আর্কাইভ থেকে আন্তর্জাতিক

ফ্রান্সে তরুণ নিহতের প্রতিবাদে জ্বলছে গাড়ি, বাড়িতেও হামলা

বিক্ষোভে উত্তাল ফ্রান্স। পুলিশের গুলিতে ১৭ বছর বয়সী অপ্রাপ্তবয়স্ক তরুণ নিহতের প্রতিবাদে সংঘাত ছড়িয়ে পড়েছে রাজধানী প্যারিসের আশপাশের শহরগুলোতেও। যত সময় গড়াচ্ছে শান্ত হওয়ার বদলে আরও ভয়াবহ হচ্ছে পরিস্থিতি ।

চার দিনের বিক্ষোভে ৪৯২টি ভবনে হামলা হয়েছে। আগুন দেয়া হয় দুই হাজার গাড়িতে। এদিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সমান তালে চলছে গণগ্রেপ্তার। এ পর্যন্ত আটক হয়েছেন ৮৭৫ জন।

শুক্রবার (৩০ জুন) জরুরি বৈঠক করেছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ। এতে তিনি বিক্ষোভ উসকে দেয়ার জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে দায়ী করেন। তিনি আহ্বান করেন, মা-বাবা যেন বিক্ষোভকারী তরুণদের সঙ্গে কথা বলে তাদের শান্ত করেন এবং তাদের ঘরে অবস্থান নিশ্চিত করেন।

অপরদিকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, বৃহস্পতিবার রাতভর বিভিন্ন স্থানে সহিংসতা থামাতে গিয়ে আড়াই শতাধিক পুলিশ কর্মকর্তা আহত হয়েছেন। গ্রেপ্তার হওয়াদের অর্ধেকই প্যারিস অঞ্চলের বাসিন্দা এবং কিশোর-কিশোরী, তরুণ-তরুণী।

প্রধানমন্ত্রী এলিজাবেথ বোর্নে চলমান সহিংসতাকে ‘অসহনীয় ও অমার্জনীয়’ উল্লেখ করে বলেছেন, আইনশৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় সরকার সব ধরনের বিকল্প পর্যালোচনা করছে।

পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কায় বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় রাত ৯টা থেকে প্যারিসের বাস ও ট্রেন সেবা বন্ধের ঘোষণা দেন অঞ্চলের প্রধান ভালেরি পেক্রিস।

ফ্রান্স, জ্বলছে গাড়ি

এছাড়া ইয়ে-দে-ফ্রান্স অঞ্চলের শহর ক্লামার্তে বৃহস্পতিবার কারফিউ জারি করা হয়। সোমবার পর্যন্ত এই কারফিউ জারি থাকবে। প্রতিদিন রাত ৯টা থেকে পর দিন ভোর ৬টা পর্যন্ত কার্যকর থাকবে এই বিশেষ প্রশাসনিক অবস্থা।

লিলে ও ট্যুরসের মতো আরও অনেক শহরে বাস-ট্রেন সেবা বন্ধের ঘোষণা দেয়া হয়। কিছু শহরে বিক্ষোভ-সমাগমেও নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়।

এদিকে ঘটনার পরপরই ৩৮ বছর বয়সী অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তাকে হেফাজতে নেয়া হয়েছে। তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।

মঙ্গলবার সকালে প্যারিসের উপকণ্ঠ ন্যান্তেরে এলাকায় নাহেল এম নামের ওই তরুণকে পুলিশের গুলি করার ঘটনার ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। ট্রাফিক আইন ভাঙার অভিযোগে গাড়ি থামাতে নির্দেশ দেয় পুলিশ। কিন্তু ওই তরুণ গাড়ি না থামিয়ে পালানোর চেষ্টা করলে পুলিশ গুলি ছুড়লে তার মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ উঠে।

এদিকে বিক্ষোভ সহিংসতায় পরিণত করার পেছনে নিহতের স্বজনদের বিশেষ করে মায়ের নেতৃত্ব রয়েছে বলে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের খবরে উঠে আসছে। অভিযোগ উঠেছে, এ কাজে তারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে উত্তেজনাকর প্রচার করেন।

সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন