আর্কাইভ থেকে ফিচার

রোজা মানেই ঈদ যে দেশে!

ইসলাম ধর্ম সারাবিশ্বের মুসলমানদের এক সুতায় গেঁথেছে। তবে সংস্কৃতির ভিন্নতার কারণে দেশে দেশে মুসলমানদের নানা সামাজিক আচার-আচরণ পালনে রকমফের রয়েছে।

ইসলামি সংস্কৃতি ও সভ্যতার প্রাচীন জনপদ মিশর। অনেক নবী-রাসুলের আগমন ঘটেছে এই জনপদে। বর্তমানে ইলমে কেরাতে সুতিকাগার মিশর। মিশরী কারীদের সূরের মুর্ছনায় পুরো বিশ্ব মাতোয়ারা।

মিসরীয়রা পরিবারের সবাই মিলে ইফতার করতে পছন্দ করেন। ইফতারের সময় জ্বালানো হয় রঙিন লন্ঠন।  পুরো রমজান মাসে রাস্তা, দোকান, বাড়ির ছাদ সব জায়গায় ছেয়ে যায় এই বাতির আলোয়। রমজান মাসের মহিমা যেনো পুরো শহরে ছড়িয়ে পড়ে আলো হয়ে।

মিশরীয়রা সাধারণত পানি ও খেজুর দিয়ে ইফতার শুরু করে। তবে ফলের রস, কোষাফ নামে পানীয় পান করেন তারা। মিশরীয়দের প্রধান ইফতারি পণ্য হলো ‘মা’হসী মলোকাইয়া’ কিংবা পাট শাকের সুপ এবং বামিয় মা’আ লাহমা কিংবা মাংস ও ঢেঁড়স ভুনা। এছাড়া ফেরাখ মা’হামারা, এইস বেলাদী নামে আটার রুটি এবং তাজা ফল ও পুদিনা পাতার চা মিশরীয়দের খুব বেশি পছন্দ।

এছাড়াও ইফতারিতে মাংস দিয়ে তৈরি রোকাক নামে এক ধরনের মচমচে ভাজা টোস্ট মিসরীয়দের কাছে খুব জনপ্রিয়। ইফতারিতে হাঁসসহ নানা ধরনের মাংসে তৈরি খাবার খায় মিশরীয়রা।

দেশটির অধিকাংশ ঘরে ইফতারের জন্য তৈরি করা হয় বাদামি রুটি ও ‘ফুল মেডামেস’ নামক এক ধরনের তরকারি। ফাভা বিন কিংবা মটরশুঁটি এই তরকারি রান্না করা হয়।

মিশরীয়রা ইফতারিতে‘কামার আল দিনান্দ আরাসি’নামক বিশেষ ধরনের পানীয় তৈরি করে। যেটি অ্যাপ্রিকট বা খুবানির খোসা দিয়ে  বানানো হয়। ইফতারের কিছুক্ষণ আগে এ শরবতটি তৈরি করা হয়।

মিশরীয়দের ইফতারে আরেকটি বিশেষ খাবার হলো চাঁদ আকৃতির এক ধরনের রুটি। এই রুটিকে বলা হয়, খাবোস রমজান।

এছাড়া ‘কানাফাহ’, ‘কাতায়েফ’ও ‘বাকলাওয়াহ’বিভিন্ন ধরনের বিখ্যাত মিষ্টি পছন্দ করে মিশরের মানুষ।

ইফতারের সব খাবার শেষে কড়া চা পান করে তারাবীহ নামাজের জন্য প্রস্তুত হন মিশরীয়রা।

দেশটিতে পরিবারের সদস্যদের একসঙ্গে ইফতার পালনের সংস্কৃতি আছে। তবেআধুনিকতার ছোঁয়ায় এই সংস্কৃতিতে পরিবর্তন আসছে। আজকাল মিশরীয় তরুণরা ক্যাফে ও রেস্তোরাঁতেই ইফতার করতে অভ্যস্ত হয়ে যাচ্ছে।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন