আর্কাইভ থেকে রূপচর্চা

রূপচর্চায় তেল নিয়ে ভ্রান্ত ধারণা

রূপচর্চার চিরন্তন অংশ তেল। ঘরোয়া রূপচর্চায় তেলের অবদান অনস্বীকার্য। ত্বক আর চুলের পরিচর্যায় এ উপাদানটির বিকল্প মেলা ভার। আবার তেল সম্পর্কে রয়েছে বেশ কিছু মিথও। যেসব মিথের কারণে আশানুরূপ ফল না পাওয়ায় অনেকে আবার দোষের ভাগী করেন সেই তেলকেই। চলুন জেনে নেয়া যাক তেল নিয়ে প্রচলিত সেই মিথগুলো। 

ময়শ্চারাইজার হিসেবে তেল:

‘ময়শ্চার’ শব্দটির বাংলা প্রতিশব্দ ‘আর্দ্রতা’। আর আর্দ্রতা মানে পানি। তেল আর পানির সম্পর্ক যে আদায় কাঁচকলায়, তা তো সকলেরই জানা। সুতরাং তেল-পানির মিশেল এককথায় অসম্ভব। সুতরাং তেল ত্বককে আর্দ্রতা প্রদান করবে, এই ধারণাটাও সম্পূর্ণ ভুল। বরং বলা যেতে পারে, তেল ত্বককে নরম করে। তাছাড়া ত্বককে ময়শ্চারাইজ করতে গেলে কোনও উপাদানের বাতাসের জলীয় বাষ্প শোষণ করার ক্ষমতা থাকাও বাঞ্ছনীয়। কিন্তু তেলের সেই ক্ষমতা নেই। তবে তেল ত্বকের আর্দ্রতাকে বজায় রাখতে নিঃসন্দেহে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাই রূপচর্চায় তেল নিশ্চয়ই ব্যবহার করা যাবে তবে তা ময়শ্চারাইজ়ারের বিকল্প হিসেবে নয়।

রূপচর্চার শুরুতেই তেল ব্যবহার করা উচিত:

তেল এমন এক উপাদান, যা ত্বকের উপরে একধরণের আস্তর তৈরি করে ত্বকের ভিতরে থাকা আর্দ্রতাকে বন্ধ করে দেয়। ত্বকে তেল ব্যবহারের পর যদি অন্য কোনও প্রডাক্ট ব্যবহার করা হয়, তা সহজে এই আস্তর ভেদ করে ত্বকে পৌঁছতে পারে না। ফলে ত্বকে কোনও পুষ্টিও পৌঁছয় না। তাই রূপচর্চায় তেল ব্যবহার করলে সবসময় তা একদম শেষ ধাপে করতে হবে। এতে ত্বকে আর্দ্রতা এবং নমনীয়তার সমতা বজায় থাকবে।

চুলে যত বেশি তেল ততই ভালো:

সত্যি কথা বলতে, চুলে কী তেল ব্যবহার করা হচ্ছে তার থেকে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ হল সেই তেল কতটুকু পরিমাণে ব্যবহার করা হচ্ছে। প্রত্যেকের চুলের ধরন যেমন এক নয়, তেমনই প্রয়োজনীয়তাও আলাদা। তাই একগাদা তেল লাগালেই যে সবসময় খুব ভাল ফল পাবেন, তা নয়। শুরু করতে হবে কয়েক ফোঁটা তেল নিয়ে। ভালভাবে দু’হাতের তালুতে ঘষে স্ক্যাল্প থেকে চুলেরে আগা পর্যন্ত মালিশ করতে হবে। অতিরিক্ত তেল স্ক্যাল্পে বাড়তি স্তর তৈরি করে। এতে উপকার তো হয়ই না, উলটো প্রয়োজনীয় পু্ষ্টিটুকুও চুলে পৌঁছায় না।

তৈলাক্ত ত্বক এবং চুলে তেল ব্যবহার করা উচিত নয়:

এই তথ্যটি আংশিকভাবে সত্যি। তৈলাক্ত ত্বক বা চুলে যেহেতু তেলের পরিমাণ স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি থাকে, তাই এই ধরনের ত্বক এবং চুলে তেল ব্যবহার করার ক্ষেত্রে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া উচিত। সব ধরনের তেল তৈলাক্ত ত্বক এবং চুলের জন্য উপযুক্ত নয়, একথা ঠিক। তবে নির্দিষ্ট কিছু তেল ব্যবহার করলে উল্টে উপকারই হবে। আমন্ড, জোজোবা ইত্যাদি হালকা তেল ব্যবহার করা যেতে পারে। এ ধরনের ত্বকে নারকেল তেল, সরষের তেল কিংবা ক্যাস্টর অয়েল এড়িয়ে চলাই শ্রেয়।

অনন্যা চৈতী

 

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন