আর্কাইভ থেকে দেশজুড়ে

৩২ বছরেও হয়নি রাস্তা, বিদ্যালয়ে যেতে হয় কাঁদা পেরিয়ে

সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার বারুহাস ইউনিয়নের দিঘরিয়া-২ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থী বছরের পর বছর এভাবেই চলছে পাঠদান। বিদ্যালয়ে আসা যাওয়া করলেও কর্তৃপক্ষ গেলো ৩২ বছরেও ৩০০ ফিট রাস্তা তৈরি করে দিতে পারেননি।

জানা যায়, ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. ইয়াকুব আলী স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস, ইউনিয়ন পরিষদের কাছে ৩০০ ফুট রাস্তার জন্য আবেদন করলেও কাজ হয়নি। যার কারণে দিঘরিয়া-২ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা রাস্তা ছাড়াই অন্যের বাড়ি, পুকুর পাড়, জমির আইল দিয়েই যাচ্ছে বিদ্যালয়ে।তাড়াশ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, ১৯৯১ সালে ৩৩ শতক জমি নিয়ে দিঘরিয়া-২ রেজি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি স্থাপন করা হয়। পরে ২০১৩ সালে বিদ্যালয়টি জাতীয় করণ করা হয়। এর আগে ২০০৩ সালে এলজিইডির বাস্তবায়নে ১৩ শতক জায়গার ওপর একটি পাকা দ্বিতল ভবন নির্মাণ হয়। বর্তমানে বিদ্যালয়টিতে শিশু শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত প্রায় ১০৫ জন শিক্ষার্থীকে পাঁচ জন শিক্ষক পাঠদান করাচ্ছেন।

এ দিকে বারুহাস-রানীরহাট আঞ্চলিক সড়ক থেকে দিঘরিয়া-২ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের যাওয়ার জন্য ৩০০ ফুট রাস্তা আর নির্মাণ করা হয়নি। ফলে বর্ষা মৌসুমে সামান্য বৃষ্টিতে জমির মধ্যে পানি জমে থাকায় ক্ষুদে শিক্ষার্থীরা পড়ছে চরম বিপাকে। কখনো কখনো ভিজে যায় শিক্ষার্থীদের পোশাক ও বই-খাতা। অনেকে ঝুঁকি নিয়ে স্কুলে এলেও পুরো বর্ষা মৌসুমে শিক্ষার্থীর সংখ্যা কম থাকে এমনটাই জানান, দিঘরিয়া-২ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. ইয়াকুব আলী। দিঘরিয়া-২ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মোছা. মেরিনা খাতুন, মো. আসিফ, মোছা. মরিয়ম খাতুনসহ একাধিক শিক্ষার্থীর সাথে কথা বলে জানা যায়, বৃষ্টির সময় আসতে খুবই কষ্ট হয়। কখনো কখনো বই-খাতা ভিজে যায়, তাছাড়া মানুষের বাড়ির ভেতর দিয়ে এলে গালাগাল করে, আসতে দেয় না।স্থানীয়রা জানান, কাঁদা পানির মধ্যে দিয়ে স্কুলে যেতে চায় না শিক্ষার্থীরা। কর্মকর্তাদের সঠিক তদারকি না থাকায় দীর্ঘদিনেও স্কুলটিতে যাতায়াতের রাস্তা নির্মাণ করা সম্ভব হয়নি। ফলে সন্তানদের স্কুলে পাঠাতে ভরসা পায় না অনেক অভিভাবক। দিঘরিয়া-২ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নজরুল ইসলাম জানান, অনেক চেষ্টা করেছি এ রাস্তা নির্মাণ করার জন্য কিন্তু কোন ফল পাইনি। স্কুলে যাতায়াতের রাস্তা না থাকায় শিক্ষার্থীরা অন্য স্কুলে চলে যাচ্ছে। ঝুঁকি নিয়ে অভিভাবকরাও তাঁদের সন্তানদের স্কুলে পাঠাতে চায় না।

এ প্রসঙ্গে তাড়াশ উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আশরাফ আলী বলেন, জায়গাটা নিয়ে একটু ঝামেলা আছে। এক পক্ষ জায়গা দিতে চাচ্ছে কিন্তু আরেক পক্ষ রাস্তা দিতে চায় না। তবে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে।

এএম/

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন