আর্কাইভ থেকে পরামর্শ

নিজেকে খুশি রাখার উপায়

কে না চায় সব সময় হাসি-খুশি থাকতে! কিন্তু কিভাবে সব সময় থাকা যায় হাসি-খুশি; সেটা নিয়ে কি কখনো চিন্তা করেছেন? আমাদের চারপাশেই এমন কিছু মানুষ আছেন, যারা আনন্দে থাকেন সব সময়ই। এই মানুষগুলো কেন সবসময়ই খুশি থাকে? কী এমন আছে যা তাদের সর্বদা আনন্দে রাখতে সাহায্য করছে। এমন কী অনুশীলন করা যেতে পারে যেটা একজন মানুষকে সব সময়ই রাখবে হাসি-খুশি। আসুন জেনে নেই কিছু উপায়-

১. আফসোস করবেন না : আফসোস করাটা একজন মানুষের অখুশি থাকার অন্যতম একটি কারণ। যা নেই বা যে কাজটা করা যাচ্ছে না সেটা নিয়ে আফসোস করা যাবে না। একজন স্কুলের দৌঁড়ে প্রথম হতে পারেননি, কিন্তু তিনি হয়তো খুব ভালো কম্পিউটার জানেন। আপনার ভালো মোবাইল নেই, কিন্তু এমন কিছু বন্ধু আছেন যারা সব পরিস্থিতেই পাশে থেকে হাতে হাত রেখে পথ চলতে বদ্ধপরিকর। ভাবুন তো অন্যের চেয়ে আপনি কত সৌভাগ্যবান!

২. কম আশা : মানুষ কষ্ট তখনই পায় যখন নিজের ভাবনার সাথে বাস্তবটা মিলে না। অতিরিক্ত আশার ফলাফল প্রায় সময়ই অনেক কষ্টদায়ক হয়। সর্বদা আনন্দে থাকা মানুষগুলো কখনোই খুব বেশি আশা করেন না অন্যের কাছ থেকে। আর অতিরিক্ত আশা না থাকায় আশা পূরন না হবার কষ্টও থাকেনা তাদের ভেতরে খুব একটা।

৩. দিবাস্বপ্ন : খেয়াল করলে দেখা যাবে আমাদের পাশে থাকা এই হাসিখুশি মানুষগুলো খুব বেশি বাস্তববাদী। আপাতদৃষ্টিতে না হলেও মনে মনে তাঁরা সত্যিকে সত্যি বলেই মেনে নেন। তাঁরাও স্বপ্ন দেখেন তবে এটি বাস্তব স্বপ্ন। আর তাই এই মানুষগুলোর দেখা দু-একটা সত্যিকারের স্বপ্ন ভঙ্গ  হলেও খুব একটা কষ্ট পান না তাঁরা। 

৪. খেলাধুলা করুন : যে কোনো বয়সের মানুষকে খুশি রাখতে খেলাধুলার কোনো বিকল্প নেই। সারাদিনের কাজের ফাঁকে অল্প কিছু সময় খেলাধুলার জন্য ব্যয় করলে শরীর ও মন দুটোই ভালো থাকবে। 

৫. বন্ধুদের সাথে আড্ডা : আড্ডা বিষয়টা একসময় অনেক প্রচলিত ছিল। একজন মানুষকে মুহূর্তেই চাঙ্গা করে তুলতে বন্ধুদের সাথে  
আড্ডার কোনো বিকল্প নেই। এতে মন-মেজাজ ভালো থাকবে ও নিজেকে আলাদা করে খুশি রাখার অন্য উপায় খুঁজতে হবে না।

৬. ইতিবাচক চিন্তার অনুশীলন করা: ইতিবাচক চিন্তা আমাদের কাজকে যতখানি সামনে এগিয়ে নিতে সাহায্য পারবে, আর কিছুই এতোখানি পারবে না। ইতিবাচক চিন্তা একজন মানুষকে খুশি রাখতে পারে খুব সহজেই। যদি আজ কোনো ব্যর্থতা আসে, তাহলে কাল সাফল্য আসবে অবশ্যই - এটা মাথায় রেখেই সামনে এগিয়ে যেতে হবে। 

৭. আলিঙ্গন করুন প্রিয় মানুষটিকে: প্রিয় মানুষটিকে দিনে অন্তত পাঁচ বার আলিঙ্গনের চেষ্টা করুন। হতে পারে বাবা-মা, স্ত্রী বা সন্তান। আলিঙ্গন একজন মানুষকে অনেক বেশি খুশি থাকতে পারে।

৮. পৃথিবীর সবচেয়ে সুখি ভাবুন নিজেকে : নিজেকে পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মানুষ ভাবুন। নিজের ওপর বিশ্বাস রাখুন। দেখেবেন খুশি থাকতে পারবেন অনায়াসেই।

৯. খুঁজে বের করুন কোন কাজটি আপনাকে খুশি করে : প্রত্যেক মানুষই নিজস্ব চাহিদা অনুযায়ী খুশি হওয়ার আলাদা আলাদা কাজ করে থাকেন। কোন কাজটি আপনাকে মানসিকভাবে অনাবিল আনন্দ দেয় সেটি খুঁজে বের করে, কাজটি করুন। মনের ইচ্ছাকে দমিয়ে রাখলে হাসি খুশি জীবন হারিয়ে যায়। 

১০. অন্যকে খুশির কারণ ধরে নেবেন না : নিজের মন বা মেজাজ ভালো থাকা কিংবা খুশির সাথে অন্য কাউকে না জড়ানোই ভালো। প্রতিটি মানুষই আলাদা। তাই নিজের জন্য খুশি থাকতে হবে। অন্য কাউকে খুশি করার জন্য কোন কাজ করলে তা আপনাকে খুশি দেবে না।

১১. অতীত নিয়ে ভাববেন না : অতীত নিয়ে পরে থাকলে বর্তমান ও ভবিষ্যৎ দুটোই নষ্ট হয়ে যায়। হারিয়ে যায় মুখের হাসি ও জীবনের আনন্দ। যা হবার তা হয়ে গেছে। ‘কী করতে পারতেন’ তা নিয়ে না ভেবে ‘কী করতে পারবেন’ তা নিয়ে ভাবুন। জীবনে আনন্দ ফিরে আসবে।

১২. নিজেকে দোষ দেবেন না : নিজেকে বা অন্যকে কখনো দোষ দেবেন না। ভুল তো হতেই পারে। চেষ্টা করুন যে ভুল হয়েছে, ভবিষ্যতে তার পুনরাবৃত্তি না ঘটাতে।   

১৩. হতাশ হবে না : আমাদের জীবনে অনেক ধরনের শখ আল্লাদ থাকে, কিন্তু সব শখ কি কখনো পূরণ হয়! তা নিয়ে হতাশ হওয়ার কোণ কারণ নেই। বিশ্বাস করুন যা পাবেন তা আপনার জন্য শ্রেষ্ঠ উপহার। আর মনে মনে গাইবেন- ‘ যা কিছু পেয়েছি কাছে তাইই সঞ্চয়, যা কিছু পেলাম নাগো সে আমার নয়’।

১৪. সবাইকে সুখী রাখুন : আপনার মাধ্যমে যদি সবাই সুখী হয়। তাহলে তাদের আনন্দ দেখেই আপনি খুশি থাকতে পারবেন।

১৫. সুস্থ থাকুন : শারীরিকভাবে সুস্থ থাকার চেষ্টা করতে হবে। শরীর অসুস্থ থাকলে কখনো হাসি খুশি থাকা যায় না।

অনন্যা চৈতী

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন