আর্কাইভ থেকে বাংলাদেশ

বিকেলে প্রধান বিচারপতির শপথ

দেশের ২৩তম প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী আজ শপথ নেবেন। বৃস্পতিবার (৩০ ডিসেম্বর) তার নিয়োগপত্রে স্বাক্ষর করেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।

এদিকে মুক্তিযুদ্ধ কর্নার উদ্বোধন করে দায়িত্ব ছেড়ে বিদায়ী প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেন, অবসর জীবন একান্তে কাটাবেন তিনি।
 
দেশের ইতিহাসে প্রধান বিচারপতি নিয়োগে এখন পর্যন্ত ৯ বার জ্যেষ্ঠতার লঙ্ঘন হয়েছে বলে জানা গেছে।

বৃহস্পতিবার সংবিধানের ৯৫ (১) অনুচ্ছেদের ক্ষমতাবলে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ তাকে প্রধান বিচারপতি পদে নিয়োগ দেন। এরপরই সন্ধ্যায় আইন মন্ত্রণালয় এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করে। শুক্রবার বিকেল ৪টায় বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি তাকে শপথ পড়াবেন। শপথের পর এ নিয়োগ কার্যকর হবে বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে।
 
প্রধান বিচারপতি হিসেবে হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী  নিয়োগ পাওয়ার পর জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মুহাম্মদ ইমান আলী ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে ছুটিতে গেছেন। আগামী মার্চ পর্যন্ত তার ছুটির আবেদন মঞ্জুর করেছেন বিদায়ী প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন।
        
প্রসঙ্গত, দেশের ২১তম প্রধান বিচারপতি ছিলেন বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা। বিদেশ থেকে তার পদত্যাগের পর ২০১৮ সালের ২ ফেব্রুয়ারি ২২তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান আপিল বিভাগের দ্বিতীয় জ্যেষ্ঠ বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন। প্রায় চার বছর দায়িত্ব পালন শেষে তিনি অবসরে গেলেন। এখন প্রধান বিচারপতি পদে তার স্থলাভিষিক্ত হলেন বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী। তিনি বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান। বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ১৯৫৬ সালে কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার রমানাথপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ৯ ভাইবোনের মধ্যে তিনি চতুর্থ। ১৯৭২ সালে তিনি খোকসা সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ম্যাট্রিক পাস করেন। এরপর সাতক্ষীরা আচার্য্য প্রফুল্ল কলেজে ভর্তি হন। ১৯৭৪ সালে তিনি ওই কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক এবং ১৯৭৬ সালে স্নাতক পাস করেন। এরপর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হন। সেখান থেকে তিনি ১৯৭৮ সালে এমএ ডিগ্রি লাভ করেন। তার পর তিনি ধানমন্ডি ‘ল’ কলেজ থেকে আইন বিষয়ে ডিগ্রি অর্জন করেন।
 
১৯৮১ সালে তিনি ঢাকা আইনজীবী সমিতিতে আইনজীবী হিসেবে যোগ দেন। ১৯৮৩ সালে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে এবং ১৯৯৯ সালের ২৭ মে আপিল বিভাগে আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন। তিনি অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। ২০০১ সালে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে অতিরিক্ত বিচারক হিসেবে নিয়োগ পান। দুই বছর যোগ্যতা ও দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করলেও বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকার ক্ষমতায় এসে তাকে হাইকোর্টের স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ না দিয়ে বাদ দেয়। তার সঙ্গে আরও ৯ জন বিচারপতিকে বাদ দেওয়া হয়।
 
বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ওই বাদ দেওয়ার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন বাদপড়া ১০ বিচারপতি। এরপর হাইকোর্ট ওই বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্তকে অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন। রায়ের পর ২০০৯ সালের ২৫ মার্চ হাইকোর্ট বিভাগে স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীসহ ১০ জন, যা ১০ বিচারপতির মামলা নামে পরিচিত। এরপর ২০১৩ সালের মার্চ মাসে আপিল বিভাগের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন