবির চিফ রেগুলেটরি অ্যান্ড করপোরেট অ্যাফেয়ার্স অফিসার সাহেদ আলম বলেন, মোবাইল নিয়ে কিছু কিছু গ্রাহকের সমস্যা হতে পারে। আমাদের কল সেন্টারে যোগাযোগ করলে আমরা তা সমাধান করে দেব।
 
এখন থেকে কোনো বিক্রেতা গ্রাহকের কাছে অবৈধ ফোন বিক্রি করলে তাকে শাস্তির দেয়ার পাশাপাশি হ্যান্ডসেটটি ফেরত নিতে বাধ্য করা হবে বলে জানিয়েছে বিটিআরসি।

মুক্তা মাহমুদ

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন