আর্কাইভ থেকে রোগব্যাধি

এডিস মশা লঞ্চে করে চাঁদপুর গিয়ে ডেঙ্গু ছড়াচ্ছে

চাঁদপুরে উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। শুধু জুলাই মাসেই ৮১১ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আরও ৪৮ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন।

জেলা সিভিল সার্জনের দাবি, ঢাকা থেকে লঞ্চযোগে এডিস মশা চাঁদপুরে আসতে পারে। কিংবা লঞ্চে এডিস মশা থাকায় অনেক যাত্রী আক্রান্ত হচ্ছেন।

১ থেকে ৩ আগস্ট পর্যন্ত ১৪০ জন ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে চাঁদপুর সরকারি হাসপাতালসহ বিভিন্ন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিচ্ছে। এর মধ্যে চাঁদপুর ২৫০ শয্যা সরকারি জেনারেল হাসপাতালেই ভর্তি আছেন ৫৮ জন। রোগীর সংখ্যা বাড়ায় হাসপাতালের দুই ডেঙ্গু ওয়ার্ডের পাশাপাশি বিভিন্ন ওয়ার্ডের ফ্লোর এবং বারান্দায় ডেঙ্গু রোগীদের মশারি টাঙিয়ে চিকিৎসা সেবা দেয়া হচ্ছে। এত রোগীর চাপে হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

চাঁদপুর সরকারি হাসপাতাল ছাড়াও বিভিন্ন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত রোগীরা চিকিৎসা নিচ্ছেন। এর মধ্যে হাইমচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১০ জন, মতলব উত্তর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১০ জন, মতলব দক্ষিণ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২১ জন, হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৬ জন, কচুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২২ জন, শাহরাস্তি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১৫ জন ও ফরিদগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১৪ জন ডেঙ্গুরোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন।

চাঁদপুর সরাসরি জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ডেঙ্গুরোগী জমির হোসেন বলেন, আমি ঢাকার উত্তরায় চাকরি করি। সেখানে হঠাৎ জ্বরসহ বিভিন্নভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ি। পরে চিকিৎসকের পরামর্শে রক্ত পরীক্ষা করার পর ডেঙ্গু শনাক্ত হয়। এরপর বাড়ি চলে আসি। অবস্থার উন্নতি না হলে চাঁদপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়।

চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. একেএম মাহবুবুর রহমান বলেন, প্রতিদিন ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। এতে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। আমাদের শুধু সচেতন হতে হবে। চাঁদপুর সরকারি জেলা হাসপাতালে যেসব রোগী ভর্তি আছেন তাদের বেশিরভাগই ঢাকায় আক্রান্ত হয়েছেন। হাসপাতালে আছেন এমন রোগীদের আমরা মাইকিংয়ের মাধ্যমে সচেতন করছি।

হাসপাতালে দুটি ডেঙ্গু ওয়ার্ড রয়েছে, রোগীর চাপ এতটাই বেড়েছে যে আমাদের ফ্লোরে রেখেই চিকিৎসা সেবা দিয়ে যেতে হচ্ছে। ডেঙ্গু রোগীদের আলাদা চিকিৎসক সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করছেন।

চাঁদপুর সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ শাহাদাৎ হোসেন বলেন, জুলাইয়ের মাঝামাঝি থেকে ডেঙ্গুরোগীর সংখ্যা ক্রমশ বেড়েই চলেছে। জেলা হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের জন্য ডেডিকেটেড বেডের ডেঙ্গু ইউনিট করার পাশাপাশি উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রেগুলোতে ডেঙ্গু কর্ণার করা হয়েছে। ঢাকা থেকে লঞ্চযোগে এডিস মশা চাঁদপুরে আসতে পারে। কিংবা লঞ্চে এডিস মশা থাকায় অনেক যাত্রী আক্রান্ত হচ্ছেন। আমরা পৌরসভাসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি।

চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র জিল্লুর রহমান জুয়েল বলেন, সরকারি নির্দেশনার বাইরেও নিয়মিত মশক নিধন কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। পৌরসভা থেকে অতিরিক্ত জনবল নেয়া হয়েছে। এছাড়া ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা লঞ্চগুলোতে আলাদাভাবে মশক নিধন কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন