আর্কাইভ থেকে বাংলাদেশ

কমলাপুর পশুর হাটের প্রস্তুতি চলছে

পবিত্র ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে প্রস্তুত হচ্ছে রাজধানীর কমলাপুরের ঐতিহ্যবাহী পশুর হাট। সোমবার (১৯ জুন) হাট প্রস্তুতের কাজ শুরু হয়েছে। হাট প্রস্তুত হলে শুক্রবার থেকে এই হাটে কোরবানির পশু বিক্রি হবে। প্রস্তুত না হওয়ায় এই হাটে এখনো পশু আসা শুরু করেনি।

মঙ্গলবার (২০ জুন) রাজধানীর কমলাপুরের ঐতিহ্যবাহী পশুর হাট ঘুরে ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

সরেজমিন দেখা গেছে, রাজধানীর কমলাপুর ও মুগদার সংযোগ সড়কে হাটের প্রধান প্রবেশপথ তৈরি করা হয়েছে। অপরদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের পাশ দিয়ে ও গোপীবাগ হয়ে পশু প্রবেশের পথ রয়েছে। তবে প্রধান প্রবেশ পথে হাসিল দেওয়ার কাউন্টার থাকলেও অন্য প্রবেশপথগুলোতে এখনো কাউন্টার তৈরি করা হয়নি।

দেখা গেছে, কমলাপুরের উট খামারের আগে, দেওয়ানবাগ শরীফের সামনে ও গোপীবাগের প্রবেশমুখে হাসিল সংগ্রহের কাউন্টার তৈরি করা হয়েছে। তবে হাট শুরুর আগে কাউন্টারের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াবে ২৫ থেকে ৩০টিতে।

হাট মালিক ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঈদের কমপক্ষে ১০ দিন আগেই রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশের স্থায়ী ও অস্থায়ী পশুর হাটগুলো সাজানোর প্রস্তুতি নেন ইজারাদাররা। বেশির ভাগ হাট প্রস্তুতের কাজ শেষ দিকে। কমলাপুরের অস্থায়ী এই পশুর হাটের প্রস্তুতিও এখন শেষ পর্যায়ে। এদিকে, সাদেক হোসেন খোকা কনভেনশন সেন্টারে হাট সংশ্লিষ্ট কর্মীদের অস্থায়ী থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

হাট পরিচালনা কমিটির সমন্বয়ক সিরাজ জানান, বৃহস্পতিবার (২২ জুন) থেকে হাটে পশু আসবে। শুক্রবার (২৩ জুন) থেকে পশু বিক্রি শুরু হবে। মূল বিক্রি আসলে চার থেকে পাঁচ দিনের মধ্যে হয়। এ বছর ২০-২৫টি স্থায়ী হাসিল কাউন্টার এবং ৫-৭টি অস্থায়ী হাসিল কাউন্টার থাকবে। সব মিলিয়ে এ বছর প্রায় ৩০০ জন সেচ্ছাসেবী কাজ করবেন। শতকরা ৫ টাকা হারে হাসিল সংগ্রহ করা হবে।

তিনি বলেন, হাটের ইজারা এ বছর অনেক। আমাদের বেশি টাকা দিয়ে হাট ইজারা নিতে হচ্ছে। কিন্তু সে অনুযায়ী হাসিলের রেট বাড়াতে পারছি না।

সিরাজ বলেন, এ বছর ডিজিটাল ব্যাংকিং ব্যবস্থা থাকবে। গরু-ছাগলের জন্য চিকিৎসার ব্যবস্থাও থাকবে। এছাড়া পাইকারদের জন্য থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা থাকছে। হাটের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সিসি ক্যামেরা দিয়ে সার্বক্ষণিক মনিটরিং করা হবে। শুক্রবার থেকে পুরোদমে হাট শুরু হবে। এছাড়া ক্রেতা-বিক্রেতাদের বিভিন্ন প্রয়োজনে আমাদের টিম জরুরি ভিত্তিতে সহায়তা করবে।

এর আগে পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে সার্বিক আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত সভা শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, সারা দেশের সড়কে-মহাসড়কে হাট বসা নিষেধ থাকবে। পশুহাটে পশু চিকিৎসক থাকবেন। পশু কোনো নির্ধারিত হাটে নেওয়ার জন্য জোর করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। হাসিলের পরিমাণ সাইন বোর্ডে লেখা থাকতে হবে। সুনির্দিষ্ট তথ্য ছাড়া কোরবানির পশুবাহী যানবাহন থামানো যাবে না। পশুর হাটে অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প রাখা হবে, জাল নোট শনাক্ত করার মেশিন ও এটিএম বুথও থাকবে।

মন্ত্রী বলেন, সিসি ক্যামেরার আওতায় থাকবে পশুর হাট। এ বছর সারা দেশে কমবেশি চার হাজার ৩৯৯টি পশুর হাট বসবে বলে আমাদের কাছে খবর এসেছে। এসব হাটে নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য ব্যবস্থা নেয়া হবে। সড়ক-মহাসড়কে যাতে কোনো প্রকারে হাট না বসে, আমরা সে ব্যবস্থাও নেয়া হবে। পশুবাহী যানটি কোন হাটে যাচ্ছে তা সামনের ব্যানারে লেখা থাকবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কিংবা অন্য কেউ পশুবাহী যানবাহন সড়ক-মহাসড়ক কিংবা নৌপথে থামতে পারবে না সুনির্দিষ্ট তথ্য ছাড়া। কেউ থামালে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন