আর্কাইভ থেকে জাতীয়

নির্বাচন প্রতিহত করার অধিকার কারও নেই : তথ্যমন্ত্রী

নির্বাচনের পরিবেশ কেউ নষ্ট করছে কী না সেটা এখন দেখার বিষয়। কেউ যদি নির্বাচন প্রতিহত করার ঘোষণা দেয় সেটি নির্বাচনের পরিবেশ নষ্ট করার সামিল। নির্বাচন যে কেউ বর্জন করতে পারে, কিন্তু নির্বাচন প্রতিহত করার অধিকার কারও নেই। বলেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ

সোমবার (২৪ জুলাই) দুপুরে সচিবালয়ে বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরামের (বিএসআরএফ) নব নির্বাচিত কমিটির সঙ্গে সৌজন্য বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন।

বাংলাদেশের নির্বাচন পর্যবেক্ষণে বিদেশি প্রতিনিধি দল আসবে সে প্রশ্নের জবাবে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, প্রতিনিধি দল আসা তো ভালো। বাংলাদেশের নির্বাচন কেমন হবে সেটা দেখার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করছে। আমরাও চাই তারা আসুক, নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করুক।

মন্ত্রী বলেন, আপনারা দেখেছেন সিটি করপোরেশন নির্বাচন কত সুষ্ঠু হয়েছে এবং একটা ঘুষিকে যেভাবে গণমাধ্যমে নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। পশ্চিম বাংলায় যে ৪০ জন মারা গেছে। আর আমাদের এখানে একটা ঘুষি মেরেছে। তাহলে পরিবেশ কোথায় ভালো?’ মন্ত্রী পাল্টা প্রশ্ন করেন।

ঢাকা ১৭ এর নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, কেন্দ্রের বাইরে একজন প্রার্থীকে হেনস্থা করা হয়েছে। সেটা কোনোভাবেই সমীচীন নয়। আমরা সেটার নিন্দা জানিয়েছি। সেখানে আটজন গ্রেপ্তারও করা হয়েছে। এটাই প্রমাণ করে বাংলাদেশে নির্বাচনের পরিবেশ কতটা শান্তিপূর্ন এবং আইন শৃঙ্খলা বাহিনী কতটা তৎপর।

গেলো রোববার (২৩ জুলাই) বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সংবাদ সম্মেলন সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে হাসান মাহমুদ বলেন, মির্জা ফকরুলকে অনুরোধ জানাব পেছনে ফিরে তাকানোর জন্য, ওনারা যখন ক্ষমতায় ছিলেন তখন ৫০ লাখ মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করতেন। এখন ১৩ কোটি মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করেন। এখন গ্রামের গৃহবধু, স্কুলের শিক্ষার্থী, রিক্সাওয়ালা, ক্ষেতে কাজ করা ব্যক্তিও ইন্টারনেট ব্যবহার করেন। ইন্টারনেটকে সার্বজনীন করেছে বর্তমান সরকার। ২০০৮ সালে আমাদের শ্লোগানই ছিল ডিজিটাল বাংলাদেশ। কারণ ডিজিটাল বাংলাদেশের অন্যতম লক্ষ ছিল সবার কাছে ইন্টারনেট সহজলভ্য করা। গ্রামে গ্রামে ব্রডব্যান্ড সংযোগ দেয়া।

তিনি আরও বলেন, যারা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বসে সরকারের বিরুদ্ধে, সরকারের মন্ত্রীদের, সরকারি দলের নেতাদের চরিত্রহনন করে তাদের সঙ্গে নিয়মিত বৈঠক করেন তারেক রহমান। এটা কেবল ইন্টারনেট সহজলভ্য হওয়ার কারণে করতে পারছে যা কখনও সমীচিন না। এগুলো ডিজিটাল অপরাধ। ডিজিটাল অপরাধ নিয়ন্ত্রন করার জন্য সারা পৃথিবীতে আইন আছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন সম্প্রতি একটি আইন পাস করেছে। সেখানে অনেক দেশ সায় দিয়ে আইন পাস করেছে। আমরা এখনও করিনি।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফকরুল ইসলাম আলমগীর ডিজিটাল অরাধীদের পক্ষে সাফাই গাওয়ার জন্য রোববার সংবাদ সম্মেলন করছেন। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের উচিত সরকারকে ধন্যবাদ জানানো। কারণ তিনি ভিডিও কনফারেন্সে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন। দলের চেয়ারম্যানের সঙ্গে মিটিং করেন সেটা শেখ হাসিনার জন্য হয়েছে।

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির অংশ নেয়া সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা চাই বিএনপি পূর্ণ শক্তি নিয়ে আগামী নির্বাচনে অংশ গ্রহন করুক। ২০১৮ সালের মতো নয় বরং পূর্ণ শক্তি নিয়ে অংশ নিক। একদিকে তারা বলছেন নির্বাচনে যাবেন না আবার বলছেন আমাদেরকে নির্বাচন থেকে বিরত রাখতে চাচ্ছে। আমরা কাউকে নির্বাচন থেকে বিরত রাখতে চাচ্ছি না। আমরা চাই বিএনপি নির্বাচনে আসুক এবং সংবিধান মেনে যে নির্বাচন হবে সেখানে অংশ নিক।

‘বিএনপি মহাসচিবের বক্তব্যের মধ্যেই স্পষ্ট তারা নির্বাচনে অংশ নিতে চান কিন্ত অদৃশ্য শক্তির কারণে নির্বাচনে আসতে পারছেন না। তাদের নেতৃত্বের কোনও অদৃশ্য শক্তির কারণে নির্বাচনে আসার সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না। আমি তাদের অনুরোধ জানাই, অদৃশ্য থাবা থেকে মুক্ত হয়ে বিএনপি দলটাকে জনগনের কাছে নিয়ে যাওয়ার জন্য।’

এর আগে, বিএসআরএফের নতুন কমিটির নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন তথ্যমন্ত্রী। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, সচিবালয় প্রশাসনের কেন্দ্রবিন্দু এখানে যারা সংবাদ সংগ্রহ করেন এবং গণমাধ্যমগুলো যে সাংবাদিকদের মনোনিত করেন তিনি যথেষ্ট অভিজ্ঞ। এ সময় তথ্য পেতে অসুবিধা হলে তথ্য অধিকার কমিশনের সঙ্গে যোগাযোগ করা এবং সাংবাদিকদের উন্নত প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা করার পরামর্শ দেন।

এএম/

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন