ক্যাম্পাসে ফিরলেন ফুলপরি
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) নির্যাতনের শিকার সেই ভুক্তভোগী ফুলপরি বিশেষ নিরাপত্তায় ক্যাম্পাসে ফিরেছেন।
শনিবার (৪ মার্চ) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে পাবনা ও কুষ্টিয়া পুলিশের বিশেষ নিরাপত্তায় ক্যাম্পাসে ফেরেন ফুলপরি। মেয়েটির সঙ্গে তার বাবা আতাউর রহমানও ইবি ক্যাম্পাসে আসেন। ফুলপরি ক্যাম্পাসে ফেরার পর বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে থাকতে ইচ্ছে পোষণ করেন।
গেলো বুধবার (১ মার্চ) বিচারপতি জে বি এম হাসান ও রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চের এক আদেশে অস্থায়ীভাবে বহিষ্কার হয় অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেত্রী অন্তরাসহ পাঁচজন। হাইকোর্ট আরও নির্দেশ দেন ভুক্তভোগী ফুলপরি যে হলে থাকতে চায় তাকে যেন সেই হলে আবাসিকতা দেয়া হয়। এরই প্রেক্ষিতে শনিবার ক্যাম্পাসে ফেরার পর ফুলপরি বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে থাকতে ইচ্ছে পোষণ করেন।
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহদৎ হোসেন আজাদ বলেন, পাবনা এবং কুষ্টিয়া পুলিশের মাধ্যমে তাকে নিরাপত্তার সঙ্গে ক্যাম্পাসে আনা হয়েছে। তার সঙ্গে ছিলেন সহকারী প্রক্টর শাহাবুব আলম। ক্যাম্পাসে এসে ফুলপরি বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে থাকতে ইচ্ছা পোষণ করেন। আমরা হল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি এখন প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
গেলো ১১ ও ১২ ফেব্রুয়ারি ইবির দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে দুই দফায় ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ওই ছাত্রীকে রাতভর র্যাগিং ছাড়াও শারীরিকভাবে নির্যাতন ও বিবস্ত্র করে তার ভিডিও ধারণ করার অভিযোগ উঠে। এতে শাখা ছাত্রলীগ সহ-সভাপতি সানজিদা চৌধুরী অন্তরা, ছাত্রলীগ কর্মী তাবাসসুম ইসলাম, মোয়াবিয়া জাহান, ইসরাত জাহান মিমি ও হালিমা খাতুন উর্মিসহ কয়েকজন জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর।
ওই ঘটনায় ফুলপরির লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি একটি তদন্ত কমিটি করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এছাড়াও ঘটনাটিতে পৃথকভাবে তদন্ত কমিটি গঠন করে দেশরত্ন শেখ হাসিনা হল ও শাখা ছাত্রলীগ। পাশাপাশি হাইকোর্টের নির্দেশেও একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসন।
পরবর্তীকালে তদন্তে ঘটনার সত্যতা পেলে সানজিদা চৌধুরী অন্তরা, তাবাসসুম, হালিমা খাতুন উর্মি, ইশরাত জাহান মিমি ও মায়োবিয়ার সিট বাতিল করা হয়। সেই সঙ্গে তাদের স্থায়ীভাবে তাদের আবাসিকতা বাতিলের পাশাপাশি অভিযুক্ত অন্তরা, তাবাসসুম, মীম, উর্মি ও মোয়াবিয়াকে বহিষ্কারের নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। সেই সঙ্গে প্রভোস্টকে হল থেকে অপসারণের নির্দেশ দেয়া হয়।
এছাড়াও ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে তিন দিনের মধ্যে যেকোনো হলে সিট বরাদ্দ দিতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এজন্য পছন্দমতো যেকোনো সিট দিতে ও ক্লাসে ফিরতে নির্দেশ দেয়া হয়।