আর্কাইভ থেকে অপরাধ

ইউটিউব দেখে তৈরি করেছেন ১ লাখ জালটাকা, খরচ মাত্র ২ হাজার টাকা

ফটোশপ এবং গ্রাফিক্সের কাজ জানতেন মো. মেহেদী হাসান। এরপর ইউটিউব দেখে শেখেন জাল টাকা বানানোর প্রক্রিয়া। ফেসবুকের মাধ্যমে শাহজাদা ও তুষারের সহযোগিতায় জালটাকা তৈরি করে কেনাবেচা শুরু করেন। ৫ লাখ টাকা, ৬ লাখ টাকার চালানসহ চারটি চালান দেন তারা। মাত্র ২ হাজার টাকা খরচ করে তৈরি করেন এক লাখ টাকার জালনোট।

এমনই এক চক্রের তিন সদস্যকে সোমবার (১৯ জুন) রাতে রাজধানীর উত্তরখান থানা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন মো. শাহজাদা আলম (৩৩), মো. মাহেদী হাসান (১৯), আবু হুরায়রা ওরফে তুষার (২২)।

গ্রেপ্তারের সময় তাদের হেফাজত থেকে ৯০০টি ২০০ টাকার জালনোট এবং ২০০টি ১০০ টাকার জালনোট মিলিয়ে সর্বমোট ২ লাখ টাকার জালটাকা উদ্ধার করা হয়। এছাড়া জালনোট প্রস্তুতের কাজে ব্যবহৃত একটি করে ল্যাপটপ, ল্যাপটপ ব্যাগ, কিবোর্ড, পেনড্রাইভ, দুটি মাউস, ল্যাপটপ চার্জার, ১০টি বিশেষ মার্কার পেন, টাকা ছাপানোর কাজে ব্যবহৃত ২টি বিশেষ প্রিন্টার, টাকার ডিজাইন প্রিন্ট করার জন্য চারটি টোনার কার্টিজসহ অন্যান্য সামগ্রী জব্দ করা হয়।

মঙ্গলবার (২০ জুন) বেলা সোয়া ১২টায় রাজধানীর টিকাটুলিতে র‌্যাব-৩ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‌্যাব-৩ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ।

তিনি বলেন, ৫০টি নোটের একটি বান্ডিল তৈরি করতে তাদের আনুমানিক ২০০ টাকা খরচ হয়। অর্থাৎ একলাখ টাকা তৈরিতে আনুমানিক খরচ হয় ২,০০০ টাকা। এসব তৈরিকৃত জালনোট গুলো বিক্রয়ের জন্য শাহজাদা এবং তুষার মিলে ফেসবুকে জালটাকা ক্রয়-বিক্রয়ের বিভিন্ন পেজ ও গ্রুপের পোস্টে জালটাকা ক্রয়ে আগ্রহী কমেন্টকারীদের সঙ্গে ইনবক্সে যোগাযোগ করে। পরে তারা ফোনে যোগাযোগ করে সরাসরি সাক্ষাতের মাধ্যমে জালটাকা ডেলিভারির কাজ করে থাকে। এ চক্রটি বিগত সময়ে জালটাকার বড় ধরনের চারটি ডেলিভারি দিয়েছে। গত ১৫ মে তারা এ গ্রেড জালনোট গ্রুপের মাধ্যমে পাঁচ লাখ টাকার জালনোটের একটি ডেলিভারি দেয়। ১৯ মে দুই লাখ টাকার জালনোট ডেলিভারির জন্য প্রস্তুতিকালীন টাকা এবং মেশিন ও সরঞ্জামাদিসহ র‌্যাবের কাছে ধরা পড়ে।

গ্রেপ্তারদের বিষয়ে তিনি বলেন, শাহজাদা চক্রের মূলহোতা। ২০০৮ সালে বিজিবিতে যোগদান করে এবং ২০২০ সালে নৈতিক স্খলন ও শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে চাকরিচ্যুত হয়। এরপর থেকে বিভিন্ন অনৈতিক কার্যক্রম ও চোরাচালানের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে। ২০২২ সাল থেকে জালটাকা প্রস্তুতকারী চক্রের সঙ্গে কাজ করে আসছে।

এছাড়া তুষার গাজীপুরের কাশিমপুরে গার্মেন্টসে চাকরি করতো। বর্তমানে চাকরি ছেড়ে দিয়ে জালটাকার ডেলিভারির কাজ করে থাকে।

ঈদকে কেন্দ্র করে তারা জাল টাকা ছাপাতো। রাজধানীর বিভিন্ন বাজার কেন্দ্র করে তারা এই টাকা ছাপান। আর টাকা ছাপানোর কাজে কম খরচ হয় বলে ২০০ টাকার জালনোট বেশি ছাপান বলে জানান মহিউদ্দিন। এছাড়া গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও জানান তিনি।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন