আর্কাইভ থেকে এশিয়া

গর্ভস্থ সন্তানের হৃদ্যন্ত্রে বিরলতম অস্ত্রোপচার

বিরলতম অস্ত্রোপচারে অভূতপূর্ব সাফল্য পেলেন ভারতের দিল্লি এমসের চিকিৎসকেরা। প্রসূতির গর্ভস্থ সন্তানের হৃদ্যন্ত্রে সমস্যা রয়েছে। জন্মের পর তা চক্রবৃদ্ধি আকারে বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা। এই পরিস্থিতিতে গর্ভস্থ ভ্রূণের হৃদ্যন্ত্রে জটিল অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত চিকিৎসকদের। কিন্তু মূল সমস্যা সময়। মাত্র ৯০ সেকেন্ডের মধ্যে বিরলতম এই অস্ত্রোপচার সারলেন চিকিৎসকেরা। মা এবং গর্ভস্থ ভ্রূণ— দু’জনেই সুস্থ। এর আগে তিন বার সন্তান ধারণ করতে গিয়েও পারেননি ২৮ বছরের প্রসূতি। এ বার গর্ভবতী হওয়ার পর সন্তানকে বাঁচাতে বদ্ধপরিকর ছিলেন দম্পতি। কিন্তু এমসের চিকিৎসকেরা পরীক্ষা করে দেখেন গর্ভস্থ ভ্রূণের অপরিণত হৃদ্যন্ত্রে বড় সমস্যা রয়েছে। এই সন্তান জন্ম নিলে তা আরও বাড়বে। ফলে শিশুর স্বাভাবিক বিকাশের সম্ভাবনা প্রায় নেই বললেই চলে। কিন্তু উপায় কী? দিল্লি এমসের চিকিৎসকেরা সিদ্ধান্ত নেন, গর্ভে থাকা ভ্রূণের হৃদ্যন্ত্রে অস্ত্রোপচার করে তাকে সুস্থ করা হবে। চিকিৎসকদের কাছে সবচেয়ে বড় সমস্যা সময়! মায়ের পেটে থাকা ভ্রূণের হৃদ্যন্ত্রে অস্ত্রোপচার করার জন্য সময় আছে মাত্র ৯০ সেকেন্ড। তার মধ্যেই সব করে ফেলতে হবে। শুরু হয় সময়ের সঙ্গে লড়াই। জটিল পদ্ধতির শরণাপন্ন হন এমসের চিকিৎসকেরা। মায়ের তলপেট দিয়ে একটি সূঁচ ঢোকানো হয়। যা সোজা পৌঁছে যায় গর্ভস্থ ভ্রূণের হৃদ্যন্ত্রে। সেখানে বেলুন ক্যাথিটারের মাধ্যমে হৃদ্যন্ত্রের আটকে থাকা ভালভকে ফের সচল করা হয়। একটু এদিক ওদিক হলেই ভ্রূণের মৃত্যু হতে পারত। কিন্তু চিকিৎসকদের হাতযশে সেই জটিল অস্ত্রোপচার সফল। শুধু তাই নয়, বর্তমানে মা ও তার গর্ভস্থ সন্তান সুস্থ অবস্থায় রয়েছে।

এমসের কার্ডিয়োথোরাসিক সায়েন্সেস সেন্টারের এক প্রবীণ চিকিৎসক বলছেন, ‘গোটা প্রক্রিয়াটি চালানো হয়েছে আল্ট্রাসাউন্ড গাইডেন্সের মাধ্যমে। অন্য সময় হয়তো অ্যাঞ্জিওগ্রাফির সাহায্য নেওয়া যেত কিন্তু এ ক্ষেত্রে তা করা সম্ভব নয়। সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল সময়। কারণ ওই অবস্থায় বেশি ক্ষণ থাকলে ভ্রূণের মৃত্যু অনিবার্য। সামান্য এদিক থেকে ওদিক হলেই সর্বনাশ হয়ে যেতে পারত। তার উপর ছিল সময়ের চ্যালেঞ্জ। তবে খুব বেশি সময় লাগেনি। নির্ভুল ভাবে মাত্র ৯০ সেকেন্ডের মধ্যেই সব ঠিক করে দেওয়া গিয়েছে।’

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন