আর্কাইভ থেকে দেশজুড়ে

ময়লার ভাগাড়ে বস্তাবন্দি জীবন্ত শিশু

সাভারের আশুলিয়ার জিরাবো এলাকার এক ময়লার ভাগাড় থেকে বস্তাবন্দি অবস্থায় হুমায়রা নামে আড়াই বছর বয়সী একটি শিশুকে উদ্ধার করেছে স্থানীয়রা। বর্তমানে শিশুটি ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ইমারজেন্সি সেন্টারে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

শনিবার (২৪ জুন) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নিখোঁজ হয় সে। পরে বাসার কিছুটা দূরে দুপুর আড়াইটার দিকে বস্তার ভেতর থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়। সে সময় হুমাইরার গলায় গামছা পেঁচানো ছিল।

এরপর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালের ওয়ানস্টপ ইমার্জেন্সি সেন্টারে ভর্তি করে।

শিশুটির বাবা আজিজুল ইসলাম বলেন, তার মেয়েটা গতকাল সকালে নিখোঁজ হয়। বেলা আড়াইটার দিকে ইগনাইট নাইট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক জয়নাল আবেদিন তুহিনের মাধ্যমে খবর পান। তাদের বাসার কাছে স্কুল ও একটি বাড়ির মাঝখানে পরিত্যক্ত একটি গলি আছে। সেখানে এলাকার লোকজন ময়লা ফেলে। ওই ডাস্টবিন থেকে বস্তার মুখ বাঁধা অবস্থায় তার সন্তানকে ফেলে রাখা হয়েছিল। বস্তার মুখ খুলে তার মেয়েকে গলায় গামছা প্যাঁচানো অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।

তিনি আরও জানান, ৬ মাস আগে তার স্ত্রীর ভাইয়ের ছেলেকে প্রতিবেশী শাহিনুর ভাতের ফ্যান ঢেলে দিয়ে তার শরীরের ঝলসে দেয়। তাদের বাড়িওয়ালা সালিশ বৈঠক ডেকে ওই ঘটনা মীমাংসার চেষ্টা করলেও তা ব্যর্থ হয়। তার সম্বন্ধি তারে ছেলের চিকিৎসার টাকা চাইতে গেলে শাহিনুর ও তার পক্ষের লোকজন তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। ওই ঘটনার জের ধরেই ওরা তার শিশু সন্তানকে হত্যা ও গুম করার উদ্দেশ্যে গলায় গামছা পেঁচিয়ে বস্তাবন্দি করে ফেলে রেখেছিলো।

ইগনাইট স্কুলের শিক্ষক জয়নাল আবেদীন তুহিন জানান, স্কুলের পেছনে সরু গলিতে একটি প্লাস্টিকের সাদা বস্তা দেখতে পায় টোকাইরা। পরে সেটি স্কুলের সামনে নিয়ে আসলে বস্তার ভেতর দেখা যায় একটি শিশু। তার গলায় গামছা দিয়ে গিট দেয়া। পরে তারা সঙ্গে সঙ্গে গলার গামছার গিট খুলে মুখের সাহায্যে শিশুকে অক্সিজেন দেয়ার চেষ্টা করি। দেখা যায়, শিশুটি একপর্যায়ে শ্বাস-প্রশ্বাস নিচ্ছে। এর মধ্যেই শিশুটির পরিবার সেখানে উপস্থিত হয়। তখনই দ্রুত তাকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে।

ঢামেক পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মোহাম্মদ বাচ্চু মিয়া বলেন, শিশুটিকে বর্তমানে ওয়ান স্টপ ইমারজেন্সি সেন্টারে (ওসেক) রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। বিষয়টি আশুলিয়া থানা পুলিশকে জানানো হয়েছে।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন