আর্কাইভ থেকে জাতীয়

ঢাকার বুকে নতুন সড়ক

অপেক্ষার পালা শেষ হলো বলে। আর মাত্র কয়েকঘণ্টা। এরপরই দুয়ার উন্মোচিত হতে যাচ্ছে দেশের প্রথম দ্রুতগতির উড়ালসড়ক ‘ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে’। সড়ক যোগাযোগে এক যুগান্তকারী পরিবর্তনের অপেক্ষায় ঢাকাবাসী।

শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধন করবেন এই এক্সপ্রেসওয়ে। রোববার (৩ সেপ্টেম্বর) ভোর ৬টা থেকে জনসাধারণের জন্য খুলে দেয়া হবে।

দীর্ঘ এক যুগেরও বেশি সময় অপেক্ষার পর খুলছে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। আরও একটি মাইলফলক স্পর্শ করবে বাংলাদেশ।

বিমানবন্দর-উত্তরা সড়কের যানজট যেন চলাচলকারীদের কাছে বিভীষিকা, আতঙ্কের নাম। বিশেষ করে অফিসযাত্রী ও বিদেশগামীরা এর প্রধান ভুক্তভোগী। এই সড়কে যানজটের কারণে ফ্লাইট মিস কিংবা হেঁটে লাগেজ মাথায় নিয়ে বিমানবন্দরে প্রবেশ অনেকটা নিয়মিত ঘটনা। যাদের সময় মেনে অফিসে ঢুকতে হয় তাদেরও পড়তে হয় বিড়ম্বনায়। সাধারণ যাত্রীরাও পড়েন সীমাহীন দুর্ভোগে। এসব ভোগান্তির ‘মুশকিল আসান’ হবে ঢাকা এলিভেডেট এক্সপ্রেসেওয়ে। তবে পূর্ণাঙ্গ সুফল পেতে আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

ঢাকার বুকে নির্মিত এ উড়াল পথের প্রথম ফেজ অর্থাৎ কাওলা থেকে ফার্মগেট অংশের উদ্বোধন করা হবে আজ। মাথার ওপর দিয়ে উত্তর থেকে দক্ষিণে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর থেকে যাত্রাবাড়ীর কুতুবখালী পর্যন্ত রেললাইন ধরে যাচ্ছে এই পথ। এখন পুরোপুরি প্রস্তুত ফার্মগেইট পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার।

এই যাত্রায় বিমানবন্দর থেকে ফার্মগেইট পর্যন্ত অংশের ৫টি পয়েন্ট দিয়ে গাড়ি উঠতে ও নামতে পারবে। এর মধ্যে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উঠা ও নামার জন্য থাকবে একটি করে র‍্যাম্প। কুড়িলে উঠার পথ ২টি আর নামার একটি। বনানীতে দুটি র‍্যাম্প উঠার আর দুটি নামার। মহাখালীতে নামা যাবে দুই পথে তবে উঠা যাবে একটি পথে। আর ফার্মগেইটে নামার পথ একটি তেঁজগাও কলেজের সামনে আর উঠার র‍্যাম্প ৩টি। মোট ১৬টি র‍্যাম্পের মধ্যে ১৩টিতে যানবাহন চলাচল করবে শুরুতে।

এই পথে উঠবে না তিন চাকার আর দুই চাকার কোনো যানবাহন। থাকবে না ফুটপাত। নির্ধারণ করা হয়েছে যানবাহনের টোলও। প্রাইভেট কারে সর্বনিম্ন ৮০ টাকা। একই টোল-হার মাইক্রোবাস, পিকআপ, হালকা ট্রাকের ক্ষেত্রে। তবে মাঝারি ট্রাকে ৩২০ টাকা এবং ভারী ট্রাক চলাচলে গুনতে হবে ৪শ টাকা। এছাড়া, সবধরণের বাসের গুনতে হবে ১৬০ টাকা।

৮ হাজার ৯৪০ কোটি টাকার এই প্রকল্পের পুরো কাজ শেষ হওয়া সময় নির্ধারণ করা হয়েছে ২০২৪ সাল। পিপিপি অর্থায়নে চলমান এই প্রকল্পের ৭৩ শতাংশ বিনিয়োগ করেছে ইতালি ও চায়নার ৩টি প্রতিষ্ঠান যা আগামী ২৫ বছরে তারা তুলে নেবে। এছাড়া বাকি ২৭ শতাংশ বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানকে ভিজিএফ পদ্ধতিতে পরিশোধ করবে বাংলাদেশ সরকার।

ধারাবাহিকভাবে আরও বেশ কয়েকটি মেগা প্রকল্পের উদ্বোধন করা হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। এগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো- মেট্রোরেল প্রকল্পের বাকি অংশ, পূর্বাচল এক্সপ্রেসওয়ে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল (কর্ণফুলী টানেল), খুলনা-মোংলা রেল প্রকল্প, ঢাকা বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল, কক্সবাজার রেল সংযোগ প্রকল্প, আখাউড়া-আগরতলা আন্তঃদেশীয় রেল সংযোগ প্রকল্প, পদ্মা রেল সংযোগ প্রকল্প এবং রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন