আর্কাইভ থেকে আইন-বিচার

দেশে গরু আমদানি চেয়ে হাইকোর্টে রিট

সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে আনতে জীবন্ত গরু ও মাংস আমদানি চেয়ে হাইকোর্টে রিট করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২০ জুন) সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো: মাহমুদুল হাসান হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিটটি করেছেন।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ও টিসিবি'র চেয়ারম্যানকে বিবাদী করা রিটে বলা হয়েছে, গরুর মাংস বাংলাদেশর সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের অন্যতম প্রধান খাদ্য। কিন্তু বাজারে গরুর মাংসের দাম অস্বাভাবিক ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে এবং ৭৫০ থেকে ৮৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে এবং প্রতিনিয়ত দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে। গরুর মাংস ইতিমধ্যে নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে।

রিটে আরও বলা হয়েছে, আমদানি নীতি ২০২১-২৪ অনুযায়ী গরুর মাংস একটি আমদানি যোগ্য পণ্য। অপরদিকে "দি ট্রেডিং কর্পোরেশন অফ বাংলাদেশ অর্ডার" ১৯৭২ এর ধারা ১২ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় পণ্য আমদানির মাধ্যমে বাজারে পণ্য সরবরাহ নিশ্চিত করে বাজার মূল্য সহনীয় রাখা টিসিবির আইনি কর্তব্য। কিন্তু টিসিবি বিদেশ থেকে জীবন্ত গরু এবং গরুর মাংস আমদানি না করে তার আইনি কর্তব্য পালনে ব্যর্থ হয়েছে। অপরদিকে দায়িত্বপ্রাপ্ত এসব মন্ত্রণালয় ও সংস্থার ব্যর্থতার জন্য বাজারে গরুর মাংস নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত জনগণের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে।

এর আগে গত ৭ মে গরুর মাংসের মূল্য সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে আনার জন্য ও ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) -এর মাধ্যমে গরুর মাংস আমদানির দাবিতে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়। নোটিশে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ও (টিসিবি) এর চেয়ারম্যানকে বিবাদী করা হয়েছে। রেজিস্ট্রি ডাকযোগে এ নোটিশ প্রেরণ করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোঃ মাহমুদুল হাসান।

নোটিশে বলা হয়েছে, গরুর মাংস বাংলাদেশর সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের অন্যতম প্রধান খাদ্য। কিন্তু বাজারে গরুর মাংসের দাম অস্বাভাবিক ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে এবং ৭৫০ থেকে ৮৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে এবং প্রতিনিয়ত দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে। গরুর মাংস ইতিমধ্যে নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে।

গরুর মাংসের পুষ্টিগুণ উল্লেখ করে নোটিশে বলা হয়েছে, গরুর মাংস খুবই পুষ্টিকর ও খনিজ সমৃদ্ধ খাদ্য। এ প্রসঙ্গে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা চ্যাটজিপিটির (চ্যাটজিপিটি প্লাস, মডেল-4) এর প্রদত্ত তথ্য অনুযায়ী, গরুর মাংস অত্যন্ত পুষ্টিকর একটি খাদ্য। এটি প্রোটিনের সমৃদ্ধ উৎস হিসাবে পরিচিত, যা পাতলা পেশী গঠন এবং রক্ষা করে। প্রয়োজনীয় অ্যামিনো এসিড গরুর মাংসের মধ্যে পর্যাপ্ত পরিমাণে পাওয়া যায় যা শারীরিক কার্যক্রমের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

গরুর মাংসে ভিটামিন B-কমপ্লেক্স (B12, B6, এবং নায়াসিন) যা স্নায়ু ব্যবস্থা ও শক্তি উৎপাদনে সহায়তা করে। এটি লৌহার একটি ভাল উৎস যা অ্যানিমিয়ার ঝুঁকি হ্রাস করে এবং অক্সিজেন বাহনে সাহায্য করে। এছাড়াও, গরুর মাংসে জিঙ্ক, সেলেনিয়াম, ফসফরাস এবং পটাসিয়াম যেমন খনিজ রয়েছে, যা ইমিউন ব্যবস্থা, অস্থির স্বাস্থ্য এবং ডিএনএ সিন্থেসিসের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বলেও নোটিশে উল্লেখ করা হয়।

আইনি নোটিশে আরও বলা হয়েছে, বাংলাদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের অন্যতম প্রধান খাদ্য গরুর মাংসের যোগান ও মূল্য নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার মাধ্যমে সরকার জনগণের খাদ্য নিরাপত্তা সুরক্ষায় ব্যর্থ হয়েছে যা বাংলাদেশের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১৫ এর লঙ্ঘন। অপরদিকে গরুর মাংসের যোগান ও মূল্য নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার মাধ্যমে সরকার সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের পুষ্টি চাহিদা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে যার দরুন সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ যথাযথ পুষ্টি থেকে বঞ্চিত হয়ে সুস্থভাবে বেঁচে থাকার অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে যা আমাদের সংবিধানের মৌলিক অধিকার ৩১/৩২ এর সরাসরি লঙ্ঘন।

নোটিশে বলা হয়েছে, আমদানি নীতি ২০২১-২৪, অনুযায়ী গরুর মাংস একটি আমদানি যোগ্য পণ্য । অপরদিকে দিকে “দি ট্রেডিং কর্পোরেশন অফ বাংলাদেশ অর্ডার” ১৯৭২ এর ধারা ১২ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় পণ্য আমদানির মাধ্যমে বাজারে পণ্য সরবরাহ নিশ্চিত করে বাজার মূল্য সহনীয় রাখা টিসিবির আইনি কর্তব্য । কিন্তু টিসিবি বিদেশ থেকে গরুর মাংস আমদানি না করে তার আইনি কর্তব্য পালনে ব্যর্থ হয়েছে। অপরদিকে দায়িত্বপ্রাপ্ত এসব মন্ত্রণালয় ও সংস্থার ব্যর্থতার জন্য বাজারে গরুর মাংস নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত জনগণের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। এর ফলে বাংলাদেশ সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১৫ ও মৌলিক অধিকার ৩১/৩২ লঙ্ঘন হচ্ছে।

 

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন