আর্কাইভ থেকে বাংলাদেশ

পুনিতের মৃত্যু, ২৬ অনাথাশ্রম ১৬ বৃদ্ধাশ্রমে শোকের মাতম

কোটি ভক্তকে কাঁদিয়ে মাত্র ৪৬ বছর বয়সে না-ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছেন ভারতের কন্নড় সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেতা-গায়ক পুনিত রাজকুমার। 

অসাধারণ এই অভিনেতা, গায়ক ব্যক্তিগত জীবনে খুবই উদার মনের মানুষ ছিলেন। সামজিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিলেন তিনি। বাবা কন্নড় সিনেমার ‘ম্যাটিনি আইডল’ রাজকুমারের শুরু করা নানা জনকল্যাণমূলক উদ্যোগ তিনি তত্ত্বাবধান করতেন।

জানা গেছে, কর্ণাটকের বিভিন্ন স্থানে ৪৫টি স্কুলে বিনা বেতনে শিক্ষাদান কার্যক্রম পরিচালনা করতেন পুনিত। প্রায় ১ হাজার ৮০০ শিক্ষার্থীর ভার ছিল এই অভিনেতার কাঁধে। এছাড়া তার তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হতো ২৬টি অনাথাশ্রম, ১৯টি গরুর খামার এবং ১৬টি বৃদ্ধাশ্রম। পুনিতের অনুপস্থিতিতে এই প্রতিষ্ঠানগুলোতে শোকের মাতম চলছে। অনেকেই কাঁদছেন তাদের প্রিয় এই মানুষের জন্য। তাদের কাছে পুনিত অভিনেতা ছিলেন না, ছিলেন দেবতার মতো।

পারিশ্রমিকের বেশিরভাগ অর্থই তিনি বিভিন্ন দাতব্য কাজে দান করতেন। বিশেষ করে সিনেমায় গান গেয়ে যে অর্থ তিনি পেতেন, পুরোটাই বিভিন্ন জনকল্যাণমূলক কাজে দান করতেন। এখানেই শেষ নয়, মরণোত্তর চক্ষুদান করে গেছেন এই অভিনেতা। মৃত্যুর পর তার চক্ষুদানের প্রক্রিয়া ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। 

জনপ্রিয় এই অভিনেতার মৃত্যুর খবর কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না তার ভক্ত-অনুরাগীরা। এমনকি তার মৃত্যুর খবর দিতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন বেঙ্গালুরুর এক নিউজ চ্যানেলের সঞ্চালিকা।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই ঘটনার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। এতে দেখা যাচ্ছে, খবর পাঠের আগেই পুনিত রাজকুমারের মৃত্যুর খবর শুনে কাঁদতে শুরু করেন এই সঞ্চালিকা। পরবর্তী সময়ে সেটে উপস্থিত অন্যরা তাকে সান্ত্বনা দেন। এরপর তিনি যখন পুনিতের মৃত্যুর খবরটি জানাতে যান তখন আবারো কান্নায় ভেঙে পড়েন।

শিশুশিল্পী হিসেবে মাত্র পাঁচ বছর বয়সে অভিনয় ক্যারিয়ার শুরু করেন পুনিত। ‘বেট্টাডা হুভু’ সিনেমাটিতে অভিনয় করে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও পান। ২০০২ সালে ‘আপ্পু’ সিনেমায় নায়ক হিসেবে প্রথম অভিনয় করেন। তারপর অনেক ব‌্যবসাসফল সিনেমা উপহার দেন তিনি। কন্নড় সিনেমার সবচেয়ে বেশি পারিশ্রমিক পাওয়া অভিনেতাদের একজন পুনিত। তার উল্লেখযোগ‌্য সিনেমাগুলো হলো—‘অভি’, ‘ভীরা কানাড়িগা’, ‘আকাশ’, ‘অজয়’, ‘অঞ্জনি পুত্রা’ প্রমুখ।

দুইদিন আগে একটি অনুষ্ঠানে হাজির হয়েছিলেন পুনিত। শুক্রবার (২৯ অক্টোবর) সকালেও মাইক্রোব্লগিং সাইট টুইটারে সক্রিয় ছিলেন। এদিন জিমে ওয়ার্কআউট করার সময় হার্ট অ‌্যাটাক হয় পুনিতের। দ্রুত তাকে বেঙ্গালুরুর বিক্রম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

এস

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন