আদেশ না মানায় নারায়ণগঞ্জের ডিসিকে হাইকোর্টে তলব
আদালতের আদেশ সত্ত্বেও অবৈধ ইটভাটা বন্ধ না করায় নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক (ডিসি), পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক (এনফোর্সমেন্ট) ও পরিবেশ অধিদপ্তরের নারায়ণগঞ্জের দায়িত্বরত কর্মকর্তাকে তলব করেছেন হাইকোর্ট। আগামী ৩১ মে তাদের সশরীরে হাজির হয়ে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।
বুধবার (১৭ মে) বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আমাতুল করিম। রিটের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সেলিম আজাদ। এলাকাবাসীর পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার এ বি এম আলতাফ হোসেন ও ব্যারিস্টার আরিফ চৌধুরী।
গত ২৭ ফেব্রুয়ারি বায়ু দূষণ নিয়ন্ত্রণে ঢাকাসহ পাঁচটি জেলার অবৈধ ইটভাটা দুই সপ্তাহের মধ্যে উচ্ছেদের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। বিচারপতি কেএম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদেশে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, মানিকগঞ্জ ও গাজীপুর জেলায় থাকা অবৈধ ইটভাটা উচ্ছেদ করে দুই সপ্তাহের মধ্যে পরিবেশ অধিদপ্তরের ডিজিকে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেন আদালত।
এই আদেশের পরও নারায়ণগঞ্জের সব অবৈধ ইটভাটা এখনও উচ্ছেদ করা হয়নি। বিষয়টি উল্লেখ করে হাইকোর্টে আবারও আবেদন করা হয়।
এর আগে ২০২০ সালে বায়ু দূষণরোধে নয় দফা নির্দেশনা দিয়ে রায় দিয়েছেন উচ্চ আদালত।
নয় দফা নির্দেশনা বলা হয়:
১. ঢাকা শহরের মধ্যে বালি বা মাটি বহনকারী ট্রাকগুলোকে এগুলো ঢেকে পরিবহন করতে হবে।
২. যেসব জায়গায় নির্মাণ কাজ চলছে, সেসব জায়গার কনট্রাকটররা তা ঢেকে রাখবে।
৩. ঢাকার সড়কগুলোতে পানি ছিটানোর যে নির্দেশ ছিল, সে নির্দেশ অনুযায়ী যেসব জায়গায় এখনো পানি ছিটানো হচ্ছে না। সেসব এলাকায় পানি ছিটানোর ব্যবস্থা নিতে হবে।
৪. সড়কের মেগা প্রজেক্টের নির্মাণ কাজ ও কার্পেটিং যেসব কাজ চলছে, যেসব কাজ যেন আইন কানুন এবং চুক্তির টার্মস অ্যান্ড কন্ডিশন মেনে করা হয় সেটা নিশ্চিত করতে হবে।
৫. যেসব গাড়ি কালো ধোঁয়া ছাড়ে সেগুলো জব্দ করতে বলা হয়েছে।
৬. সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ অনুযায়ীও রাস্তায় চলাচলকারী গাড়ির ইকোনমিক লাইফ নির্ধারণ করতে হবে। যেসব গাড়ি পুরাতন হয়ে গেছে সেগুলো চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে হবে।
৭. যেসব ইটভাটা লাইসেন্সবিহীনভাবে চলছে, সেগুলোর মধ্যে যেগুলো এখনো বন্ধ করা হয়নি, সেগুলো বন্ধ করে প্রতিবেদন দাখিল করতে হবে।
৮. পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমতি ছাড়া টায়ার পোড়ানো ও ব্যাটারি রিসাইক্লিং বন্ধ করতে হবে।
৯. মার্কেট ও দোকানের বর্জ্য প্যাকেট করে রাখতে এবং তা মার্কেট ও দোকান বন্ধের পরে সিটি কর্পোরেশনকে ওই বর্জ্য অপসারণ করতে হবে।