আর্কাইভ থেকে বাংলাদেশ

রাজশাহীর তানোরে আ.লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, আহত অর্ধশতাধিক

রাজশাহীর তানোর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থীর তালিকা তৈরির বর্ধিত সভায় চেয়ারে বসাকে কেন্দ্র করে উপজেলা চেয়ারম্যান লুৎফর হায়দার রশিদ ময়না ও উপজেলা আ.লীগ সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুনের সমর্থকদের মধ্যে ব্যাপক সংর্ঘষ হয়েছে। 

রাজনৈতিক অন্তদ্বন্দ্বের জের ধরে উপজেলার এ শীর্ষ দুই নেতা ও তাদের কর্মী সমর্থকদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। উভয়পক্ষের নেতাকর্মীরা বর্ধিত সভার চেয়ার টেবিল ভাংচুর করে। পরে তানোর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
 
শুক্রবার (১ অক্টোবর) বিকেলে উপজেলা পরিষদের অডিটোরিয়াম হল রুমে বর্ধিত সভা চলাকালে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে উভয়পক্ষের অন্তত অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন বলে দুপক্ষ দাবি করেছে। 

নেতাকর্মীরা জানান, আগামী ১১ই নভেম্বর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন হবে। এরমধ্যে দ্বিতীয় ধাপে রাজশাহীর তানোর ও গোদাগাড়ী উপজেলার মেয়াদ উত্তীর্ণ ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে শুক্রবার (১ অক্টোবর) তানোরে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী সম্ভব্য চেয়ারম্যান প্রার্থীরা তালিকা জমা দিতে বর্ধিত সভায় উপস্থিত হন। বিকেল তিনটার পর উপজেলা পরিষদের বড় অডিটোরিয়াম হল রুমে বর্ধিতসভার অনুষ্ঠিত হয়। 

এছাড়াও তানোর উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের আওয়ামীলীগের দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশীদের নামের তালিকা তৈরির জন্য ডাকা হয়। মনোনয়ন প্রত্যাশিতারা যে যার মতো কর্মী সমর্থকদের নিয়ে বর্ধিত সভায় উপস্থিত হন। তবে চেয়ারম্যান প্রার্থীরা বর্ধিত সভায় উপস্থিত হলে আওয়ামীলীগের চলা দ্বন্দ্বের জেরে নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা শুরু হয়।

সভা শুরুর কয়েক মিনিট পর মঞ্চে বসার উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রাকিবুল হাসান পাপুল সরকার উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগ নেতা আবু বাক্কারকে সামনে থেকে উঠে পিছনের চেয়ারে বসতে বলেন। 

এতে  উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রাকিবুল হাসান পাপুল সরকারের উপর ক্ষিপ্ত হন উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান লুৎফর হায়দার রশীদ ময়নার গ্রুপ। তারা ক্ষিপ্ত হয়ে পাপলুর উপর অতর্কিত হামলা চালান। পাপলু সাধারণ সম্পাদক আল মামুনের গ্রুপের ছিলেন। ময়নার লোকজন তার উপর হামলা চালালে মামুনের গ্রুপের লোকজন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। চলে দফায় দফায় সংঘর্ষ, ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার মতো ঘটনা। এক পর্যায়ে নেতাকর্মী সমর্থকরা বর্ধিত সভার চেয়ার টেবিল ভাংচুর করে। এসময় তানোর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। 

স্থানীয়রা জানান, আবু বক্কর উপজেলা চেয়ারম্যান লুৎফর হায়দার রশিদ ময়নার সমর্থক। যার কারণে তাকে চেয়ার থেকে একটু পেছনে বসতে বলায় নেতাকর্মীরা বিষয়টি ভাল চোখে দেখেনি। যার কারণে উপজেলা চেয়ারম্যান ময়নাসহ তার লোকজন পাপুলের উপর হামলা চালিয়েছে। এছাড়াও পাপুল ছিলেন উপজেলার সাধারণ সম্পাদক আল মাসমুনের সমর্থক। তার কারণে পাপুলের পক্ষ নিয়ে তিনিও নেতাকর্মী নিয়ে ময়নার সমর্থকদের উপর হামলা চালায়।

তানোর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি রাকিবুল হাসান রাকিব জানিয়েছেন, আপাতত পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে আছে। ওইস্থানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তিনি বলেন, আহত নেতাকর্মীদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছে। 

এস

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন