বঙ্গবাজারে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের মধ্যে হাতাহাতি
রাজধানীর বঙ্গবাজারে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বে তাদের নিজেদের মধ্যে এই ঘটনা ঘটেছে।
মঙ্গলবার (১১ এপ্রিল) দুপুরে বঙ্গবাজার কমপ্লেক্স দোকান মালিক সমিতির অস্থায়ী ক্যাম্পে এই ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত দোকানের সংখ্যা, কমিটির কার্যক্রম ও এক কমিটিকে বাদ দিয়ে আরেক কমিটির ভারপ্রাপ্তি নিয়ে প্রশ্ন তুললে দুই পক্ষের মধ্যে এই হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এ সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন। তিনি পরিস্থিতি বুঝে উঠে সরে দাঁড়ান। এরপর ব্যবসায়ীদের মধ্যে বেশ কিছুক্ষণ বাগবিতণ্ডা ও ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে।
এ বিষয়ে দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন বলেন, আমাকে সরকারের পক্ষ থেকে ফান্ড রেইজ করার জন্য বলা হয়েছে, আমি সেই চেষ্টাই করছি। সেজন্যই আজ আমার বঙ্গবাজারে যাওয়া। কিন্তু সেখানে গিয়ে আজ খুবই বিরক্ত হয়েছি। ব্যবসায়ীদের মধ্যে কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্ব। তাদের কার্যক্রমে বিরক্ত হয়ে আমি ঘটনাস্থল ত্যাগ করেছি।
হেলাল উদ্দিন আরও বলেন, কারা ক্ষতিগ্রস্ত, কারা নতুন করে অ্যালটমেন্ট পাবে তা ঠিক করবে সিটি করপোরেশন।
হাতাহাতির বিষয়ে বঙ্গবাজার কমপ্লেক্স দোকান মালিক সমিতির সভাপতি মো. নাজমুল হৃদা বলেন, এখানে আগুনের ঘটনায় ২৯৬১ জন ব্যবসায়ী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কোনো দোকানই অক্ষত ছিল না। কিন্তু এখন কেউ কেউ এসে বলা শুরু করল, এখানে নাকি ২৬০০ দোকান। বাকি দোকান নাকি ঘাপলা। এটা শুনে ক্ষতিগ্রস্ত দোকানিরা বিক্ষুব্ধ হয়েছে। ধাওয়া করেছে।
এই ব্যবসায়ী নেতা আরও বলেন, আমরা ধরে ধরে খুঁজে বের করে তালিকা করেছি। তালিকায় ২৯৬১ ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীর নাম এসেছে। সেই তালিকা আমরা সিটি করপোরেশনকে দিয়েছি। কেউ যদি এখন এখানে এসে হট্টগোল লাগানোর চেষ্টা করে, এখানে ষড়যন্ত্র করে, তাহলে তো সমস্যা।
উল্লেখ্য, গত ৪ এপ্রিল সকালে বঙ্গবাজার মার্কেটে ভয়াবহ আগুন লাগে। মুহূর্তের মধ্যেই আগুন পুরো মার্কেটে ছড়িয়ে পড়ে। ফায়ার সার্ভিসের ৪৮টি ইউনিট পর্যায়ক্রমে আগুন নেভানোর কাজে অংশ নেয়। শেষ পর্যন্ত ৭৫ ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিভে গেলেও কিছু রেখে যায়নি স্মরণকালের ভয়াবহ এই আগুন। সব কিছু পুড়িয়ে ব্যবসায়ীদের নিঃস্ব করে থেমে যায় আগুন। ব্যবসায়ীরা বলছেন, সব মিলিয়ে প্রায় পাঁচ হাজার দোকান পুড়েছে। এতে কয়েক হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।
এদিকে পুড়ে যাওয়ার মার্কেটস্থলে চৌকি বিছিয়ে ব্যবসা শুরুর ব্যবস্থা করে দিচ্ছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। সীমিত আকারে আগামীকাল বুধবার (১২ এপ্রিল) তারা ব্যবসা শুরু করবেন।