বাজেট নিয়ে যা বললেন মাহফুজ-বুবলী
‘উন্নয়নের অভিযাত্রায় দেড় দশক পেরিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশের অভিমুখে’—এমন স্লোগান নিয়ে ১ জুন জাতীয় সংসদে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেট উত্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। যেখানে সংস্কৃতি অঙ্গনের জন্য ৬৯৯ কোটি টাকা বরাদ্দ প্রস্তাব করা হয়েছে। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ে আগের অর্থবছরে (২০২২-২৩) প্রস্তাবিত বাজেট ছিল ৬৩৭ কোটি টাকা। সংশোধিত বাজেট হয়েছিল ৬৬২ কোটি টাকা। অর্থাৎ গতবার সংশোধিত বাজেটের থেকে সংস্কৃতি অঙ্গনে এবার ৩৭ কোটি টাকা বরাদ্দ বেড়েছে।
তথ্যটি আপাতত খুশির হলেও, বিষয়টি নিয়ে মন্তব্য করেছেন দেশের শীর্ষ অভিনেতা-নির্মাতা মাহফুজ আহমেদ এবং জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা শবনম বুবলী।
শুক্রবার তাদের মুক্তি প্রতীক্ষিত ছবি ‘প্রহেলিকা’র এক আয়োজনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে দুজনেই বেশ ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করেন এ বিষয়ে। যেমনটা এর আগে কোনো শিল্পীকে বলতে দেখা যায়নি, এভাবে।
মাহফুজ আহমেদ বলেন, ‘এ প্রতিক্রিয়া আসলে আমাদের দেয়ার কথা নয়। তবু প্রশ্নটা যেহেতু উঠল, আমার মতো করে জবাব দিচ্ছি।’
এরপর তিনি বলেন, ‘বাজেট যাই করেন, কমবেশি যতই বাড়ান; সেটি নিয়ে আমার মাথাব্যথা এখনও নেই। কারণ, আমি জানি এই বাজেট হাজার কোটি টাকা হলেও ফল আসবে না। বাজেটের আগে দরকার আমাদের প্ল্যান। যে মানুষগুলো বসে আছেন এসব বাজেটের জন্য। যাদের পরিকল্পনায় সিনেমা ইন্ডাস্ট্রি এগিয়ে যাবে। আমার সন্দেহ আছে, সেই মানুষগুলো কি আদৌ যথার্থ? সে মানুষগুলো কি আদৌ চায়, এই ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির দরকার আছে? আমার তো যথেষ্ট সন্দেহ আছে। ওনাদের যতদিন এ ইন্ডাস্ট্রি উন্নয়নের জন্য বোধোদয় না হবে, কোটি কোটি টাকা বাজেট দিয়েও কিছু হবে না।’
উদাহরণ টেনে এ অভিনেতা বলেন, ‘পৃথিবীর অনেক দেশ আছে, যেখানে শুধু ফিল্মটাকে তত্ত্বাবধান করার জন্য একটা মন্ত্রণালয় বা সংস্থা আছে। বেশি দূরে যাব না, যে তামিল ইন্ডাস্ট্রি আজ বিশ্ব শাসন করছে, তাদেরই আলাদা মন্ত্রণালয় আছে এটি দেখভাল করার জন্য। সেখানে সঠিক লোক নিয়োগ আছে। আমাদের ফিল্ম দেখার জন্য এমন কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান আছে? আমরা তো দিকহারা অবস্থায় যে যার মতো ছোটাছুটি করছি। যে যার সামর্থ্য আর স্বপ্ন নিয়ে বিচ্ছিন্নভাবে কাজ করার চেষ্টা করছি।’
একই সুরে বললেন ঢালিউডের অভিজ্ঞ অভিনেত্রী শবনম বুবলীও। তিনি বলেন, ‘আসলেই আমরা দিকহারা পথিকের মতো ছুটছি। আমরা কি আসলেই চাই— এই ইন্ডাস্ট্রিটা এগজিস্ট করুক? সম্ভবত আমরা চাই না। কারণ এন্টারটেইনমেন্ট কিন্তু আমাদের প্রত্যেকের জীবনে অনেক বড় একটা আশ্রয়ের বিষয়। আমরা যে যাই করি না কেন, দিনের একটা সময় কিন্তু সিনেমা বলুন, গান বলুন, নাটক বলুন- তার কাছেই ফিরে যাই। একটু মানসিক প্রশান্তি খোঁজার চেষ্টা করি এসবের মধ্যে। ক্লান্তি ভুলতে একটু হাসতে চাই, গুনগুন করে গাইতে চাই। কিন্তু এই দেশে এই সেক্টরটাই সবচেয়ে অবহেলিত। এগুলো নিয়ে ভাববার যেন কোনো সুযোগ নেই কারও। এগুলোর ওপর একটু সিরিয়াসলি আমাদের ভাববার সময় এসেছে।’
এদিন ‘প্রহেলিকা’ ছবি নিয়ে প্রায় ঘণ্টা তিনেকের আনন্দময় ম্যারাথন আড্ডা দেন মাহফুজ-বুবলী। সঙ্গে ছিলেন নির্মাতা চয়নিকা চৌধুরী। আসছে ঈদে মুক্তি পাচ্ছে ছবিটি।