আর্কাইভ থেকে এশিয়া

গ্রেপ্তারে ব্যর্থ হয়ে ইমরানের সঙ্গে সংলাপের প্রস্তাব শাহবাজের

পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) চেয়ারম্যান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সঙ্গে সংলাপে বসার প্রস্তাব দিয়েছেন দেশটির বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ। চলমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট থেকে পাকিস্তানকে মুক্ত করার উদ্দেশ্যেই এ প্রস্তাব দেয়া হয়েছে বলে জানায় দেশটির সংবাদমাধ্যম ডন।

গেলো বুধবার (১৫ মার্চ) প্রধানমন্ত্রী হাউজে কাউন্সিল অব পাকিস্তান নিউজপেপার এডিটরসের (সিপিএনই) প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক করেন শাহবাজ শরীফ। সেসময় তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনের (ইসিপি) সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সরকার নির্ধারিত সময়ে সাধারণ নির্বাচনের আয়োজন করবে। তবে দেশকে শান্ত রাখতে সম্মিলিত প্রচেষ্টা দরকার।

ইমরান খানের গ্রেফতারি পরোয়ানা সংক্রান্ত পুলিশি পদক্ষেপ প্রসঙ্গে তার দাবি, সরকার নিজে থেকে কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। শুধু আদালতের নির্দেশ মেনে কাজ করছে। কোনো ব্যক্তি নিজেকে আদালতের ঊর্ধ্বে ভাবতে পারেন না। কিন্তু ইমরান খানের আচরণে মনে হচ্ছে, তিনি আদালতের চেয়েও বড় হয়ে গেছেন।

শাহবাজ বলেন, দেশকে এগিয়ে নিতে সব রাজনৈতিক দলকে একসঙ্গে বসতে হবে। তবে দুঃখের বিষয় হলো, অতীতে দুটি বৈঠকে আমন্ত্রণ জানানো হলেও, পিটিআই তা প্রত্যাখ্যান করেছে।

এমনকি, পেশোয়ারের পুলিশ লাইন্স এলাকার একটি মসজিদে আত্মঘাতী হামলা নিয়ে আয়োজিত শীর্ষ কমিটির বৈঠকেও যোগ দেয়নি পিটিআই। বুধবারের (১৫ মার্চ) ওই বৈঠকে দেশের রাজনীতি, অর্থনীতি, পররাষ্ট্র ও নিরাপত্তা নিয়ে বিস্তর আলোচনা হয়ছে।

তিনি বলেন, পাকিস্তান গুরুতর রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে। তবে পাকিস্তান গণতান্ত্রিক জোট (পিডিএম) ক্ষমতাসীন জোটের সব সদস্য পরিস্থিতির উন্নতিতে ইতিবাচকভাবে অবদান রেখেছেন। দেশে ভালোর জন্য সবাই আলোচনায় বসতে রাজি। কিন্তু পিটিআই আমাদের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেই যাচ্ছে।

সাধারণ নির্বাচনের বিষয়ে শাহবাজ বলেন, এ বিষয়ে কারও কোনো সন্দেহ থাকা উচিত নয়। আমরা আন্তরিকভাবে নির্বাচনে অংশ নেব ও ইসিপি যা সিদ্ধান্ত নেবে তা অনুসরণ করবো। নির্বাচন সংক্রান্ত যেকোনো সিদ্ধান্ত নেয়ার দায়িত্ব ইসিপির।

তিনি আরও বলেন, সরকার এ সত্যটি জানে যে সময়মত নির্বাচন একটি শক্তিশালী রাষ্ট্রকে উন্নতির দিকে ধাবিত করে। আর জোট সরকার দায়িত্ব নেয়ার ১১ মাসের মধ্যে ঋণ খেলাপির ছায়া কাটিয়ে উঠেছে।

পূর্ববর্তী সরকার আইএমএফের সঙ্গে সই করা চুক্তি থেকে সরে আসায় আমরা বিশাল সংকটের মধ্যে পড়েছি। তবে আশা করি, বর্তমান সরকার শিগগির আইএমএফের সঙ্গে স্টাফ লেভেলে চুক্তি করতে সক্ষম হবে।

এর আগে টানা দু’দিন চেষ্টা করেও ইমরান খানকে গ্রেফতার করতে পারেনি পাকিস্তানি পুলিশ ও রেঞ্জার্সের যৌথ দল। সমর্থকদের বাধার দেওয়াল ভাঙতে ব্যর্থ হয়ে শেষপর্যন্ত পিছু হটতে বাধ্য হয় নিরাপত্তা বাহিনী।

বুধবার (১৫ মার্চ) দুপুরে পিটিআইয়ের টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে শেয়ার করা একটি ভিডিওতে ইমরান খানের জামান পার্কের বাড়ির সামনে থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সরে যেতে দেখা যায়। এর পরপরই উল্লাসে মেতে ওঠেন পিটিআই নেতা-কর্মীরা।

বুধবার সকালে পুলিশ ও রেঞ্জার্সদের যৌথ দল সাঁজোয়া যান নিয়ে আরও আক্রমণাত্মকভাবে ইমরান খানের বাড়িতে ঢোকার চেষ্টা চালায়। কিন্তু পিটিআই কর্মীদের প্রবল বাধার মুখে ব্যর্থ হয় তারা। বাঁধে তুমুল সংঘর্ষ।

এসময় পিটিআই কর্মীরা নিরাপত্তা বাহিনীর দিকে ইট-পাথর নিক্ষেপ করে। তাদের ছত্রভঙ্গ করতে জলকামান-টিয়ারগ্যাসের পাশাপাশি পুলিশ গুলিও চালিয়েছে বলে অভিযোগ করেছে পিটিআই।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন