ওয়াগনার প্রধানের মৃত্যু নিয়ে যা বলল ইউক্রেন ও পশ্চিমারা
রাশিয়ার ভাড়াটে বাহিনী ওয়াগনার গ্রুপের প্রধান ইয়েভগিনি প্রিগোজিন মস্কোর উত্তরদিকে বিমান বিধ্বস্ত হয়ে মারা গেছেন। রাশিয়ার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ব্যক্তিগত ওই বিমানে সাত যাত্রী ও তিন ক্রুসহ মোট ১০ আরোহী ছিলেন। যাদের সবাই এতে মারা গেছেন।
শক্তিশালী ভাড়াটে বাহিনীর প্রধান প্রিগোজিন গেলো জুনে হঠাৎ করেই রুশ সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে বসেন। আর তার এই বিদ্রোহ ওই সময় রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ক্ষমতাকে শঙ্কায় ফেলে দিয়েছিল।
প্রিগোজিনের মৃত্যুর সংবাদের পরপরই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ইউক্রেন ও অন্যান্য পশ্চিমা দেশগুলো।
ইউক্রেন
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা মিখাইলো পোদোলিয়াক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছেন, ক্রেমলিনের প্রতি যাদের আনুগত্য নেই তাদের প্রতি একটি বার্তা এই বিমান বিধ্বস্তের ঘটনা।
তিনি বলেছেন, বিদ্রোহের দুই মাস পর ওয়াগনার কমান্ডারের মৃত্যুর মাধ্যমে পুতিনের পক্ষ থেকে রাশিয়ার এলিট সমাজের প্রতি ২০২৪ সালের নির্বাচনের আগে একটি বার্তা দেয়া হয়েছে, ‘সতর্ক থাকুন, অনানুগত্যর শাস্তি মৃত্যু।’
যুক্তরাষ্ট্র
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জানিয়েছেন, প্রিগোজিন বিমান দুর্ঘটনায় মারা গেছেন এমন খবরে তিনি ‘অবাক’ হননি।
তিনি বলেছেন, ‘আমি জানি না আসলে কী হয়েছে। কিন্তু আমি অবাক হইনি। পুতিন পেছনে (জড়িত) থাকেন না, এমন কিছু রাশিয়ায় খুব বেশি হয় না। তবে এই প্রশ্নের উত্তর দিতে আমি খুব বেশি কিছু জানি না।’
এক বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের মুখপাত্র আদ্রিন ওয়াটসনও বলেছেন, ‘যদি তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হয়, কারওই অবাক হওয়া উচিত নয়। ইউক্রেনে বিপর্যয়কর যুদ্ধের কারণে মস্কোর দিকে ভাড়াটে সেনাদের এগিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছিল।’
যুক্তরাজ্য
যুক্তরাজ্যের উচ্চপদস্থ কেউ এখনো এ ব্যাপারে মন্তব্য না করলে দেশটির আইনসভার সদস্য এলিসিয়া কিয়ার্নস এমপি মাইক্রো ব্লগিং সাইট এক্সে বলেছেন, ‘যে দ্রুত গতিতে রাশিয়ার সরকার জানিয়েছে, মস্কো-সেন্টপিটার্সবাগগামী বিধ্বস্ত বিমানে প্রিগোজিন ছিলেন, আমাদের যা জানা প্রয়োজন, এটি তাই জানাচ্ছে।’
‘খবর বের হয়েছে রাশিয়ার আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা বিমানটি ভূপাতিত করেছে। এটি বোঝাচ্ছে, পুতিন খুব শক্তিশালী বার্তা দিচ্ছেন।’
পোল্যান্ড
পোল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জিগনি রাও রাষ্ট্রীয় টিভি চ্যানেল টিভিপি ইনফোকে দেয়া সাক্ষাতে মন্তব্য করেছেন, যারা পুতিনের ক্ষমতাকে হুমকি দেয় ‘তাদের স্বাভাবিক মৃত্যু হয় না।’
তিনি আরও বলেছেন, ‘আমরা কাউকে পাব না যে বলবে এটি কাকতালীয় ঘটনা ছিল। পুতিন যাদের ও রাজনৈতিক বিরোধীদের হুমকি মনে করেন তাদের স্বাভাবিক মৃত্যু হয় না।’
এস্তোনিয়া
এস্তোনিয়ার প্রধানমন্ত্রী কাজা কালাস সংবাদমাধ্যম সিএনএনের সঙ্গে এক সাক্ষাতে বলেছেন, ‘পুতিন বিরোধীদের সরিয়ে দেবেন। আর এ বিষয়টি সবাইকে ভীতির মধ্যে ফেলে, যারা বিরোধী মতামতের বিষয়ে ভাবেন।’
সূত্র: আল জাজিরা