আর্কাইভ থেকে আফ্রিকা

সুদানে যুদ্ধে বন্ধ না হওয়ায় বিঘ্নিত হচ্ছে ত্রাণ সরবরাহ : বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি

বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি জানিয়েছে, সুদানের রাজধানী খার্তুমে ত্রাণ-সহায়তা পৌঁছে দিতে তারা সংগ্রাম করছে। আর অনেক এলাকায় তারা তীব্র সংঘর্ষ দেখছে এবং একাধিক ব্যর্থ অস্ত্রবিরতি প্রত্যক্ষ করেছে।

বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির সুদান বিষয়ক মুখপাত্র লেনি কিঞ্জলি বলেন, সংস্থাটি যুদ্ধক্ষেত্র থেকে, তুলনামূলক ‘শান্তিপূর্ণ’ এলাকায়, পালিয়ে আসা লোকজনে মধ্যে খাদ্য-সহায়তা বন্টন করা শুরু করেছে।

মেসেজিং অ্যাপ-এর মাধ্যমে জার্মানি থেকে কিঞ্জলি বলেন, ৩ লাখ ৮৪ হাজার মানুষের কাছে খাদ্যত্রাণ পৌঁছে দেয়ার পরিকল্পনা করছে ডব্লিউএফপি।

তিনি জানান, এই সাহায্য যাবে সুদানের পূর্বাঞ্চলের কাসালা ও গেদারেফ প্রদেশে। সেই সঙ্গে, খার্তুমের দক্ষিণে, হোয়াইট নাইল প্রদেশেও ত্রাণ যাবে ।

কিঞ্জলি বলেন, এই তালিকায় রয়েছে নতুন বাস্তুহারা মানুষ ও আশ্রয়দাতা সম্প্রদায়, যারা চরম ঝুঁকি মোকাবেলা করছে এবং এই প্রদেশগুলোর বিভিন্ন স্থানে আগে থেকেই আশ্রয় নেয়া উদ্বাস্তুরা।

কিঞ্জলি বলেন, খার্তুমের ভেতরে ও বাইরে চলমান তীব্র লড়াই, এই এলাকায় নিরাপদ যোগাযোগে বাধা সৃষ্টি করেছে। সেখানে কয়েক লাখ মানুষ বাঁচার জন্য লড়াই করছেন।

বৃহস্পতিবার সুদানের রাজধানীতে ভারী গোলাবর্ষণ হয়েছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা দ্য অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস। এই লড়াই, যুদ্ধরত জেনারেলের হাতে আটকে থাকা বেসামরিক নাগরিকদের কাছে ত্রাণ সহায়তা পৌঁছানোর প্রচেষ্টাকে ব্যাহত করেছে। এই মানুষগুলোর জন্য জরুরিভাবে সহায়তা প্রয়োজন।

সুদানের সামরিক বাহিনী ও তাদের প্রতিপক্ষ আধা-সামরিক র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্স বেশ কয়েকটি অস্ত্রবিরতিতে সম্মত হলেও, কোন অস্ত্রবিরতি কার্যকর হয়নি। সহায়তা দেয়ার জন্য, ত্রাণ-সংস্থার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে উভয়পক্ষের প্রতি আবেদন জানিয়েছেন কিঞ্জলি।

কিঞ্জলি বলেন, নিরাপদে সহায়তা পৌঁছে দেয়া আমাদের জন্য কঠিন হয়ে পড়েছে। তাই, অস্ত্রবিরতির জন্য আমরা উভয়পক্ষের প্রতি আহ্বান জানানো অব্যাহত রেখেছি। আর, আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের অধীনে থাকা সকল দায়বদ্ধতা মেনে, মানবিক সহায়তাকারী সংস্থগুলোর কর্মী, সকল সহায়তা উপকরণ ও ত্রান সংস্থার প্রাঙ্গণ সুরক্ষিত রাখতে তাদের প্রতি আহবান জানাচ্ছি।

১৫ এপ্রিল থেখে শুরু হওয়া লড়াইয়ে কয়েকশো মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন এবং নিরাপত্তার খোঁজে হাজার হাজার মানুষ সংঘাতময় এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গেছেন।

জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক এজেন্সি ইউএনএইচসিআর বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, ১ লাখ ২৮ হাজারের বেশি মানুষ ইতোমধ্যে সুদান ত্যাগ করেছেন। আর, আগামী সপ্তাহগুলোতে আরো ৯ লাখের মতো মানুষ প্রতিবেশী দেশগুলোতে পালিয়ে যাবেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

কিঞ্জলি বলেন, চাদে পালিয়ে যাওয়া ৩০ হাজার সুদানিদের, এক-তৃতীয়াংশের বেশি মানুষের কাছে ইতোমধ্যে খাদ্য-সহায়তা পৌঁছে দিয়েছে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি।

ইউএনএইচসিআর জানিয়েছে, একই সংখ্যক মানুষ পালিয়ে দক্ষিণ সুদানে আশ্রয় নিয়েছে। আর,মিশরে ৪৭ হাজার ও প্রায় ১০ হাজার মানুষ মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্রে আশ্রয় নিয়েছেন।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন