আর্কাইভ থেকে বাংলাদেশ

নাটকীয় ম্যাচ জিতলো ওয়েস্ট ইন্ডিজ

তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে আয়ারল্যান্ডকে ২৪ রানে হারিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। শনিবার (০৮ জানুয়ারি) জ্যামাইকায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ অলআউট হয় ২৬৯ রানে। আইরিশরা রান তাড়া করতে নেমে থামে ২৪৫ রানে। 

স্যাবাইনা পার্কের উইকেটে শুরুতে পেসারদের জন্য সহায়তা ছিল খানিকটা। আইরিশ বোলাররা আঁটসাঁট লেংথে বল করে ডানা মেলতে দেননি ক্যারিবিয়ান ব্যাটসম্যানদের। প্রথম ৬ ওভারে বাউন্ডারি আসে কেবল ২টি। অভিষিক্ত ওপেনার জাস্টিন গ্রিভস আউট হন ২৪ বলে ৭ রান করে। আরেক ওপেনার শেই হোপ কিংবা তিনে নামা নিকোলাস পুরান। রানের গতি বাড়াতে পারেননি দু’জনের কেউ। ১৩ রান করেন পুরান।

১৭ ওভার উইকেট কাটিয়ে হোপ আউট হয়ে যান ৪৪ বলে ২৯ করে। এরপর রোস্টন চেইস ফেরেন এক রানে। টানা তিন ওভারে উইকেট হারিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সংগ্রহ ১৯ ওভারে ৪ উইকেটে ৬২ রান।  

চারে নামা ব্রুকস তখনও উইকেটে নতুন। তার সঙ্গী হন পেলার্ড। একটু সময় নিয়ে থিতু হন দুজন। ইনিংসের মাঝপথে নড়বড়ে হয়ে পড়া দলকে উদ্ধার করেন এই দুজন ১৩৬ বলে ১৫৫ রানের দারুণ জুটি গড়ে।  সেই ৪৪ বছর আগে সেঞ্চুরিতে অভিষেক রাঙিয়েছিলেন ডেসমন্ড হেইন্স। এরপর আর ওয়ানডে অভিষেকে শতরান পাননি ইন্ডিজের কেউ। এবার খুব কাছে গিয়েও পারলেন না শামার ব্রুকস। দারুণ খেলে নিজেকে অবশ্য জানান দিলেন তিনি। তার সঙ্গে অধিনায়ক কাইরন পোলার্ডের দুর্দান্ত জুটির পর বোলারদের সৌজন্যে স্বস্তির জয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ শুরু করল সিরিজ। ৩৩ বছর বয়সে ওয়ানডে অভিষেকে ব্রুকস খেলেন ৮৯ বলে ৯৩ রানের ইনিংস। ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে এই সংস্করণে অভিষেকে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ইনিংস এটি। ব্রুকসের সঙ্গে ব্যাট হাতে এ দিন গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে পোলার্ড করেন ৬৬ বলে ৬৯। 

আয়ারল্যান্ড রান তাড়ায় বড় ধাক্কা খায় শুরুতেই। অভিজ্ঞ উইলিয়াম পোর্টারফিল্ডকে রানের দেখা পেতে দেননি নতুন বল হাতে নেওয়া বাঁহাতি স্পিনার আকিল হোসেন। দ্বিতীয় উইকেটে অবশ্য ভালো জুটি গড়েন অধিনায়ক অ্যান্ডি বালবার্নি ও তিনে নামা ম্যাকব্রাইন। রান রেট গতিময় না হলেও উইকেট ধরে রেখে দলকে এগিয়ে নেন দু’জন। ওডিন স্মিথের বল হেলমেটে লাগার কিছুক্ষণ পর ম্যাকব্রাইন ৩৪ রানে মাঠ ছাড়ায় জুটি থামে ৬১ রানে। এরপর আরও একটি ভালো জুটি পায় আয়রিশরা। 

এবার বালবার্নিকে সঙ্গ দেন হ্যারি টেক্টর। শতরানের জুটিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে চাপে রাখেন দুজন। শেষ ১৪ ওভারে আয়ারল্যান্ডের প্রয়োজন পড়ে ১০৫ রান। উইকেট তখনও বাকি ৮টি। কিন্তু ৭১ রান করে বালবার্নির বিদায়ে ম্যাচের মোড় ঘুরে যাওয়ার শুরু। পরের ওভারে টেক্টর উইকেট বিলিয়ে আসেন ৬৮ বলে ৫৩ করে স্মিথের বলে।

এরপর স্নায়ুর চাপ ধরে রাখতে না পেরে দ্রুত একের পর এক উইকেট হারাতে থাকে আইরিশরা। ৩১ রানের মধ্যে ৫ উইকেট হারিয়ে ম্যাচ থেকেই একরকম ছিটকে পড়ে তারা। জর্জ ডকরেল কিছুক্ষণের জন্য আশা জাগালেও বিদায় নেন ২৫ বলে ৩০ করে। শেষ দিকে অ্যাডায়ার ৯ বলে ৩ ছক্কায় ২১ করে ব্যবধান কাম কিছুটা। জয়ের ভিত গড়ে দেওয়া ইনিংসের জন্য ম্যাচের সেরা শামার ব্রুকস। ওয়ানডে অভিষেকে ম্যাচ সেরা হওয়া চতুর্থ ক্যারিবিয়ান ক্রিকেটার তিনি। আগের তিনজন ডেসমন্ড হেইন্স, হেন্ডারসন ব্রায়ান ও ফিডেল এডওয়ার্ডস।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের এই জয়ে আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপ সুপার লিগে দুই দলের পয়েন্ট এখন পঞ্চাশ। তবে আয়ারল্যান্ড খেলে ফেলেছে ১৬ ম্যাচ, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১০টি।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ৪৮.৫ ওভারে ২৬৯ (হোপ ২৯, গ্রিভস ৭, পুরান ১৩, ব্রুকস ৯৩, চেইস ১, পেলার্ড ৬৯, হোল্ডার ১৬, শেফার্ড ২, স্মিথ ১৮, জোসেফ ০, আকিল ৫*; লিটল ১০-১-৪৬-১, অ্যাডায়ার ৮.৫-১-৩৮-৩, ইয়াং ৯-০-৫৬-৩, ক্যাম্পার ১০-০-৪৭-১, ম্যাকব্রাইন ৮-০-৫২-২, ডকরেল ৩-০-২৩-০)।

আয়ারল্যান্ড: ৪৯.১ ওভারে ২৪৫ (পোর্টারফিল্ড ০, বালবার্নি ৭১, ম্যাকব্রাইন ৩৪ (আহত অবসর), টেক্টর ৫৩, ক্যাম্পার ৬, টাকার ৯, ডকরেল ৩০, ডেলানি ৬, রক ৫, অ্যাডায়ার ২১*, ইয়াং ০, লিটল ০; হোল্ডার ১০-১-৪৮-১, আকিল ১০-০-৩৫-১, জোসেফ ১০-০-৫৫-৩, শেফার্ড ৯-০-৫-৩, স্মিথ ৫.১-০-২৬-২, চেইস ৫-০-৩০-০)।

হাসিব মোহাম্মদ

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন