আর্কাইভ থেকে জনদুর্ভোগ

সুপেয় পানির অভাব, বাড়ছে ডায়রিয়ার

চট্টগ্রামে দিনে দিনে তীব্র হচ্ছে পানির সংকট।  আবার জেলার বিভিন্ন এলাকায় নলকূপে উঠছে না পানি।  পরিশোধিত পানিতেও মাত্রাতিরিক্ত লবণের কারণে খাওয়ার অনুপযোগী হয়ে পড়ছে।  পরিস্থিতি মোকাবিলয়া নগরে রেশনিং পদ্ধতিতে পানি সরবরাহ করছে ওয়াসা।  অন্যদিকে সুপেয় পানির সমস্যায় জেলাজুড়ে দেখা দিয়েছে ডায়রিয়ার প্রকোপ।

শনিবার (৬ মে) জেলা সিভিল সার্জনের কার্যালয় থেকে প্রাপ্ত তথ্যমতে, চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলায় গেলো ২৪ ঘণ্টায় ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন ২৩২ জন। এরমধ্যে মিরসরাইয়ে ১৫, সীতাকুণ্ড ১৪, সন্দ্বীপ ১, ফটিকছড়ি ১৪, হাটহাজারী ৮, রাউজান ১১, রাঙ্গুনিয়া ১০, বোয়ালখালী ২৩, আনোয়ারা ২৯, পটিয়া ৩০, বাঁশখালী ১৬, চন্দনাইশ ৩৩, সাতকানিয়া ১২ ও লোহাগাড়া ১৬ জন আক্রান্ত হয়। যদিও একই সময়ের মধ্যে ২৩৪ জন রোগী সুস্থ হয়েছেন বলে সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে জানা যায়। ইতিমধ্যে ডায়রিয়ার প্রকোপরোধে কারণ অনুসন্ধানের জন্য তিন সদস্যের কমিটি করা হয়েছে।

এদিকে, দীর্ঘদিন বৃষ্টি না হওয়ায় পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় এ সমস্যা তৈরি হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান। সবমিলিয়ে নগর এবং বিভিন্ন উপজেলায় পানির জন্য তৈরি হয়েছে এক ধরনের হাহাকার।

গেলো (শুক্রবার) উৎপাদিত হয়েছে ৩৯ কোটি লিটার। এ ক্ষেত্রে প্রয়োজনের তুলনায় প্রায় ৭ কোটি লিটার কম উৎপাদিত হয়। প্রতিদিনই এ ধরনের ঘাটতি হচ্ছে। তাই এলাকাভিত্তিক রেশনিং করে পানি সাপ্লাই দিচ্ছে ওয়াসা।

চট্টগ্রাম ওয়াসা থেকে প্রাপ্ত তথ্যমতে, সবশেষ শুক্রবার পানি সংগ্রহের উৎসস্থলের একটিতে প্রতি লিটারে লবণের পরিমাণ ছিল সাড়ে ৩ হাজার মিলিগ্রাম এবং আরেকটিতে আড়াই হাজার মিলিগ্রাম। আবার নগরে দিনে ৪৬ কোটি লিটার পানির চাহিদা রয়েছে।

চট্টগ্রাম ওয়াসার প্রধান প্রকৌশলী মাকসুদ আলম গণমাধ্যমে বলেন, পানি উৎপাদনে ঘাটতি রয়েছে। এ কারণে রেশনিং পদ্ধতিতে পানি সাপ্লাই দেয়া হচ্ছে। কাপ্তাই লেক থেকে পানি কম আসায় পানিতে লবণের পরিমাণ বেড়ে গেছে।  এ কারণে ১৪ থেকে ১৫ ঘণ্টা উৎপাদন বন্ধ রাখতে হচ্ছে।  সরবরাহ করা পানিতে প্রতি লিটারে ৪০০ মিলিগ্রামের কম লবণের মাত্রা রয়েছে।  তবে বৃষ্টি না হওয়া পর্যন্ত এর কোনো সমাধান নেই।  এ সময়ে পানি সরবরাহও কম থাকবে, আবার সরবরাহ করা পানিতে লবণাক্ততাও থাকবে।

 

অন্যদিকে, বৃষ্টি না হওয়ায় বিভিন্ন উপজেলার অধিকাংশ নলকূপে উঠছে না পানি। ফলে বাধ্য হয়ে মানুষ নানা উৎস থেকে সংগ্রহ করা পানি খাচ্ছে। এভাবে পানি পানের কারণে দেখা দিয়েছে ডায়রিয়ার প্রকোপ।

 

 

এ বিষয়ে চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী গণমাধ্যমে বলেন, বৃষ্টি না হওয়ায় বিভিন্ন এলাকায় নরমাল টিউবওয়েলে পানি উঠছে না। গভীর নলকূপেও পানি উত্তোলনের পরিমাণ কমে গেছে। এ কারণে বিভিন্ন এলাকায় বিশুদ্ধ পানির সংকট তৈরি হয়েছে। আবার কোনো কোনো এলাকার পানিতে লবণের পরিমাণ বেশি। একারণে ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়েছে।

 

 

 

 

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন