দীর্ঘ দিন ধরে ডায়াবিটিস স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়
বর্তমানে যে সব ডিজ়িজ মাথা চাড়া দিয়ে উঠছে তার মধ্যে প্রথমেই রয়েছে ডায়াবেটিস । আজ ৫ জনের মধ্যে ১ মানুষ ভুগছেন ডায়াবেটিসে। নেপথ্যে রয়েছে অনিয়ন্ত্রিত জীবনধারা, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, মানসিক চাপ, শারীরিকভাবে সক্রিয় না থাকা ইত্যাদি।
সমস্যা হল এই ডায়াবেটিসের পিছু পিছু অনেক রোগ হানা দেয় জীবনে। অন্ধত্ব, কিডনির সমস্যা ইত্যাদি। এর পাশাপাশি বেড়ে যায় হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনাও। তবে সাম্প্রতিক গবেষণায় জানা গিয়েছে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকলে এড়ানো যাবে হৃদরোগের ঝুঁকি।
ডায়াবিটিসে আক্রান্ত রোগীদের স্ট্রোকের ঝুঁকি নিয়ন্ত্রণ করার উপায়গুলি কী কী?
১) কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ কম
রক্তে শর্করার পরিমাণ বেড়ে যাওয়ার নেপথ্যে বড় ভূমিকা রয়েছে কার্বোহাইড্রেটের। তাই ভাত, রুটির বদলে ফাইবারজাতীয় খাবার খাওয়ার উপরেই জোর দেন পুষ্টিবিদেরা।
২) মদ্যপানে লাগাম
অ্যালকোহলযুক্ত সব ধরনের পানীয়ের উপর লাগাম টানতে বলা হয় ডায়াবিটিস আক্রান্তদের। রক্তে শর্করার পরিমাণ বেড়ে যেতে পারে অতিরিক্ত মদ্যপানের অভ্যাসে।
৩) নিয়মিত শরীরচর্চা
রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে যেমন খাওয়াদাওয়ায় লাগাম টানা জরুরি, তেমনই সুস্থ থাকতে নিয়মিত ঘাম ঝরানোর উপরেও জোর দিতে বলেন চিকিৎসকেরা।
গবেষণা বলছে, রক্তে শর্করার মাত্রা ৬.৫ শতাংশের নীচে হলে এড়ানো যায় হৃদরোগের ঝুঁকি। কিন্তু এই গবেষণাটি যাদের ওপর করা হয়েছিল, তাঁদের প্রত্যেকেরই ৭০-এর ওপর বয়স। এর পাশাপাশি এই সব ডায়াবেটিসের রোগীরা এর আগে অন্তত এক বার স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়েছিলেন। এই ক্ষেত্রে জেনে রাখা ভাল যে রক্তে শর্করার মাত্রা ৬.৫ শতাংশের বেশি হওয়ার অর্থ হল আপনি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। সুতরাং সুস্থ থাকতে কোনও ভাবেই রক্তে শর্করার মাত্রাকে বাড়তে দেওয়া যাবে না।
বিশেষজ্ঞদের মতে রক্তে ৫.৭ শতাংশ শর্করার মাত্রা থাকা উচিত। এর বেশি হলেই বিপদ। এর পাশাপাশি রক্তে শর্করার মাত্রা যখনই ৭.০ শতাংশ অতিক্রম করে, বেড়ে যায় হৃদরোগের ঝুঁকি। তাই আপনার যদি একবার স্ট্রোক হয়ে থাকে তাহলে ঝুঁকি এড়াতে খেয়াল রাখুন রক্তে শর্করার মাত্রার ওপর। সব সময় চেষ্টা করুন রক্তে শর্করার মাত্রা ৬.৫ শতাংশের নীচে রাখার।
আর যদি আপনি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত না হন তাহলে এই ক্ষেত্রে রক্তে শর্করার মাত্রা ৫.৭ শতাংশের নীচে রাখার চেষ্টা করুন। এর জন্য ফাইবার-সমৃদ্ধ খাবার বেশি করে খান। আটা, বাজরা, ওটসের মতো খাবার খান। পরিশোধিত চিনিযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন। প্রক্রিয়াজাত মাংস খাবেন না। এর বদলে তাজা ফল ও সবজি খান। এর পাশাপাশি শরীরকে সক্রিয় রাখুন। নিয়মিত যোগব্যায়াম করুন। তবেই ডায়াবেটিস ও হৃদরোগ দুটোরই ঝুঁকি কমে গিয়েছে।