রফিকুল হক দাদু ভাই আর নেই
জনপ্রিয় শিশুসাহিত্যিক, ছড়াকার, শিশু সংগঠক, নাট্যকার ও প্রবীণ সাংবাদিক রফিকুল হক দাদু ভাই আর নেই। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।
তিনি বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছিলেন। গত বছর দুইবার করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি। নানা জটিলতায় প্রায় ছয় মাস আগে মুগদার বাসায় পুরোপুরি শয্যাশায়ী হয়ে পড়েন তিনি। মৃত্যুর আগে তিনি স্ট্রোক করেন।
রবিবার (১০ অক্টোবর) সকাল ১১টায় নিজ বাসায় তিনি ইন্তেকাল করেন। দাদু ভাইয়ের পরিবারসূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। মরহুমের জানাজার নামাজের স্থান ও সময় পরে জানানো হবে।
রফিকুল হকের জন্ম ১৯৩৭ সালের ৮ জানুয়ারি। তার গ্রামের বাড়ি রংপুরের কামালকাচনায়। তার দুই ছেলে এক মেয়ে। বড় ছেলে দেশের বাইরে থাকেন।
সত্তরের দশকে গড়া শিশুকিশোরদের সংগঠন ‘চাঁদের হাটে’র প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন যুগান্তরের ফিচার এডিটর দাদুভাই। এর আগে তার পরিকল্পনায় এবং তার তত্ত্বাবধানে দৈনিক পূর্বদেশে ‘চাদের হাট’ নামে ছোটদের একটি পাতা বের হতো। তখন থেকে তিনি ‘দাদু ভাই’ নামে পরিচিতি পান। পরে ১৯৭৪ সালে ‘চাঁদের হাট’ নামে শিশু সংগঠন গড়ে তোলেন।
১৯৭২ সাল দেশে প্রত্যাবর্তনের পর চিকিৎসার জন্য বঙ্গবন্ধু লন্ডন যান। তার দেশে ফিরে আসা উপলক্ষ্যে সেই সময়ের বহুল প্রচারিত দৈনিক ‘পূর্বদেশ’ একটি বিশেষ সংখ্যা বের করে। ওই পত্রিকার প্রথম পাতায় বঙ্গবন্ধুর ছবির সঙ্গে ‘ঘরে ফিরা আইসো বন্ধু’ শিরোনামে একটি কবিতা ছাপা হয়। রফিকুল হকের লেখা ওই কবিতা খুবই আলোচিত হয়।
দাদুভাই ২০০৯ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার, একই বছর বাংলাদেশ শিশু একাডেমি পুরস্কার, অগ্রণী ব্যাংক শিশুসাহিত্য পুরস্কার, চন্দ্রাবতী একাডেমি পুরস্কার, নিখিল ভারত শিশুসাহিত্য পুরস্কারসহ দেশে ও দেশের বাইরে বিভিন্ন পুরস্কার লাভ করেন।
আশির দশকে বাংলাদেশ টেলিভিশনের জন্য ‘নিধুয়া পাথার কান্দে’ নামে একটি নাটক লিখছিলেন। যা পরে ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করেছিল। ‘বর্গি এলো দেশে’সহ তার প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা ৭টি।
তিনি যুগান্তরের সাহিত্য সম্পাদক ছাড়াও ওই প্রতিষ্ঠানে গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন পদে ছিলেন। নব্বই দশকে প্রতিষ্ঠিত দৈনিক রুপালীর নির্বাহী সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। এর আগে দৈনিক জনতার নির্বাহী সম্পাদক ছিলেন। কাজ করেছেন দৈনিক লাল সবুজ, আজাদ, বাংলাদেশ অবজারভারে।
সত্তর দশকে শিশু কিশোরদের জনপ্রিয় ‘কিশোর বাংলা’ নামের সাপ্তাহিক পত্রিকার সম্পাদকও ছিলেন তিনি।