লঞ্চে আগুন: এখনো সন্ধান মেলেনি বরগুনার ২৪ যাত্রীর
ঝালকাঠিতে অগ্নিকাণ্ডের শিকার এমভি অভিযান-১০ লঞ্চের বরগুনাগামী ২৪ যাত্রীর সন্ধান পাননি স্বজনরা। এদের মধ্যে বেশিরভাগের বাড়ি জেলার বিভিন্ন এলাকায়। আর কিছু সংখ্যক নানা কারণে ঢাকা থেকে স্বজনদের বাড়ি আসছিলেন।
জেলা প্রশাসন বলছে, বরগুনার কতজন নিহত হয়েছেন, তা এখনো শনাক্ত করা যায়নি। তবে যেসব যাত্রীর স্বজনরা বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল, ঝালকাঠি হাসপাতাল এবং ঘটনাস্থলে খোঁজ নিলেও সন্ধান পাননি, এমন ২৪ জনের সংবাদ পাওয়া গেছে।
বরগুনা সদর উপজেলার ঢলুয়া ইউনিয়নের খাজুরা গ্রামের রিপন জানান, আগুন দুর্ঘটনায় তার ফুপাতো ভাই খাজুরা এলাকার মইন, ফুপাতো ভাইর ছেলে আবদুল্লাহ এবং তার শালী আছিয়া নিখোঁজ রয়েছেন। হাসপাতাল ও ঘটনাস্থলে খোঁজ নিলেও তাদের খোঁজ মেলেনি।
স্বজনদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যমতে, বরগুনার মাইঠা এলাকার ইদ্রিম খান, নলীর আবদুল হাকিম, চাঁদপুরের মনোয়ারা, পাথরঘাটার টেংরার পপি আক্তার, পাথরঘাটা পৌরসভার তালতলার আবদুর রাজ্জাক, পাথরঘাটার কালমেঘার কালিবাড়ির রাকিব মিয়া, বরগুনা সদরের হাফেজ তুহিনের মেয়ে (নাম অজ্ঞাত) সদরের ছোট আমতলীর জয়নব বেগম, মির্জাগঞ্জ উপজেলার রিনা বেগম ও তার মেয়ে রিমা নিখোঁজ রয়েছেন।
বরগুনা সদরের পরীরখালের মা-মেয়ে রাজিয়া ও নুসরাত, বরগুনা ঢলুয়ার মোল্লারহোড়া গ্রামের একই পরিবারের মা তাসলিমা (৩৫) ও তার মেয়ে মিম (১৫) তানিশা (১২) এবং ছেলে জুনায়দেসহ চারজনের সন্ধান মেলেনি।
বরগুনার তালতলী উপজেলার ছোটবগী গ্রামের মৃত কামাল সিকদারের স্ত্রী রেখা বেগম (৪২) ও তার মেয়ের ঘরের নাতি জুনায়েদ (৭) নিখোঁজ রয়েছে । রেখার দেবর জলির সিকদার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। বরগুনা সদর উপজেলার মানিকখালী গ্রামের আব্দুল হাকিম শরীফ, তার স্ত্রী পাখি বেগম এবং ছেলে ফাইজুল করিমের খোঁজ মেলেনি।
দুর্ঘটনার সময় লঞ্চে থাকা বরগুনার রূপধন এলাকার মাহবুব হোসেন নাসির বলেন, রাত ৩টার দিকে ইঞ্জিনরুম থেকে বিকট বিষ্ফোরণের শব্দ হয়। মুহূর্তে গোটা লঞ্চ ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে যায়। এসময় ঘুমন্ত যাত্রীরা জেগে ওঠে ছোটাছুটি শুরু করেন এবং হৃদয় বিদারক অবস্থার সৃষ্টি হয়। কেউ কেউ নদীতে ঝাঁপ দেয়। আবার অনেকে চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করেন। একপর্যায়ে উদ্ধারে কয়েকটি ট্রলার এগিয়ে আসে। অসংখ্য যাত্রী তাতে উঠে তীরে নামেন। আর অনেকে নদীতে লাফিয়ে পড়েন।
বরগুনা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. জালাল উদ্দীন জানান, এই খবর লেখা পর্যন্ত বরগুনার ৪ জনের মরদেহ শনাক্ত করেছেন স্বজনরা। বাকিদের চিহ্নিত করা এখনও সম্ভব হয়নি। তাছাড়া অনেক মরদেহ আছে যা ডিএনএ পরীক্ষা ছাড়া নাম-পরিচয় নিশ্চিত করা সম্ভব নয়।
এদিকে নিহতের পরিবারকে ২৫ হাজার এবং আহতের সর্বোচ্চ ১৫ হাজার করে টাকা আর্থিক সহায়তা দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে বরগুনার জেলা প্রশাসন। জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান বলেন, ‘যেহেতু লঞ্চটি বরগুনায় আসছিল, যাত্রীদের অনেকেইে এখানকার। আমরা ইতোমধ্যে ঘটনাস্থলে টিম পাঠিয়েছি। নিহতের পরিচয় জানার চেষ্টা করছি।’
এস