আর্কাইভ থেকে দেশজুড়ে

গাইবান্ধায় লোকালয়ে ঢুকছে তিস্তার পানি

গত কয়েকদিনের ভারী বৃষ্টি আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানিতে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার তিস্তা নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। পানি প্রবাহিত হচ্ছে বিপদ সীমার ৪৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে। সে কারণে নদীর পাড় ডিঙ্গিয়ে পানি এখন ঢুকছে লোকালয়ে। গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগি ও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রসহ আশ্রয় নিতে ভুক্তভোগীরা ছুটছেন বাঁধে।

হরিপুর ইউনিয়নের নকিয়ার পাড়া গ্রামের মো. মুসলিম উদ্দিন (৫৫) বলেন, ’গত শুক্রবার রাতে ঘুমানোর সময়ও পানি ছিলো না। হঠাৎ রাত ১ টার দিকে ঘুম ভাঙ্গে পানির শব্দে । জেগে দেখি ঘরের ভিতর পানি ঢুকছে। আমার ৪ টি ঘরেই এখন হাঁটু পানি। কমছে না পানি বরং বৃদ্ধিই পাচ্ছে। সে কারণে ঘরের ভিতরে টং বানিয়ে কোনোমতে পরিবার পরিজন নিয়ে আছি। আর ছাগলগুলো জামাইর বাড়িতে পাঠানোর ব্যবস্থা করতেছি।’

বেলকা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাওলানা মো. ইব্রাহীম খলিলুল্লাহ বলেন, ’তাঁর ইউনিয়নে প্রায় তিনশো পরিবার পানি বন্দি হয়ে পড়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের তালিকাও করা হচ্ছে। পানি ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ অবস্থা চললে আশ্রয় কেন্দ্রে সরিয়ে নিতে হবে।’

শনিবার দুপুর ২ টা ৭ মিনিটের দিকে কথা হয় হরিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মোজাহারুল ইসলামের সাথে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ’গতকাল রাত (শুক্রবার) থেকেই পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। সে কারণে এখনও ইউএনও স্যারকে বলা হয়নি, তবে জানাচ্ছি।

চেয়ারম্যান জানান, তাঁর ইউনিয়নের ৬ টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। গ্রামগুলো হলো, কানি চরিতাবাড়ি, চর চরিতাবাড়ি, নকিয়ার পাড়া, পাড়া সাদুয়া, মাদারী পাড়া ও রাঘব গেন্দুরাম। তবে নিরাপদ আশ্রয় নিতে বাঁধে আসতে শুরু করেছেন বাঁধের কাছের লোকজন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ নূর-এ- আলম বলেন, ’এ বিষয়ে আমরা ব্যাপক তৎপর আছি। ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাসহ পরিবারের তালিকা করতে বলা হয়েছে। তালিকাগএলো পেলেই প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে। এছাড়া আশ্রয় কেন্দ্রগুলোও খুলে দেয়া হয়েছে। বেশি সমস্যা হলে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলো তাতে আশ্রয় নিতে পারবে বলেও জানান।

জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হাফিজুল ইসলাম বলেন, ’দুপুর ৩ টার পরীক্ষায় তিস্তা নদীর পানি বিপদ সীমার ৪৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া ওয়াটার লেভেল ২৯.২২ মিটার ও ডেঞ্জার লেভেল: ২৮.৭৫ মিটার। গতকালের (শুক্রবার) তুলুনায় পানির উচ্চতা ৪৭ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে বলেও জানান হাফিজুল ইসলাম।’

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন